সিরিয়ার উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এবং তার পরিবার গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মস্কোতে নির্জন ও বিলাসবহুল জীবন যাপন করছেন। বাশার আল-আসাদ আবারও তার পুরোনো পেশা, চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ শুরু করেছেন। বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান সোমবার এসব তথ্য জানিয়েছে।
দলীয় শক্তির বিপর্যয়ের পর, আল-আসাদ ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর সিরিয়া ত্যাগ করেন। তাকে রাশিয়ার বাহিনী সিরিয়ার উপকূলে খমেইমিম বিমানঘাঁটিতে পৌঁছে দেন এবং দেশ ত্যাগে সাহায্য করেন।
জানা যায়, আসাদ এখন মস্কোতে বসবাসের সময় আবারও চিকিৎসাবিদ্যা পড়াশোনা করছেন। তিনি রুশ ভাষা শিখছেন এবং চক্ষুরোগের দক্ষতা পুনর্দীক্ষণ করছেন। একজন সূত্র বলেন, “এটি তার প্যাশন, অর্থের জন্য নয়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে তিনি নিয়মিত ডাক্তারি করতেন।”
আল-আসাদ পরিবার মস্কোর পশ্চিমাঞ্চলের রুবলিওভকাতে অভিজাত এক গেটেড কমপ্লেক্সে বসবাস করছে। যেখানে উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং ধনীরা থাকেন। তবে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণে রেখেছে। পরিবারটির বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ সীমিত।
আল-আসাদের হঠাৎ দেশ ত্যাগ তার নিকটতম পরিজন ও সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করেছে। তার ভাই মাহের আল-আসাদ এবং অন্যান্য আত্মীয়দের বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। অনেককে নিজে রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে পৌঁছাতে হয়েছে।
পরিবারের সন্তানরা মস্কোতে নতুন জীবনধারায় খাপ খাইয়ে নিয়েছে। তার কন্যা বাইশ বছর বয়সী জেইন আল-আসাদ এমজিআইএমও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট করেছেন। আল-আসাদের ছেলে হাফেজ আল-আসাদ একসময় উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। সামাজিক মিডিয়া থেকে সরে গেছেন এবং এক ছদ্মনামে অনলাইন প্রোফাইল ব্যবহার করছেন।
বাশার আল-আসাদ ব্যক্তিগতভাবে রাজনৈতিক বা মিডিয়ার কার্যকলাপে অংশ নিতে পারছেন না। রাশিয়ার ইরাক রাষ্ট্রদূত এলব্রাস কুত্রাশেভ জানিয়েছেন, “আল-আসাদ এখানে থাকতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তার কোনো মিডিয়া বা রাজনৈতিক অধিকার নেই। তবে তিনি নিরাপদ এবং বেঁচে আছেন।”
একটি পরিবার বন্ধু দ্য গার্ডিয়ানকে বলেছেন, “তারা কিছুটা হতবাক অবস্থায় আছে। তারা এখন শুধু নতুন জীবনযাপনের সাথে খাপ খাচ্ছে, প্রাক্তন প্রথম পরিবারের ভূমিকা ছেড়ে।”
সূত্র: আল আরাবিয়া
এসআর

