আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

সিরিয়াসহ আরো যে ৭ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের

আমার দেশ অনলাইন

সিরিয়াসহ আরো যে ৭ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরও সম্প্রসারিত করে সিরিয়াসহ সাতটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (প্যালেস্টিনিয়ান অথরিটি) পাসপোর্টধারীরাও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন।

বিজ্ঞাপন

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই অভিবাসন সীমিত করার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন এবং এবার এমন বিদেশিদের প্রবেশ ঠেকাতে চান, যারা “আমেরিকানদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।” এক ঘোষণায় আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠাকালীন নীতিকে যারা “ক্ষতিগ্রস্ত বা অস্থিতিশীল” করতে পারে, তাদেরও প্রবেশ রোধ করা হবে।

এই সিদ্ধান্ত আসে এমন এক সময়ে, যখন সিরিয়ায় দুই মার্কিন সেনা ও এক বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদের পতনের পর ট্রাম্প সিরিয়াকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলাকারী ব্যক্তি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং “চরমপন্থী ইসলামপন্থী মতাদর্শের” কারণে তাকে বরখাস্ত করার কথা ছিল।

এর আগেই ট্রাম্প প্রশাসন অনানুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পাসপোর্টধারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বাধা দিয়েছিল। ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের প্রতি সংহতি জানিয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

নতুন করে যেসব দেশের ওপর পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে আফ্রিকার কয়েকটি দরিদ্র দেশ—বুরকিনা ফাসো, মালি, নাইজার, সিয়েরা লিওন ও দক্ষিণ সুদান—এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার লাওস।

এদিকে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আরও কিছু আফ্রিকান দেশ, যার মধ্যে জনসংখ্যায় সবচেয়ে বড় নাইজেরিয়াও রয়েছে, পাশাপাশি কৃষ্ণাঙ্গ-সংখ্যাগরিষ্ঠ ক্যারিবীয় কয়েকটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য আরও তীব্র

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অভিবাসীদের নিয়ে আরও কঠোর ও বিতর্কিত ভাষা ব্যবহার করেছেন। গত সপ্তাহে এক সমাবেশে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন “নোংরা দেশ” থেকে নয়, বরং নরওয়ে ও সুইডেনের মতো দেশ থেকে অভিবাসী গ্রহণ করে।

এছাড়া মিনেসোটায় কথিত ভুয়া চুক্তির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জড়িত সোমালি আমেরিকানদের একটি কেলেঙ্কারির পর তিনি সোমালিদের “আবর্জনা” বলেও উল্লেখ করেন। এর আগেই সোমালিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।

বর্তমানে যেসব দেশ পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে আফগানিস্তান, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, মিয়ানমার, সুদান ও ইয়েমেন।

গত মাসে আফগানদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করেন ট্রাম্প। এর ফলে তালেবানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে লড়াই করা আফগানদের পুনর্বাসন কর্মসূচি বন্ধ হয়ে যায়। ওয়াশিংটনে মোতায়েন ন্যাশনাল গার্ডের দুই সেনাকে গুলি করার ঘটনায় জড়িত এক আফগান ভেটেরানের ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

নাইজেরিয়া ছাড়াও যেসব দেশ আংশিক নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে, সেগুলো হলো—অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগুয়া ও বারবুডা, বেনিন, ডোমিনিকা, গ্যাবন, গাম্বিয়া, আইভরি কোস্ট, মালাউই, মৌরিতানিয়া, সেনেগাল, তানজানিয়া, টোঙ্গা, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ে।

উল্লেখ্য, অ্যাঙ্গোলা, সেনেগাল ও জাম্বিয়া আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে পরিচিত ছিল এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই দেশগুলোর গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছিলেন।

হোয়াইট হাউসের ঘোষণায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত কিছু দেশের ক্ষেত্রে উচ্চ অপরাধের হার ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত নথিপত্রের দুর্বলতার অভিযোগ রয়েছে।

তবে একই সঙ্গে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে লক্ষ্যবস্তু হওয়া মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তান “উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি” করেছে। ফলে দেশটির নাগরিকরা আবারও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে পারবেন, যদিও তা শুধুমাত্র অ-অভিবাসী ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

সূত্র: এএফপি

এসআর

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন