লন্ডনে বাংলাদেশের দূতাবাসের সামনে রোববার সংখ্যালঘুদের প্রতি সংহতি জানাতে আয়োজিত এক বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ‘শিখস ফর জাস্টিস’-এর প্রো-খালিস্তান শিখ কর্মী ও ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-ঘনিষ্ঠ ব্রিটিশ ভারতীয় হিন্দু গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
বাংলাদেশে হিন্দুদের হত্যার অভিযোগকে কেন্দ্র করে আয়োজিত ওই বিক্ষোভে খালিস্তানপন্থী গোষ্ঠী ভারতবিরোধী স্লোগান দেয় এবং খালিস্তানের পতাকা প্রদর্শন করে। এ সময় খালিস্তান রেফারেন্ডাম অভিযানের সমন্বয়ক ও প্রবীণ শিখ কর্মী পরমজিৎ সিং পাম্মা দূতাবাস প্রাঙ্গণে জড়ো হওয়া হিন্দু বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি হন।
পাম্মা ও বিজেপি-সমর্থক হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে থাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ দুই পক্ষকে আলাদা করে দেয় এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনে। পরে প্রো-খালিস্তান শিখ কর্মীরা দূতাবাস ভবনের চারপাশে প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভ চলাকালে ‘কে হাদিকে হত্যা করেছে—মোদি’, ‘কে হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যা করেছে—মোদি, মোদি, ভারত’—এমন স্লোগান শোনা যায়। শিখ কর্মীদের অভিযোগ, শিখ নেতাকর্মীদের মৃত্যুর জন্য ভারত সরকার দায়ী।
ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মতে, পরমজিৎ সিং পাম্মা ‘মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী’ তালিকাভুক্ত। তবে যুক্তরাজ্যে তাঁর আইনি অবস্থান ভারতের দাবির সঙ্গে এক নয়। এ বিষয়ে পাম্মা বলেন, তিনি যুক্তরাজ্যে প্রকাশ্যে বসবাস করছেন, কোনো ব্রিটিশ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত দোষসিদ্ধি হয়নি এবং ভারতের কোনো প্রত্যর্পণ আবেদন কার্যকর হয়নি।
তিনি আরও দাবি করেন, “আজ আমরা ভারতের ‘অন্ধকার দিক’ উন্মোচন করতে জড়ো হয়েছি। ভারত নিজ দেশে শিখ, মুসলিম ও খ্রিস্টানদের নিপীড়নে জড়িত; তাই বাংলাদেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় চাপাতে পারে না। খালিস্তান রেফারেন্ডামের পরবর্তী ধাপে আমরা ভারতের শিখদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নিপীড়নের পূর্ণ চিত্র তুলে ধরব।”
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও ভারতে অবস্থানের পর থেকে নয়াদিল্লি ও ঢাকার সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশি ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড এবং ঢাকায় এক হিন্দু শ্রমিকের পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও চাপে পড়েছে।
সূত্র: জিও নিউজ
এসআর
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

