রকীবুল হক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব দল ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতা ও ভোটের হিসাব-নিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সে অনুযায়ী নেতারা দলীয় কৌশল ঠিক করছেন বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের অগণতান্ত্রিক শাসন, দুর্নীতি, গুম-খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং লুটপাটের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি প্রতিবাদী মনোভাব তৈরি হয়েছে। এ অবস্থার সাধারণ ও ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। অনেকে চান এসব দলের ঐক্যের মাধ্যমে সরকার গঠিত হোক। তৃণমূলের নেতাকর্মী ছাড়াও মাঠপর্যায়ের সাধারণ মানুষের এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দলের নেতারা। বিভিন্ন মহল থেকে এ সুযোগ কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কেবল তৃণমূলের চাওয়া নয়, নির্বাচনের পটভূমিতে দলের শীর্ষ নেতারাও নিজেদের স্বার্থ এবং ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা আসন সমঝোতা, জয়লাভের নিশ্চয়তা, দলীয় আদর্শ বজায় রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসলামি দলগুলোর নির্বাচনি পরিকল্পনাও প্রধানত এ দুটি দলকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে। উভয় দলই সমমনাদের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। তবে এসব বিষয় স্পষ্ট হতে আরো অপেক্ষা করতে হবে। ইসলামপন্থি দলগুলো একত্রিত হবে কি না কিংবা কে কোন দিকে যাবে, তা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বা পরে চূড়ান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সূত্রমতে, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, গণহত্যার বিচার, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে পিআর চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েক দফা অভিন্ন কর্মসূচির পর যুগপৎ আন্দোলনে আছে জামায়াতসহ আটটি দল। অন্য দলগুলো হলোÑইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা
এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
তবে এটি কোনো নির্বাচনি জোট নয় জানিয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমরা অভিন্ন কর্মসূচি পালনের পর সময়ের দাবি অনুযায়ী যৌথভাবে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছি। তবে নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সময় বলে দেবে আমরা কোন দিকে যাব।
সূত্রমতে, জুলাই বিপ্লবপরবর্তী পরস্থিতিতে ইসলামি দলগুলোর মাঝে ঐক্যের মানসিকতা তৈরি হয়। গণঅভ্যুত্থানের পরপরই গত বছরের ১৭ আগস্ট জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে দলমত নির্বিশেষে আলেমদের বৈঠকে ‘ইসলামপন্থিদের ভোট এক বাক্সে’ নেওয়ার পক্ষে মত উঠে আসে। তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা পাঁচটি ইসলামি দল বেশ কয়েক দফা বৈঠক করে নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করে। তবে জমিয়ত ও ইসলামী ঐক্যজোটের কয়েকটি অংশ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচনি জোটের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগে থেকেই আমাদের নির্বাচনি ঐক্য প্রক্রিয়া চলছে। সব ইসলামি দলের সঙ্গেই কথাবার্তা হচ্ছে। আরো কিছু দেশপ্রেমিক দলের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া এখনো চলমান। তবে আমরা ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের সম্ভাবনা দেখছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান এ বিষয়ে বলেন, তৃণমূলপর্যায়ে ইসলামপন্থিদের মধ্যে ঐক্য হয়ে গেছে এবং তারা আর বিভক্তি দেখতে চায় না। তিনি জানান, বর্তমানে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে বড় কোনো বাধা নেই এবং অতীতের তুলনায় এখন দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইসলামি দলগুলো একত্রিত হলে তারা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে আসবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। বিএনপিকেও মানুষ বারবার দেখেছে। তাই ইসলামপন্থিদের যাওয়ার জায়গা কোথায়? তাছাড়া সাধারণ মানুষ এবার ইসলামপন্থিদের ক্ষমতায় দেখতে চায়। শুধু কিছু আসনে জয়লাভ করা নয়; বরং ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ এসেছে। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর চিন্তা প্রায় এক। আশা করি নির্বাচন পর্যন্ত আমরা এ অবস্থানে থাকতে পারব।
খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল জলিল জানান, দলের তৃণমূল ও সাধারণ মানুষÑসবাই ইসলামি দলগুলোর ঐক্য চান। আপাতত এ নিয়ে কোনো বাধা নেই এবং যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইসলামি দলগুলো আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে তিনি আশাবাদী।
খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, তৃণমূলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে, ইসলামি দলগুলো যেন একক প্রার্থী দেয়। তিনি আশা করছেন, ঐক্যের ভিত্তিতেই তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, জনগণ পরিবর্তন চায়। ইসলামি দলগুলো ক্ষমতায় গেলে দেশ থেকে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি দূর হবে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে। আশা করি সময়মতো নির্বাচনি জোটের সিদ্ধান্ত হবে।
নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, তৃণমূলের মধ্যে ইসলামি ঐক্য নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। আমরা জামায়াতসহ আটটি দলের যুগপৎ কর্মসূচিতে আছি। তবে নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে জমিয়তের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ইসলামি ঐক্য হবে, এটা ভালো জিনিস। তবে সেটা ইসলামের জন্য হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। চূড়ান্ত না হলেও বিএনপির সঙ্গেই তাদের সমঝোতা হতে পারে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপির প্রতি যেমন মানুষের খারাপ ধারণা আছে, তেমনি জামায়াতের প্রতিও আছে। তবে মাঠে জামায়াতমুখী অবস্থানের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
মাঠপর্যায়ে ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের চাহিদা থাকলেও ভোটে জয়লাভ নিয়ে হিসাব-নিকাশের কথা জানিয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী। তিনি বলেন, সারা দেশে ইসলামি দলগুলোর একক প্রার্থীর প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা পরস্পর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে আছি। তবে ইসলামি দলগুলো এক হলেও তাদের প্রার্থীরা শক্তিশালী বা ভোটে জয়লাভ করে আসার মতো নন। তাই অনেক হিসাব-নিকাশের ব্যাপার আছে। তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বিএনপির সঙ্গে তাদের সমঝোতার সম্ভাবনা আছে বলেও আভাস দেন মুফতি সাখাওয়াত।
ইসলামী ঐক্যজোটের আরেক অংশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা ইলিয়াস আতহারী বলেন, মাঠে সবাই ফ্যাসিবাদবিরোধী একটি ঐক্য দেখতে চান। তবে শুধু ইসলামি দলগুলোর ঐক্য হলেই সব সমস্যার সমাধান হবে, এমনটি তিনি মনে করেন না। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতে ইসলামের এক যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সাধারণ মানুষের চাহিদা হলো ইসলামি দলগুলোর ঐক্য। তবে বাস্তবে বিভিন্ন দল আসন ভাগাভাগি নিয়ে গোপনে গোপনে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করছে, যার ফলে ইসলামি দলগুলোর ঐক্যে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, তারা যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও এখনো নির্বাচনি জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি জানান, ২৫ অক্টোবর তাদের দলের সাধারণ পরিষদ ও মজলিসে শূরার অধিবেশন হবে। সেখানে তৃণমূল নেতাদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি ড. খলিলুর রহমান মাদানী এ বিষয়ে বলেন, ইসলামি দলগুলোর ঐক্য আছে এবং তৃণমূলের সবাই ঐক্য চান। তবে শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করছেন। ইসলামপন্থিদের এক বাক্সে ভোটের তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব দল ভবিষ্যতে রাষ্ট্রক্ষমতা ও ভোটের হিসাব-নিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সে অনুযায়ী নেতারা দলীয় কৌশল ঠিক করছেন বলে জানা গেছে।
সূত্রমতে, পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের অগণতান্ত্রিক শাসন, দুর্নীতি, গুম-খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং লুটপাটের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি প্রতিবাদী মনোভাব তৈরি হয়েছে। এ অবস্থার সাধারণ ও ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। অনেকে চান এসব দলের ঐক্যের মাধ্যমে সরকার গঠিত হোক। তৃণমূলের নেতাকর্মী ছাড়াও মাঠপর্যায়ের সাধারণ মানুষের এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দলের নেতারা। বিভিন্ন মহল থেকে এ সুযোগ কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কেবল তৃণমূলের চাওয়া নয়, নির্বাচনের পটভূমিতে দলের শীর্ষ নেতারাও নিজেদের স্বার্থ এবং ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা আসন সমঝোতা, জয়লাভের নিশ্চয়তা, দলীয় আদর্শ বজায় রাখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসলামি দলগুলোর নির্বাচনি পরিকল্পনাও প্রধানত এ দুটি দলকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে। উভয় দলই সমমনাদের সঙ্গে সমঝোতার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। তবে এসব বিষয় স্পষ্ট হতে আরো অপেক্ষা করতে হবে। ইসলামপন্থি দলগুলো একত্রিত হবে কি না কিংবা কে কোন দিকে যাবে, তা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বা পরে চূড়ান্ত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সূত্রমতে, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, গণহত্যার বিচার, উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে পিআর চালু, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতসহ বিভিন্ন দাবিতে কয়েক দফা অভিন্ন কর্মসূচির পর যুগপৎ আন্দোলনে আছে জামায়াতসহ আটটি দল। অন্য দলগুলো হলোÑইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা
এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
তবে এটি কোনো নির্বাচনি জোট নয় জানিয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমরা অভিন্ন কর্মসূচি পালনের পর সময়ের দাবি অনুযায়ী যৌথভাবে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছি। তবে নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সময় বলে দেবে আমরা কোন দিকে যাব।
সূত্রমতে, জুলাই বিপ্লবপরবর্তী পরস্থিতিতে ইসলামি দলগুলোর মাঝে ঐক্যের মানসিকতা তৈরি হয়। গণঅভ্যুত্থানের পরপরই গত বছরের ১৭ আগস্ট জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে দলমত নির্বিশেষে আলেমদের বৈঠকে ‘ইসলামপন্থিদের ভোট এক বাক্সে’ নেওয়ার পক্ষে মত উঠে আসে। তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী আন্দোলনসহ সমমনা পাঁচটি ইসলামি দল বেশ কয়েক দফা বৈঠক করে নির্বাচনে একক প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে একমত পোষণ করে। তবে জমিয়ত ও ইসলামী ঐক্যজোটের কয়েকটি অংশ বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনি সমঝোতার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্বাচনি জোটের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আগে থেকেই আমাদের নির্বাচনি ঐক্য প্রক্রিয়া চলছে। সব ইসলামি দলের সঙ্গেই কথাবার্তা হচ্ছে। আরো কিছু দেশপ্রেমিক দলের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া এখনো চলমান। তবে আমরা ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের সম্ভাবনা দেখছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান এ বিষয়ে বলেন, তৃণমূলপর্যায়ে ইসলামপন্থিদের মধ্যে ঐক্য হয়ে গেছে এবং তারা আর বিভক্তি দেখতে চায় না। তিনি জানান, বর্তমানে ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির ক্ষেত্রে বড় কোনো বাধা নেই এবং অতীতের তুলনায় এখন দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইসলামি দলগুলো একত্রিত হলে তারা একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে আসবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ মাঠে নেই। বিএনপিকেও মানুষ বারবার দেখেছে। তাই ইসলামপন্থিদের যাওয়ার জায়গা কোথায়? তাছাড়া সাধারণ মানুষ এবার ইসলামপন্থিদের ক্ষমতায় দেখতে চায়। শুধু কিছু আসনে জয়লাভ করা নয়; বরং ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ এসেছে। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর চিন্তা প্রায় এক। আশা করি নির্বাচন পর্যন্ত আমরা এ অবস্থানে থাকতে পারব।
খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল জলিল জানান, দলের তৃণমূল ও সাধারণ মানুষÑসবাই ইসলামি দলগুলোর ঐক্য চান। আপাতত এ নিয়ে কোনো বাধা নেই এবং যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইসলামি দলগুলো আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেবে বলে তিনি আশাবাদী।
খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, তৃণমূলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে, ইসলামি দলগুলো যেন একক প্রার্থী দেয়। তিনি আশা করছেন, ঐক্যের ভিত্তিতেই তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন।
তিনি বলেন, জনগণ পরিবর্তন চায়। ইসলামি দলগুলো ক্ষমতায় গেলে দেশ থেকে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি দূর হবে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে। আশা করি সময়মতো নির্বাচনি জোটের সিদ্ধান্ত হবে।
নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, তৃণমূলের মধ্যে ইসলামি ঐক্য নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। আমরা জামায়াতসহ আটটি দলের যুগপৎ কর্মসূচিতে আছি। তবে নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে জমিয়তের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ইসলামি ঐক্য হবে, এটা ভালো জিনিস। তবে সেটা ইসলামের জন্য হচ্ছে কি না, দেখতে হবে। চূড়ান্ত না হলেও বিএনপির সঙ্গেই তাদের সমঝোতা হতে পারে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বিএনপির প্রতি যেমন মানুষের খারাপ ধারণা আছে, তেমনি জামায়াতের প্রতিও আছে। তবে মাঠে জামায়াতমুখী অবস্থানের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
মাঠপর্যায়ে ইসলামি দলগুলোর ঐক্যের চাহিদা থাকলেও ভোটে জয়লাভ নিয়ে হিসাব-নিকাশের কথা জানিয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী। তিনি বলেন, সারা দেশে ইসলামি দলগুলোর একক প্রার্থীর প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা পরস্পর ছাড়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে আছি। তবে ইসলামি দলগুলো এক হলেও তাদের প্রার্থীরা শক্তিশালী বা ভোটে জয়লাভ করে আসার মতো নন। তাই অনেক হিসাব-নিকাশের ব্যাপার আছে। তাড়াতাড়ি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বিএনপির সঙ্গে তাদের সমঝোতার সম্ভাবনা আছে বলেও আভাস দেন মুফতি সাখাওয়াত।
ইসলামী ঐক্যজোটের আরেক অংশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা ইলিয়াস আতহারী বলেন, মাঠে সবাই ফ্যাসিবাদবিরোধী একটি ঐক্য দেখতে চান। তবে শুধু ইসলামি দলগুলোর ঐক্য হলেই সব সমস্যার সমাধান হবে, এমনটি তিনি মনে করেন না। বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতে ইসলামের এক যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সাধারণ মানুষের চাহিদা হলো ইসলামি দলগুলোর ঐক্য। তবে বাস্তবে বিভিন্ন দল আসন ভাগাভাগি নিয়ে গোপনে গোপনে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করছে, যার ফলে ইসলামি দলগুলোর ঐক্যে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, তারা যুগপৎ আন্দোলনে থাকলেও এখনো নির্বাচনি জোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। তিনি জানান, ২৫ অক্টোবর তাদের দলের সাধারণ পরিষদ ও মজলিসে শূরার অধিবেশন হবে। সেখানে তৃণমূল নেতাদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করা সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি ড. খলিলুর রহমান মাদানী এ বিষয়ে বলেন, ইসলামি দলগুলোর ঐক্য আছে এবং তৃণমূলের সবাই ঐক্য চান। তবে শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করছেন। ইসলামপন্থিদের এক বাক্সে ভোটের তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও তিনি জানান।
নীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
৭ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগেজুলাই বিপ্লবে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর তার দল আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) বহু নেতা-কর্মীকে আইনের আওতায় আনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এরমধ্যে দলটির মন্ত্রী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীও রয়েছেন।
১ দিন আগে