রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ডিসিদেরই রাখছে ইসি

গাজী শাহনেওয়াজ
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ১৮

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। আর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (এআরও) হবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)। নির্বাচন কমিশনের নীতিনির্ধারক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন পরিচালনায় ডিসিদের ওপরই আস্থা রাখছে ইসি। এর কিছু কারণও রয়েছে। সেগুলো হচ্ছেÑডিসি জেলার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সমন্বয়ক, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটিসহ শতাধিক কমিটির সভাপতি, তার রয়েছে একাধিক গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ ও পুলিশি প্রটোকল এবং জেলা প্রশাসনের তহবিল থেকে অর্থ খরচের অনুমোদন। এসব বিবেচনায় ডিসিদের হাতেই নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব রাখতে চায় ইসি।

বিজ্ঞাপন

সূত্র আরো জানায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার ও ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাবেন। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন ইউএনওরা। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে ইসির। তফসিল ঘোষণার আগেই যে কোনো কমিশন সভায় এটি চূড়ান্ত হতে পারে। এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে ইসির ডাকা সংলাপে অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্টজন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা উপেক্ষিতই থেকে যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন ডিসিদের বাইরে অন্য কাউকে এ পদে এনে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় না। ফলে রিটার্নিং কর্মকর্তা হওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন ও দাবি করে আসা কমিশনের যোগ্য কর্মকর্তাদের স্বপ্ন এবারো থাকছে অধরা। স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে আয়োজন করে আসছে ইসি। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি এখনো প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপরই নির্ভর করছে।

কমিশন বলছে, জেলায় ডিসিরা সবচেয়ে ক্ষমতাধর। তাদের বাইরে জাতীয় নির্বাচনে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হলে নির্বাচনের কার্যক্রমে সমন্বয় করা কমিশনের একার পক্ষে সম্ভব হবে না। পাশাপাশি, নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সবাই থাকেন ডিসির অধীনে, সেখানে অন্যদের এ কাজে যুক্ত করা হলে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে নির্বাচন। তাই নানাদিক বিবেচনা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আগামী সংসদ নির্বাচনেও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে ডিসিদের নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাচন কমিশনার আমার দেশকে জানান, ডিসিদের বাইরে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অন্য কাউকে নিয়োগের পরিকল্পনা নেই। বলতে পারেন, ডিসিদের বিষয়েই নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আগামী নির্বাচনে নির্বাচন পরিচালনার ক্ষমতা তারাই পাবেন, যাদের হাতে জেলার সব প্রশাসনিক ক্ষমতা রয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আগামীতে যেকোনো কমিশন সভায় আলোচনার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত