দুই বছরের যুদ্ধে ইসরাইলের ক্ষতি

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০১: ৪৩

ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দুই বছর ধরে অত্যাধুনিক অস্ত্র মোকাবিলা করে এখনও টিকে আছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। দুই বছরের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সামরিক ও রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতায় হামাস অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়লেও এ লড়াইয়ে নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে ইসরাইল। বিশেষ করে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশটির নাগরিকরা অবর্ণনীয় ভোগান্তি সইছে। অনেকে হারিয়েছে তাদের প্রিয় সন্তান, স্ত্রী, স্বামী, বাবা, ভাই কিংবা বোনকে। এখনো বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে বন্দি রয়েছেন।

বন্দিদের মুক্তির জন্য তাদের পরিবারের সদস্যরা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বড় বড় বিক্ষোভ করেছেন। কিন্তু তাদের বিক্ষোভ নেতানিয়াহুর মন গলাতে পারেনি। এই পরিবারগুলো ইসরাইলের সেসব পরিবারের মধ্যে অন্যতম যারা দুই বছরের দীর্ঘ যুদ্ধের সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক ব্যক্তিগত মূল্য পরিশোধ করেছে।

বিজ্ঞাপন

যুদ্ধ চলাকালে ইসরাইলে বিভক্তিও দৃশ্যমান হয়েছে। অনেকেই তাদের দেশের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাদেরই একজন মোর গডার্ড। যিনি নেতানিয়াহুর বাড়ির বাইরে জিম্মি পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আন্দোলন করেন। গাজা সীমান্তে কিব্বুটজে হামাসের নেতৃত্বাধীন আক্রমণ থেকে তিনি বেঁচে যান, কিন্তু বাবা-মাকে হারিয়েছিলেন। তিনি বলেন, দেশের ওপর সেনাবাহিনীর ওপর আমার আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। যখন আমার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় তখন আমাদের রক্ষায় কেউ আসেনি।

যুদ্ধকালে ইসরাইলের নাগরিক, এমনকি সেনাদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের তীব্র অবনতি হয়েছে।

যুদ্ধ শুরুর পর ইসরাইলে বন্দুকের লাইসেন্সের নিয়ম শিথিল করা হয় এবং হামলায় হতবাক বেসামরিক নাগরিকদের আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে পারিবারিক সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরাইলের কল্যাণ কর্তৃপক্ষ যুদ্ধের প্রথম ছয় মাসে পারিবারিক সহিংসতার রিপোর্টে ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে। নতুন বন্দুক লাইসেন্সের কারণে নারীরা তাদের সঙ্গীদের মাধ্যমে বেশি হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন।

অন্যদিকে গাজা থেকে ফিরে আসা বহু তরুণ সেনা ট্রমাটাইজড হয়ে আছেন। তারা তাদের চোখের সামনে সহকর্মীদের নিহত হতে দেখেছেন, যা তাদের ভোগাচ্ছে।

এছাড়া গাজায় নৃশংসতা বিশ্বজুড়ে ইসরাইলিদের প্রতি ঘৃণার জন্ম দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপজুড়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সাধারণ ঘটনায় রূপ নিয়েছে। যুদ্ধের সময় ইহুদি এবং বিদেশে ইসরাইলিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে অহরহ। আন্তর্জাতিক ক্রীড়া এবং সংগীত প্রতিযোগিতায় ইসরাইলি অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। ইসরাইলের ওপর ঘনিষ্ঠ মিত্র জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিচার চলছে দেশটির বিরুদ্ধে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত