মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: দ্রুত বিদ্যালয় খোলার বিপক্ষে অনেক অভিভাবক

আল-আমিন
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ১২: ০৫

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর অধিকাংশ অভিভাবকই দ্রুত স্কুল চালুর পক্ষে নেই। শিশুদের ভয় কাটাতে সময় নিতে চাচ্ছেন তারা। অভিভাবকরা বলেছেন, স্কুলের শিশুরা ওই ঘটনার পর মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছে। তারা মা-বাবাকে সহপাঠীদের কথা বলছে। অনেকেই ঘুমের মধ্যে চমকে উঠছে। কেউবা রাতে ঘুম থেকে উঠে ভুলভাল কথা বলছে। তাই অনেক অভিভাবক কিছুদিন পর স্কুল চালুর পক্ষে মতামত দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিন বিদ্যালয় ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থী তাসমিনার মা সোহানা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ে স্কুল শাখার শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন সে ক্যান্টিনে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিল। দুর্ঘটনাস্থলের ওই ভবনে থাকলে নিশ্চিত তার মৃত্যু হতো।’ তিনি আরো বলেন, ‘চারদিন পর স্কুলে মেয়েকে নিয়ে এসেছি। আমার মেয়ে কদিন ধরে কথা বলা কমিয়ে দিয়েছে।’

শামসুল ইসলাম নামে আরেক অভিভাবক জানান, ‘আমার সন্তান স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। রাতে ঘুমের মধ্যে ভুলভাল কথা বলছে। শিশুদের মানসিক ট্রমা না কমা পর্যন্ত স্কুল না খোলার পক্ষেই আমার মত।’

এ বিষয়ে বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী ডা. মুহিত কামাল বলেন, দুর্ঘটনায় শিশুরা মানসিকভাবে আঘাত পেতে পারে। তাদের ট্রমা কাটাতে সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিতে হবে।

সরেজমিনে গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের গেট বন্ধ রয়েছে। উৎসুক লোকজন ভিড় করছে সেখানে। পুলিশ সদস্যরা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছে। তবে গতকাল স্কুলের কজন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীকে সেখানে দেখা গেছে।

আরো দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা গেছে ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী মাহিয়া তাসনিম (১৫)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যায় শিশুটি। তার শরীরের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এ ছাড়া দগ্ধ শিক্ষার্থী মাহতাব রহমানও (১৫) মারা গেছে। মাহতাব স্কুলটির সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মাহতাবের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এ দুজনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মাইলস্টোনের ঘটনায় মোট নিহত হয়েছে ৩৪ জন।

ডিএনএ টেস্টে পাঁচ শিশুর পরিচয় শনাক্ত

এদিকে পাঁচ শিশুর পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ডিএনএ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমিন জানান, দুর্ঘটনার পরদিন ২২ জুলাই ঢাকা সিএমএইচে রক্ষিত অজ্ঞাত মৃতদেহ ও দেহাংশ থেকে মোট ১১টি ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তী সময়ে এসব নমুনার ডিএনএ বিশ্লেষণ করে ৫ নারীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

যাদের পরিচয় জানা গেছে, তারা হলেনÑমো. ফারুক হোসেন ও সালমা আক্তার দম্পতির মেয়ে ওকিয়া ফেরদৌস নিধি, বাবুল ও মাজেদা দম্পতির মেয়ে লামিয়া আক্তার সোনিয়া, আব্বাস উদ্দিন ও মিনু আক্তার দম্পতির মেয়ে আফসানা আক্তার প্রিয়া, শাহাবুল শেখ ও মিম দম্পতির মেয়ে রাইসা মনি এবং আব্দুল কাদির ও উম্মে তামিমা আক্তার দম্পতির মেয়ে মারিয়াম উম্মে আফিয়া।

এখনো নিখোঁজ তিন শিক্ষার্থী ও দুই অভিভাবক

মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ শিক্ষার্থী, দুজন শিক্ষক ও দুজন অভিভাবকের মৃত্যু হয়েছে। এখনো তিন শিক্ষার্থী ও দুজন অভিভাবক নিখোঁজ রয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, গণমাধ্যম ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আইআরআই প্রতিনিধি দলের বৈঠক

শুক্র-শনিবারও চলবে বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম

প্রধান উপদেষ্টার আদেশে জুলাই সনদের আইনি রূপ দিতে হবে

নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা শুরুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

আইআরআই’র সঙ্গে নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা এনসিপির

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত