শান্তি আলোচনা ভেস্তে গেলেও সংলাপ চালাতে চায় পাকিস্তান

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ১৮

আফগানিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলেও সংলাপ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তান। তবে দেশটি বলেছে, তাদের মূল নিরাপত্তা উদ্বেগ— আফগান ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসবাদ— আগে সমাধান করতে হবে।

দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষে ডজনখানেক প্রাণহানির পর, ১৯ অক্টোবর কাতারে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে দৃঢ় করার লক্ষ্যে তৃতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল তুরস্কের ইস্তাম্বুলে।

বিজ্ঞাপন

রোববার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক মতপার্থক্যের সমাধানে পাকিস্তান সংলাপে অটল। তবে আমাদের মূল উদ্বেগ— আফগানিস্তান থেকে উদ্ভূত সন্ত্রাসবাদ—কেই সর্বাগ্রে মোকাবিলা করতে হবে।”

তৃতীয় দফা আলোচনার সমাপ্তি ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ

ইসলামাবাদ প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে যে তৃতীয় দফা আলোচনা শুক্রবার শেষ হয়েছে।

পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগান তালেবান সরকার “স্থলে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি এবং প্রথম দফায় দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গেছে।”

অন্যদিকে, আফগান সরকার বলেছে, আলোচনার ব্যর্থতা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে, তবে তারা ইসলামাবাদের “দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসহযোগিতামূলক আচরণ” কে দোষারোপ করেছে।

আফগান তালেবানের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “আলোচনায় পাকিস্তান নিজেদের নিরাপত্তার পুরো দায় আফগান সরকারের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছে, অথচ তারা আফগানিস্তান বা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য কোনো দায় নিতে রাজি নয়।”

পরস্পরের প্রতি সন্দেহ অব্যাহত

ইসলামাবাদ বহুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে আফগানিস্তান পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সদস্যদের আশ্রয় দিচ্ছে—যারা পাকিস্তানে নিয়মিত প্রাণঘাতী হামলা চালায়। আফগান তালেবান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পাকিস্তান আরও দাবি করেছে, আফগান সরকার ভারতের সমর্থনে কাজ করছে, যা ইসলামাবাদের ঐতিহাসিক শত্রু এবং বর্তমানে কাবুলের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

অন্যদিকে, আফগানিস্তান অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিচ্ছে এবং তাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করছে।

সীমান্তে নতুন সংঘর্ষে ৫ জন নিহত

দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায় শুক্রবার, যখন আফগান সীমান্তের স্পিন বোলদাক এলাকায় গোলাগুলিতে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন বলে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

গত মাসে অনুরূপ সংঘর্ষে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছিল। উভয় দেশই নতুন করে শত্রুতা শুরুর হুমকি দিয়েছে।

পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে টানাপোড়েন বহুদিনের। ২০২১ সালে আফগান তালেবান ক্ষমতায় আসার পরও সীমান্তে গুলি বিনিময়, সীমান্ত বন্ধ এবং বাণিজ্যিক অচলাবস্থা বারবার দেখা দিয়েছে।

ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকটি ছিল উভয় দেশের মধ্যে বিশ্বাস পুনর্গঠনের শেষ প্রচেষ্টা, যা আপাতত ব্যর্থ হয়েছে।

তথ্যসূত্র: এএফপি

এসআর

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত