ডয়চে ভেলে

প্রতিরাতে মৃত্যুর শঙ্কা নিয়ে ঘুমাতে যাই

আমার দেশ ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫, ২৩: ৪৮

গাজার জাবালিয়ার ৩৫ বছর বয়সি বাসিন্দা আলা মুঈন। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। গত সপ্তাহে ইসরাইলি আগ্রাসনের জেরে পরিবারকে নিয়ে নিজ বাড়ি ছেড়ে গাজা শহরে এসে আশ্রয় নেন তিনি। বর্তমানে এক কক্ষে আরো অন্যান্য আত্মীয়ের সঙ্গে ঠাসাঠাসি করে থাকছেন তারা।

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘আমরা জাহান্নামের মধ্যে রয়েছি। গাজায় নিরাপত্তা ও জীবনের ধারণা বর্তমানে সম্পূর্ণ অর্থহীন। প্রতিদিনই সন্তানদের নিয়ে আমি মৃত্যুর শঙ্কা করি। রাতে ঘুমাতে গিয়ে মনে হয়, হয়তো আর জাগবো না।’

বিজ্ঞাপন

জীবনের ঝুঁকির সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য সংকটে ভুগছে মুইনের পরিবার। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে রুটি বা অন্য কোনো ধরনের খাবার নেই। যখন যা পাই, তা-ই খাই। আমাদের দেখার সময় নেই এটি খাবার যোগ্য কি না। ঘাস-লতাপাতার ওপরও আমরা নির্ভর করছি। এগুলোও আমরা রান্না করে খাই। সবকিছুরই দাম বেড়ে গেছে। আমার সব সঞ্চয় খাবার কিনতেই খরচ হয়ে গেছে।’

ইসরাইলি হামলার জেরে উত্তর গাজার বাইত লাহিয়া থেকে একইভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসেন নাইম শাফি ও তার পরিবার। বর্তমানে গাজা শহরে রাস্তার ধারে এক তাঁবুতে বাস করেন তিনি।

ইসরাইলি আগ্রাসনের আগে কৃষিকাজ করতেন তিনি। ৩৯ বছর বয়সি শাফি জানান, উত্তর গাজায় বৃষ্টির মতো গোলা ও বিমান হামলা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এক ব্যাগ ময়দা ছিল। বাড়ি ছেড়ে আসার সময় এটি সঙ্গে নিয়ে এসেছি। এটিই আমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ।’

১৯ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় অব্যাহত আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরাইল। আগ্রাসনে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। পরে চুক্তি অনুযায়ী স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দিকে না গিয়ে ১৮ মার্চ থেকে আবার আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। এর আগে ২ মার্চ থেকে গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ চাপিয়ে দেয় ইসরাইলি সরকার। এর জেরে কোনো খাবার, পানি বা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গাজায় প্রবেশে বাধা দেয় ইসরাইলি সেনারা। ফলে গাজায় দুর্ভিক্ষের মুখে পড়ে স্থানীয়রা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত