
আমার দেশ অনলাইন

সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রে আছেন এক ব্যক্তি — মোহাম্মদ হামদান দাগালো, যিনি “হেমেদতি” নামে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এখন নীল নদের পশ্চিমে প্রায় অর্ধেক সুদান নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সাম্প্রতিক বিজয়ে তারা দারফুরের গুরুত্বপূর্ণ শহর এল-ফাশার দখল করেছে, যেখানে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ চলছে।
নম্র সূচনা থেকে শক্তিশালী কমান্ডার
১৯৭৪ বা ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া হেমেদতি দারফুরের আরবি ভাষাভাষী রিজেইগাত সম্প্রদায়ের মাহারিয়া শাখার সন্তান। তার পরিবার চাদ থেকে দারফুরে আসে উটপালন করে জীবিকা নির্বাহ করতে। কৈশোরেই স্কুল ছেড়ে দেন তিনি এবং জীবিকার খোঁজে লিবিয়া ও মিশরে উট বিক্রি করতেন।
তখন দারফুর ছিল আইনশৃঙ্খলাহীন এলাকা, যেখানে আরব মিলিশিয়া জানজাউইদরা স্থানীয় আফ্রিকান জাতিগোষ্ঠীর গ্রামগুলোতে হামলা চালাত। হেমেদতির ইউনিটও এসব হামলায় অংশ নেয় বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ। মার্কিন তদন্তে জানজাউইদদের গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) পাঠানো হয়।
বশিরের ছত্রছায়ায় উত্থান
সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির বিদ্রোহ দমন করতে জানজাউইদ বাহিনীকে সম্প্রসারিত করেন, যার মধ্যে হেমেদতির ইউনিটও ছিল। পরবর্তীতে হেমেদতি সরকারের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে দ্রুত প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন।
২০১৩ সালে তিনি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) প্রতিষ্ঠা করে তার বাহিনীকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আদায় করেন — যা সরাসরি প্রেসিডেন্ট বশিরের অধীনে কাজ করত। একই সঙ্গে তার পারিবারিক কোম্পানি আল-গুনাইদ দারফুরের সোনার খনি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সুদানের বৃহত্তম সোনা রপ্তানিকারক হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য
২০১৫ সালে হেমেদতি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইয়েমেন যুদ্ধে সুদানি সৈন্য পাঠানোর চুক্তি করেন — যা তাকে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিধর দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত করে। পরবর্তীতে তিনি রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গেও প্রশিক্ষণ ও সোনা বাণিজ্য চুক্তিতে জড়ান।
এই আন্তর্জাতিক জোটের মাধ্যমেই হেমেদতি তার বাহিনীকে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করেন, যার মধ্যে ড্রোনও রয়েছে — যা সাম্প্রতিক এল-ফাশার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিপ্লব, বিশ্বাসঘাতকতা ও গণহত্যার অভিযোগ
২০১৯ সালে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সময় বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন হেমেদতি। কিছু সময়ের জন্য তিনি “নতুন সুদান”-এর প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু শিগগিরই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নির্মম দমন অভিযান চালান।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেমেদতির বাহিনী শত শত মানুষকে হত্যা ও ধর্ষণ করে, এবং লাশ নীল নদে ফেলে দেয়।
২০২৩ সালে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে রাজধানী খার্তুম যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরবর্তীতে সংঘাত দারফুরে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে জাতিসংঘের হিসাবে ১৫,০০০ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে — যুক্তরাষ্ট্র একে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য
এল-ফাশার দখলের পর হেমেদতির আরএসএফ এখন পশ্চিম সুদানের প্রায় সব জনবসতিপূর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তিনি নিজেকে “শান্তি ও ঐক্যের সরকার”-এর চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন এবং এক সমান্তরাল প্রশাসন চালু করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, হেমেদতি হয়তো নিজেকে একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রের নেতা হিসেবে দেখছেন, অথবা পুরো সুদান শাসনের স্বপ্ন এখনো ত্যাগ করেননি। তার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সামরিক শক্তি মিলে তিনি বর্তমানে আফ্রিকার অন্যতম ক্ষমতাধর ও বিতর্কিত সামরিক নেতা।

সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রে আছেন এক ব্যক্তি — মোহাম্মদ হামদান দাগালো, যিনি “হেমেদতি” নামে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এখন নীল নদের পশ্চিমে প্রায় অর্ধেক সুদান নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সাম্প্রতিক বিজয়ে তারা দারফুরের গুরুত্বপূর্ণ শহর এল-ফাশার দখল করেছে, যেখানে জাতিসংঘ নিশ্চিত করেছে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ চলছে।
নম্র সূচনা থেকে শক্তিশালী কমান্ডার
১৯৭৪ বা ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া হেমেদতি দারফুরের আরবি ভাষাভাষী রিজেইগাত সম্প্রদায়ের মাহারিয়া শাখার সন্তান। তার পরিবার চাদ থেকে দারফুরে আসে উটপালন করে জীবিকা নির্বাহ করতে। কৈশোরেই স্কুল ছেড়ে দেন তিনি এবং জীবিকার খোঁজে লিবিয়া ও মিশরে উট বিক্রি করতেন।
তখন দারফুর ছিল আইনশৃঙ্খলাহীন এলাকা, যেখানে আরব মিলিশিয়া জানজাউইদরা স্থানীয় আফ্রিকান জাতিগোষ্ঠীর গ্রামগুলোতে হামলা চালাত। হেমেদতির ইউনিটও এসব হামলায় অংশ নেয় বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ। মার্কিন তদন্তে জানজাউইদদের গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করা হয় এবং বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (ICC) পাঠানো হয়।
বশিরের ছত্রছায়ায় উত্থান
সাবেক প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির বিদ্রোহ দমন করতে জানজাউইদ বাহিনীকে সম্প্রসারিত করেন, যার মধ্যে হেমেদতির ইউনিটও ছিল। পরবর্তীতে হেমেদতি সরকারের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে দ্রুত প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন।
২০১৩ সালে তিনি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF) প্রতিষ্ঠা করে তার বাহিনীকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি আদায় করেন — যা সরাসরি প্রেসিডেন্ট বশিরের অধীনে কাজ করত। একই সঙ্গে তার পারিবারিক কোম্পানি আল-গুনাইদ দারফুরের সোনার খনি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সুদানের বৃহত্তম সোনা রপ্তানিকারক হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সাম্রাজ্য
২০১৫ সালে হেমেদতি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইয়েমেন যুদ্ধে সুদানি সৈন্য পাঠানোর চুক্তি করেন — যা তাকে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিধর দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত করে। পরবর্তীতে তিনি রাশিয়ার ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গেও প্রশিক্ষণ ও সোনা বাণিজ্য চুক্তিতে জড়ান।
এই আন্তর্জাতিক জোটের মাধ্যমেই হেমেদতি তার বাহিনীকে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করেন, যার মধ্যে ড্রোনও রয়েছে — যা সাম্প্রতিক এল-ফাশার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিপ্লব, বিশ্বাসঘাতকতা ও গণহত্যার অভিযোগ
২০১৯ সালে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সময় বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন হেমেদতি। কিছু সময়ের জন্য তিনি “নতুন সুদান”-এর প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু শিগগিরই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে নির্মম দমন অভিযান চালান।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হেমেদতির বাহিনী শত শত মানুষকে হত্যা ও ধর্ষণ করে, এবং লাশ নীল নদে ফেলে দেয়।
২০২৩ সালে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হলে রাজধানী খার্তুম যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরবর্তীতে সংঘাত দারফুরে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে জাতিসংঘের হিসাবে ১৫,০০০ বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে — যুক্তরাষ্ট্র একে গণহত্যা হিসেবে ঘোষণা করেছে।
বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ লক্ষ্য
এল-ফাশার দখলের পর হেমেদতির আরএসএফ এখন পশ্চিম সুদানের প্রায় সব জনবসতিপূর্ণ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তিনি নিজেকে “শান্তি ও ঐক্যের সরকার”-এর চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন এবং এক সমান্তরাল প্রশাসন চালু করেছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, হেমেদতি হয়তো নিজেকে একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রের নেতা হিসেবে দেখছেন, অথবা পুরো সুদান শাসনের স্বপ্ন এখনো ত্যাগ করেননি। তার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সামরিক শক্তি মিলে তিনি বর্তমানে আফ্রিকার অন্যতম ক্ষমতাধর ও বিতর্কিত সামরিক নেতা।

হাওয়াইয়ের দ্বীপপুঞ্জে স্থানীয় পাখি ও বিশেষত বিপন্ন হাওয়াইয়ান মধুচক্রের সংখ্যা হ্রাস প্রতিরোধ করতে ড্রোনের মাধ্যমে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছরের জুনে বনাঞ্চলে আকাশ থেকে কয়েক ডজন জৈব পচনশীল শুঁটি ফেলা হয়। যেখানে প্রতিটি শুঁটিতেম প্রায় ১,০০০ ল্যাব-পালিত পুরুষ মশা রয়েছে।
৭ মিনিট আগে
২০২৪ সালের নভেম্বরে লন্ডনে চালু হয় এই ঐতিহাসিক ট্রাইব্যুনাল, যা রাসেল ট্রাইব্যুনালের আদলে তৈরি করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালের লক্ষ্য হলো বিশ্বের নাগরিক সমাজকে সক্রিয় করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধকে কঠোরভাবে তুলে ধরা। আর এর মাধ্যমে একটি বিস্তৃত 'জনগণের রেকর্ড' তৈরি করা।
১৫ মিনিট আগে
'আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের' সমালোচনা করে করা তার কিছু কাজ ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ইসরাইলের ভূমিকাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং ফিলিস্তিনিদের 'জাতিগত নিধনের' বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন যা কিছুটা তার স্বামীর নীতিগত অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।
৪৪ মিনিট আগে
এটি এমন একটি নিরাপত্তা চুক্তি সক্রিয় করতে সাহায্য করবে, যা ওয়াশিংটন সিরিয়া এবং ইসরাইলের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে। সিরিয়ার দীর্ঘকালীন নেতা বাসার আল-আসাদের পতনের পর এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সিরিয়ার কৌশলগত পুনঃসংযোজনের একটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
১ ঘণ্টা আগে