নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু, এগিয়ে মামদানি

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৫৯

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে আগাম ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক জরিপে জোহরান মামদানি উল্লেখযোগ্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

রোববার কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্র্যাট জোহরান মামদানি, রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া, এবং নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ডেমোক্র্যাট ব্যালটে রয়েছেন। বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসও প্রার্থী তালিকায় থাকলেও, গত মাসে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ান এবং কুওমোর প্রতি সমর্থন জানান।

ডেমোক্র্যাটিক সমাজতান্ত্রিক হিসেবে পরিচিত মামদানি উদারপন্থী ও তরুণ ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। তিনি নিউ ইয়র্কের প্রায় ১০ লাখ ভাড়া-নিয়ন্ত্রিত অ্যাপার্টমেন্টে বসবাসকারীদের জন্য সর্বজনীন ও বিনামূল্যে শিশু যত্ন, ফ্রি বাস সার্ভিস এবং ভাড়া স্থগিতকরণ–এর মতো প্রস্তাব দিয়েছেন, যা ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া জাগিয়েছে।

কুওমো নির্বাচনী প্রচারণায় মামদানিকে ইসরাইলবিরোধী অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে সমালোচনা করেছেন। তিনি গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানকে মানবিক বিপর্যয় বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং এটিকে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পর্যবেক্ষণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন।

জুন মাসে অনুষ্ঠিত ডেমোক্র্যাটিক মেয়র পদে মামদানি কুওমোকে বিপুল ব্যবধানে পরাজিত করেন। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় তিনি এখন মূল নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। কুওমো, যিনি ২০২১ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগের পর গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন, নিজেকে অভিজ্ঞ প্রশাসক হিসেবে তুলে ধরছেন এবং আর্থিক শৃঙ্খলার বার্তা দিয়ে ভোটারদের কাছে আবেদন রাখছেন।

নিউ ইয়র্কে ২০১৯ সাল থেকে আগাম ভোটদান চালু রয়েছে এবং এটি ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গত জুনের মেয়র প্রাইমারিতে শহরের প্রচারণা অর্থ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট আগাম ও সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রদান করা হয়েছিল।

এদিকে, প্রতিবেশী রাজ্য নিউ জার্সিতেও গভর্নর নির্বাচন চলছে। সেখানে রিপাবলিকান স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান জ্যাক সিয়াটারেলি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ডেমোক্র্যাটিক মার্কিন প্রতিনিধি মিকি শেরিল–এর সঙ্গে। এই অফ-ইয়ার নির্বাচন দুটো রাজ্যেই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য তাৎপর্যপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নিউ ইয়র্কে মামদানি বনাম কুওমো লড়াইটি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রগতিশীল বনাম প্রতিষ্ঠিত রক্ষণশীল শাখার মুখোমুখি সংঘর্ষ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে, নিউ জার্সিতে মধ্যপন্থী শেরিলের প্রচারণা দলটির মধ্যপন্থী ঘরানাকে শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈগলটন সেন্টারের বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনগুলো শুধু স্থানীয় প্রশাসনিক দিক থেকে নয়, বরং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বর্তমানে ভোটগ্রহণ চলছে শান্তিপূর্ণভাবে। প্রাথমিক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, নিউ ইয়র্কের পরবর্তী মেয়র হিসেবে জোহরান মামদানির এগিয়ে থাকার প্রবণতা আরও সুস্পষ্ট হচ্ছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত