ভারতের বৃহত্তম এয়ারলাইন ইন্ডিগোর ফ্লাইট বাতিলের ঘটনায় দেশজুড়ে ভ্রমণকারীরা সমস্যার মুখে পড়েছেন। অন্তত দুই হাজার ফ্লাইট বাতিলের ফলে ছুটি, বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন যাত্রা ব্যাহত হয়েছে এবং টার্মিনালে লাগেজের জট সৃষ্টি হয়েছে।
ইন্ডিগোর ৬৫ শতাংশ ঘরোয়া বাজার অংশীদারিত্বের কারণে দেশের বিমান খাত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই একক এয়ারলাইনের ওপর নির্ভরশীল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত এয়ারলাইনের কম খরচে ভ্রমণ সুবিধাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। তবে পাইলটের ঘাটতি ও নতুন কাজের সময়সীমা সম্পর্কিত নিয়ম মানায় ব্যর্থতার কারণে এই বড় ধরণের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
ইন্ডিগোর বিপর্যয় এমন সময়ে ঘটেছে যখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ার ইন্ডিয়া ২৭ শতাংশ বাজার অংশীদারিত্ব নিয়ে দুর্বল সেবা ও সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার কারণে কড়া নজরদারির মধ্যে রয়েছে।
সরকার পাইলট ফ্যাটিগ ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত বিধি শিথিল করেছে। ইন্ডিগো ইতিমধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, তবে ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এককভাবে এত বড় এয়ারলাইনের ওপর নির্ভরতা পুরো শিল্প খাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
স্টারএয়ার কনসালটিংয়ের চেয়ারম্যান হর্ষ বর্ধন বলেছেন, “ইন্ডিগোর আকার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এর অপারেশনাল ব্যর্থতা পুরো ব্যবস্থার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।” ভারতের বাজারে ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া মিলিয়ে প্রায় ৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, যা কার্যত ডুয়োপলির মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
ইন্ডিগোর সম্প্রসারণ গত দশকে উল্লেখযোগ্য—৪০০টির বেশি এয়ারক্রাফট এবং দৈনিক দুই হাজার ফ্লাইটে প্রায় ৩.৮ লাখ যাত্রী পরিবহন করছে। তবে অন-টাইম পারফর্ম্যান্স মাত্র ৩.৭ শতাংশে নেমে যাওয়ায় ব্র্যান্ড ইমেজে আঘাত লেগেছে। রিফান্ড খাতে ইতিমধ্যে ৬৮ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্ডিগোর সমস্যা শুধু একটি এয়ারলাইনের নয়, বরং ভারতের বেসামরিক বিমান খাতের ভঙ্গুর কাঠামোর প্রতিফলন।
সূত্র: জিও নিউজ
এসআর

