পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার যে শর্ত দিলেন জেলেনস্কি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ০৩
আপডেট : ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১৫: ৪৫
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি আছেন, তবে তার আগে মিত্র রাষ্ট্রগুলোকে ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে।

তিনি বলেন, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও যেন রাশিয়া আর আক্রমণ করতে না পারে, তার জন্য এমন নিশ্চয়তা অত্যন্ত জরুরি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানে হয়।

বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে "নিরাপত্তা গ্যারান্টির কাঠামো" নিয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা চায়। তিনি আরও বলেন, কোন মিত্র দেশ কী দায়িত্ব নেবে—তা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করতে হবে।

এই নিরাপত্তা পরিকল্পনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি সামরিক জোট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেটিকে ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ বলা হচ্ছে। এই জোট যুদ্ধপরবর্তী ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা গ্যারান্টির বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পরেই পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে ভাবতে চান জেলেনস্কি। তবে এমন বৈঠক শুধুমাত্র কোনও নিরপেক্ষ ইউরোপীয় দেশে হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। মস্কোতে কোনও শীর্ষ সম্মেলনের সম্ভাবনা তিনি একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন।

এদিকে তিনি চীনের ভূমিকা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন। মস্কোর প্রতি বেইজিংয়ের পক্ষপাতিত্বের কারণে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিষয়ে চীনের কোনো মধ্যস্থতা বা ভূমিকা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।

জেলেনস্কির বক্তব্য আসে এমন সময়ে, যখন রাশিয়া একাধিকবার ইউক্রেনে রাতভর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে। সর্বশেষ হামলায় পশ্চিম ইউক্রেনের লভিভ শহরে একজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকে। খেরসন শহরেও গোলাবর্ষণে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। কিয়েভজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে পুরো রাত জুড়ে।

ফ্রান্স এই হামলাগুলোর নিন্দা জানিয়ে বলেছে, মস্কো শান্তি আলোচনায় সত্যিকার অর্থে আগ্রহী নয়। প্যারিস এসব হামলাকে “গত এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বড় আক্রমণ” বলে অভিহিত করেছে।

অন্যদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে তারা পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের একটি গ্রাম দখল করেছে এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তা দাবি অবাস্তব বলে অভিযোগ এনেছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেনে ইউরোপীয় সেনা মোতায়েন “একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

ইতিমধ্যে জেলেনস্কি ঘোষণা করেছেন, ইউক্রেন “ফ্ল্যামিঙ্গো” নামের একটি দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে পরীক্ষা করেছে, যেটি ৩,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এর ব্যাপক উৎপাদন শুরু হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

জেলেনস্কির মতে, যুদ্ধ শেষ করার একমাত্র উপায় পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা। তবে সেটা হবে নিরপেক্ষ মাটিতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ভিত্তিতে। তিনি আরও বলেন, যদি এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও সেখানে উপস্থিত থাকা উচিত।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত