ইমদাদ হোসাইন
ঈদুল আজহার পর বাংলাদেশে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। অর্থাৎ প্রায় ৮০ লাখ, যা আগের বছর ছিল ৯০ লক্ষাধিক। বড় সম্ভাবনা থাকার পরও রপ্তানিতে এবারও ধাক্কা খেতে হবে এ খাতের ব্যবসায়ীদের। হোঁচট খাওয়ার নেপথ্য কারণ হিসেবে সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে অকার্যকর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্রকে (সিইটিপি) চিহ্নিত করেছেন তারা।
ট্যানারি মালিকরা বলছেন, সিইটিপি এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রকল্পে নতুন করে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হলে সম্ভাবনাময় খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এ ছাড়া কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে সরকারের নানা উদ্যোগ ইতিবাচক হতে পারে।
সারা দেশের মৌসুমি বিক্রেতারা লবণ মাখানো চামড়া সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, অন্যদিকে ট্যানাররা ঢাকায় সরকার নির্ধারিত প্রতি বর্গফুট ৬০-৬৫ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে ৫৫-৬০ টাকায় কাঁচা চামড়া কিনছেন। চলতি সপ্তাহের শেষদিকে আরো চালান ঢাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিটিএর তথ্যানুযায়ী, ১০ জুন পর্যন্ত সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে প্রায় ৫০ হাজার ছাগলের চামড়া এবং চার লক্ষাধিক লবণাক্ত গরুর চামড়া এসেছে।
এদিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারের বিশেষ উদ্যোগে গত বছর এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলো আগের বছর দুই লাখ ৯ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করেছিল, সেখানে এ বছর ৯ হাজার ৩৩০টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক হিসাবে ১৩ লাখ আট হাজার চামড়া সংরক্ষণ করেছে। এ ছাড়া সারা দেশের আড়তদার, ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় নিজস্ব অর্থায়নে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেছেন। ২০২৫ সালে পশুর চাহিদা অনুযায়ী চামড়া সংরক্ষণে লবণের প্রয়োজন ধরা হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৪৮ টন। সে অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণের মজুত করা হয়েছিল ৯৩ হাজার ২২৯ টন।
১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মতো চামড়া উৎপাদনের মধ্যবর্তী পর্যায়ে কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু বা ভেজা নীল চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে এ বছর কাঁচা চামড়ার দাম ১০০ শতাংশে পৌঁছেছে। ভেজা নীল চামড়া তৈরিতে লবণাক্ত কাঁচা চামড়া ব্যবহার করা হয়, যা আরো প্রক্রিয়াজাতকরণের আগে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
কিন্তু বর্তমানে মাত্র তিন ডজন ট্যানারি আর্থিকভাবে নিরাপদ, যার মধ্যে চারটি লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) থেকে সার্টিফিকেশন পেয়েছে। পরিবেশগত অসম্মতি এবং অপর্যাপ্ত সার্টিফিকেশনের কারণে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
২০২১ সালের জুলাইয়ে অসম্পূর্ণ প্ল্যান্টটি ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট বর্জ্য শোধনাগার কোম্পানির কাছে দিয়ে যায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর থেকেই অনেকটা অকার্যকর অবস্থায় আছে সিইটিপি। অন্যান্য শর্ত পূরণ হলেও কার্যকর সিইটিপি না থাকায় মিলছে না সনদ। বর্তমানে বিশ্বে এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব ট্যানারির সংখ্যা ৫৪৩টি, যার মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে মাত্র পাঁচটি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ আমার দেশকে বলেন, আমাদের সমস্যা দুটি। প্রথমত তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর দ্বিতীয়ত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। এটা যদি পরিবেশ অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী না হয়, তাহলে এলডব্লিউজি সনদ কোনো ট্যানারি পাবে না। এ সনদের এক হাজার ৭১০ মার্কের মধ্যে এক হাজার ৪১০ মার্কই ট্যানারির ভেতরে। আমাদের ১৫-২০টি ট্যানারি এক হাজার ৪১০ মার্কের মধ্যে আছে। তারা এসব কমপ্লায়েন্স পূরণ করেছে।
তিনি বলেন, বাকি যে ৩০০ মার্ক সেটি তরল বর্জ্য ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়। এ মার্ক অর্জন করতে না পারলে কোনো ট্যানারি সার্টিফায়েড হবে না।
তিনি আরো বলেন, সিইটিপির নতুন ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। চীনের ঠিকাদাররা এটাকে ২৫ হাজার কিউবিট মিটার টেন্ডার নিয়ে ১৪ হাজার কিউবিট মিটার পানির ব্যবস্থাপনা করে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে গেছে। এটার সঙ্গে সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন, এমনকি সরকারের উচ্চপর্যায় পর্যন্ত জড়িত ছিল। আইএমইডির মূল্যায়নে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি শেষ না করেই রাখা হয়েছে।
রপ্তানি সম্ভাবনার কারণে এবার চামড়ার দাম বেড়েছে। তবে ট্যানারি মালিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যদি রপ্তানির বাইরে অনেক বেশি দাম নেয়, তাহলে দেশে কাঁচা চামড়ার অভাব দেখা দিতে পারে।
বিটিএর তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে ১৫০টিরও বেশি অতিরিক্ত চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কারখানা চালু রয়েছে। এর ১২৫টি সদস্য ট্যানারি স্থানীয়ভাবে সম্পূর্ণ মূল্য সংযোজনের জন্য সুবিধা তৈরিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিটিএ চেয়ারম্যান বলেন, কাঁচা চামড়া বাংলাদেশ থেকে কোনো দেশ নেবে কি না, তা আমার জানা নেই। এটি কোথাও পাঠাতে হলে ফ্রোজেন কনটেইনার থাকতে হয়। ফ্রোজেন কনটেইনার সুবিধা আছে কি না, সেটিও আমার জানা নেই। তবে আমার জানামতে, বিদেশি ক্রেতারা কাঁচা চামড়ার প্রতি আকৃষ্ট নন। আর কাঁচা চামড়া থেকে ওয়েট ব্লু পর্যন্ত দূষণের হার ৮০ শতাংশের বেশি। বিদেশিরা কাঁচা চামড়া নিয়ে পরিবেশদূষণ করতে চান না।
চীনও বাংলাদেশের কাঁচা চামড়া নিতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন সরকার বাংলাদেশের চামড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের চামড়ায় লাম্পি ডিজিজ আছে। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে আসার পর তিনি সরাসরি বলেন, বাংলাদেশের চামড়ায় এ ডিজিজ থাকায় আমরা তা নিতে পারব না। অন্যদিকে ওয়েট ব্লু চামড়া মালিকদের মাধ্যমে যাবে, সেটিও আমাদের শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। কারণ ওয়েট ব্লু চামড়া যদি রপ্তানি হয়, তাহলে ভালো চামড়া চলে যাবে, খারাপ চামড়া রয়ে যাবে।
শাহীন আহমেদ বলেন, এ শিল্পের মূল্য সংযোজনের জন্য ১৯৯০ সালে এটির রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছিল। এখন আবার চালু হওয়ায় সেটি শিল্পের জন্য ক্ষতি। কারণ হাজার হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাবে, আমাদের ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে। সব মিলিয়ে এ সিদ্ধান্ত চামড়া খাতের জন্য ভালো নয়। আমি মনে করি, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কাঁচা চামড়ার দাম ধরে রাখার জন্য, চামড়া যাতে নষ্ট না হয়।
প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করে চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি শিল্প হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এই পরিমাণ পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার আশা করছে।
জাপান, ইতালি, জার্মানি এবং ইংল্যান্ডসহ উন্নত বিশ্বে চামড়াশিল্পের যথেষ্ট সুনাম ও চাহিদা রয়েছে। এই সুনাম ও চাহিদা কাজে লাগিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ ডলার আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপের বৃহত্তম খুচরা জুতা বিক্রেতা ডাচম্যানের তিন হাজার ৮০০টিরও বেশি শোরুম রয়েছে। কোম্পানিটি বাংলাদেশ থেকে চামড়ার জুতা আমদানি শুরু করেছে।
আমেরিকা ছাড়াও বাংলাদেশি জুতা ইউরোপের জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, ইতালি, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্পেন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া ও বেলজিয়ামে যাচ্ছে। রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানও বাংলাদেশি জুতা পছন্দ করে।
বর্তমানে দেশে ১১০টি রপ্তানিমুখী কারখানা চামড়ার জুতা তৈরি করে। এর মধ্যে রয়েছেÑঅ্যাপেক্স, এফবি, পিকার্ড বাংলাদেশ, জেনি, আকিজ, আরএমএম, বেঙ্গল এবং বেয়ার; যাদের নিজস্ব ট্যানারি এবং চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কারখানা রয়েছে।
চামড়ার জুতার প্রধান উৎপাদক চীন, ভিয়েতনাম এবং ব্রাজিল ধীরে ধীরে এ খাত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ায় বাংলাদেশের চামড়া খাতের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
ঈদুল আজহার পর বাংলাদেশে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই হার ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। অর্থাৎ প্রায় ৮০ লাখ, যা আগের বছর ছিল ৯০ লক্ষাধিক। বড় সম্ভাবনা থাকার পরও রপ্তানিতে এবারও ধাক্কা খেতে হবে এ খাতের ব্যবসায়ীদের। হোঁচট খাওয়ার নেপথ্য কারণ হিসেবে সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে অকার্যকর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধন কেন্দ্রকে (সিইটিপি) চিহ্নিত করেছেন তারা।
ট্যানারি মালিকরা বলছেন, সিইটিপি এখন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ প্রকল্পে নতুন করে ৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হলে সম্ভাবনাময় খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এ ছাড়া কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে সরকারের নানা উদ্যোগ ইতিবাচক হতে পারে।
সারা দেশের মৌসুমি বিক্রেতারা লবণ মাখানো চামড়া সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন, অন্যদিকে ট্যানাররা ঢাকায় সরকার নির্ধারিত প্রতি বর্গফুট ৬০-৬৫ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে ৫৫-৬০ টাকায় কাঁচা চামড়া কিনছেন। চলতি সপ্তাহের শেষদিকে আরো চালান ঢাকায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বিটিএর তথ্যানুযায়ী, ১০ জুন পর্যন্ত সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে প্রায় ৫০ হাজার ছাগলের চামড়া এবং চার লক্ষাধিক লবণাক্ত গরুর চামড়া এসেছে।
এদিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিল্প মন্ত্রণালয় জানায়, সরকারের বিশেষ উদ্যোগে গত বছর এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলো আগের বছর দুই লাখ ৯ হাজার চামড়া সংরক্ষণ করেছিল, সেখানে এ বছর ৯ হাজার ৩৩০টি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক হিসাবে ১৩ লাখ আট হাজার চামড়া সংরক্ষণ করেছে। এ ছাড়া সারা দেশের আড়তদার, ব্যবসায়ী ও ট্যানারি মালিকরা স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় নিজস্ব অর্থায়নে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেছেন। ২০২৫ সালে পশুর চাহিদা অনুযায়ী চামড়া সংরক্ষণে লবণের প্রয়োজন ধরা হয়েছিল ৬১ হাজার ৭৪৮ টন। সে অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে চামড়া সংরক্ষণের জন্য লবণের মজুত করা হয়েছিল ৯৩ হাজার ২২৯ টন।
১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মতো চামড়া উৎপাদনের মধ্যবর্তী পর্যায়ে কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু বা ভেজা নীল চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়া সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে এ বছর কাঁচা চামড়ার দাম ১০০ শতাংশে পৌঁছেছে। ভেজা নীল চামড়া তৈরিতে লবণাক্ত কাঁচা চামড়া ব্যবহার করা হয়, যা আরো প্রক্রিয়াজাতকরণের আগে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
কিন্তু বর্তমানে মাত্র তিন ডজন ট্যানারি আর্থিকভাবে নিরাপদ, যার মধ্যে চারটি লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) থেকে সার্টিফিকেশন পেয়েছে। পরিবেশগত অসম্মতি এবং অপর্যাপ্ত সার্টিফিকেশনের কারণে এ খাতের প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে।
২০২১ সালের জুলাইয়ে অসম্পূর্ণ প্ল্যান্টটি ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট বর্জ্য শোধনাগার কোম্পানির কাছে দিয়ে যায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর থেকেই অনেকটা অকার্যকর অবস্থায় আছে সিইটিপি। অন্যান্য শর্ত পূরণ হলেও কার্যকর সিইটিপি না থাকায় মিলছে না সনদ। বর্তমানে বিশ্বে এলডব্লিউজি সনদ পাওয়া পরিবেশবান্ধব ট্যানারির সংখ্যা ৫৪৩টি, যার মধ্যে বাংলাদেশে রয়েছে মাত্র পাঁচটি।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ আমার দেশকে বলেন, আমাদের সমস্যা দুটি। প্রথমত তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর দ্বিতীয়ত কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। এটা যদি পরিবেশ অধিদপ্তরের মানদণ্ড অনুযায়ী না হয়, তাহলে এলডব্লিউজি সনদ কোনো ট্যানারি পাবে না। এ সনদের এক হাজার ৭১০ মার্কের মধ্যে এক হাজার ৪১০ মার্কই ট্যানারির ভেতরে। আমাদের ১৫-২০টি ট্যানারি এক হাজার ৪১০ মার্কের মধ্যে আছে। তারা এসব কমপ্লায়েন্স পূরণ করেছে।
তিনি বলেন, বাকি যে ৩০০ মার্ক সেটি তরল বর্জ্য ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়। এ মার্ক অর্জন করতে না পারলে কোনো ট্যানারি সার্টিফায়েড হবে না।
তিনি আরো বলেন, সিইটিপির নতুন ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। চীনের ঠিকাদাররা এটাকে ২৫ হাজার কিউবিট মিটার টেন্ডার নিয়ে ১৪ হাজার কিউবিট মিটার পানির ব্যবস্থাপনা করে কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে গেছে। এটার সঙ্গে সরকারের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন, এমনকি সরকারের উচ্চপর্যায় পর্যন্ত জড়িত ছিল। আইএমইডির মূল্যায়নে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি শেষ না করেই রাখা হয়েছে।
রপ্তানি সম্ভাবনার কারণে এবার চামড়ার দাম বেড়েছে। তবে ট্যানারি মালিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, যদি রপ্তানির বাইরে অনেক বেশি দাম নেয়, তাহলে দেশে কাঁচা চামড়ার অভাব দেখা দিতে পারে।
বিটিএর তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে ১৫০টিরও বেশি অতিরিক্ত চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কারখানা চালু রয়েছে। এর ১২৫টি সদস্য ট্যানারি স্থানীয়ভাবে সম্পূর্ণ মূল্য সংযোজনের জন্য সুবিধা তৈরিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
এ প্রসঙ্গে বিটিএ চেয়ারম্যান বলেন, কাঁচা চামড়া বাংলাদেশ থেকে কোনো দেশ নেবে কি না, তা আমার জানা নেই। এটি কোথাও পাঠাতে হলে ফ্রোজেন কনটেইনার থাকতে হয়। ফ্রোজেন কনটেইনার সুবিধা আছে কি না, সেটিও আমার জানা নেই। তবে আমার জানামতে, বিদেশি ক্রেতারা কাঁচা চামড়ার প্রতি আকৃষ্ট নন। আর কাঁচা চামড়া থেকে ওয়েট ব্লু পর্যন্ত দূষণের হার ৮০ শতাংশের বেশি। বিদেশিরা কাঁচা চামড়া নিয়ে পরিবেশদূষণ করতে চান না।
চীনও বাংলাদেশের কাঁচা চামড়া নিতে চায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, চীন সরকার বাংলাদেশের চামড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের চামড়ায় লাম্পি ডিজিজ আছে। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে আসার পর তিনি সরাসরি বলেন, বাংলাদেশের চামড়ায় এ ডিজিজ থাকায় আমরা তা নিতে পারব না। অন্যদিকে ওয়েট ব্লু চামড়া মালিকদের মাধ্যমে যাবে, সেটিও আমাদের শিল্পের জন্য ক্ষতিকর। কারণ ওয়েট ব্লু চামড়া যদি রপ্তানি হয়, তাহলে ভালো চামড়া চলে যাবে, খারাপ চামড়া রয়ে যাবে।
শাহীন আহমেদ বলেন, এ শিল্পের মূল্য সংযোজনের জন্য ১৯৯০ সালে এটির রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছিল। এখন আবার চালু হওয়ায় সেটি শিল্পের জন্য ক্ষতি। কারণ হাজার হাজার শ্রমিক কর্মসংস্থান হারাবে, আমাদের ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়বে। সব মিলিয়ে এ সিদ্ধান্ত চামড়া খাতের জন্য ভালো নয়। আমি মনে করি, সরকারের এ সিদ্ধান্ত কাঁচা চামড়ার দাম ধরে রাখার জন্য, চামড়া যাতে নষ্ট না হয়।
প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করে চামড়া এবং চামড়াজাত পণ্য বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি শিল্প হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এই পরিমাণ পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার আশা করছে।
জাপান, ইতালি, জার্মানি এবং ইংল্যান্ডসহ উন্নত বিশ্বে চামড়াশিল্পের যথেষ্ট সুনাম ও চাহিদা রয়েছে। এই সুনাম ও চাহিদা কাজে লাগিয়ে প্রতি বছর লাখ লাখ ডলার আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোপের বৃহত্তম খুচরা জুতা বিক্রেতা ডাচম্যানের তিন হাজার ৮০০টিরও বেশি শোরুম রয়েছে। কোম্পানিটি বাংলাদেশ থেকে চামড়ার জুতা আমদানি শুরু করেছে।
আমেরিকা ছাড়াও বাংলাদেশি জুতা ইউরোপের জার্মানি, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, ইতালি, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্পেন, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রিয়া ও বেলজিয়ামে যাচ্ছে। রাশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানও বাংলাদেশি জুতা পছন্দ করে।
বর্তমানে দেশে ১১০টি রপ্তানিমুখী কারখানা চামড়ার জুতা তৈরি করে। এর মধ্যে রয়েছেÑঅ্যাপেক্স, এফবি, পিকার্ড বাংলাদেশ, জেনি, আকিজ, আরএমএম, বেঙ্গল এবং বেয়ার; যাদের নিজস্ব ট্যানারি এবং চামড়া প্রক্রিয়াকরণ কারখানা রয়েছে।
চামড়ার জুতার প্রধান উৎপাদক চীন, ভিয়েতনাম এবং ব্রাজিল ধীরে ধীরে এ খাত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ায় বাংলাদেশের চামড়া খাতের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
৮ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে