দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্ক “রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ ভ্রাতৃপ্রতিম জাতি, যারা স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছে।”
তুর্কির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লি বলেন, “তুর্কি কোরিয়ার কৌশলগত অংশীদার এবং ইউরেশিয়া অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু।” তিনি আরও জানান, সিউল আঙ্কারার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব সংহত ও উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
লি’র এ মন্তব্য এসেছে তাঁর তুরস্কে ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই দিনের সরকারি সফরকে সামনে রেখে। এ সফরে তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
লি বলেন, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরেশিয়া ও আফ্রিকার সংযোগস্থলে অবস্থান করে তুরস্ক একটি “অসাধারণ কৌশলগত” ভূমিকা পালন করছে। কোরিয়ার জন্য তুরস্ক কেবল উৎপাদন কেন্দ্র নয়, বরং “উদ্ভাবন, বিনিয়োগ ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার কৌশলগত অংশীদার।”
দুই দেশের সক্ষমতা একে অপরের পরিপূরক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। লি বলেন, তুরস্ক মানবহীন আকাশযান ব্যবস্থায় বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে, আর দক্ষিণ কোরিয়া ট্যাংক, আর্টিলারি ও নৌযানসহ উন্নত প্ল্যাটফর্মে শীর্ষস্থানীয়।
এ অবস্থান দুই দেশের জন্য পারস্পরিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর বড় সুযোগ তৈরি করে বলে তিনি মনে করেন।
লি জানান, প্রতিরক্ষা শিল্পে আঙ্কারা–সিউল সহযোগিতা বহুদিন ধরেই শক্তিশালী—যৌথ উৎপাদন, প্রযুক্তিগত সমন্বয় ও কর্মীদের দক্ষতা বিনিময় এর অংশ। “আমাদের শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বের একটি দৃষ্টান্ত হলো আলতাই প্রধান যুদ্ধট্যাংক উৎপাদন কর্মসূচি,” তিনি বলেন।
কোরিয়া ও তুরস্ক উভয়ই শীর্ষ প্রতিরক্ষা শক্তি হয়ে ওঠার প্রচেষ্টায় আছে উল্লেখ করে লি আশা প্রকাশ করেন, পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে এ ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা বাড়ানো সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, মানবহীন ব্যবস্থাকে প্রচলিত প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে একীভূত করে পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিতে অংশীদারিত্বও বাড়ানো যাবে।
পারমাণবিক খাতে সহযোগিতা নিয়ে লি বলেন, তুরস্কের সিনোপ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পে দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা চলছে। কোরিয়ার “বিশ্বমানের” পারমাণবিক প্রযুক্তি ও নিরাপদ পরিচালনার দক্ষতা দিয়ে তুরস্কের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উন্নয়নে “গুরুত্বপূর্ণ অবদান” রাখতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এসআর

