রোহান রাজিব
গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংক নিয়ম ভেঙে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে নগদ টাকা তোলার সুযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি তারল্য সংকট মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয় এক্সিম ব্যাংককে।
এই অর্থ ব্যবহারে বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করে ভিন্ন খাতে অর্থ ছাড় করে ব্যাংকটি। এসব অনিয়মের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ট্রেজারি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যববস্থাপক জড়িত থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অনিয়ম পাওয়ার পরও কেন বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেয়নি, তা জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা আমার দেশকে বলেন, অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কোনো ব্যাংক নিয়মের লঙ্ঘন করলে বা কাউকে বিশেষ সুবিধা দিলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, এক্সিম ব্যাংকে আন্তঃব্যাংক মানি-মার্কেট হতে তারল্য সহায়তার বিপরীতে গ্যারান্টি দেওয়ার আগে একটি বিশেষ পরিদর্শন চালায় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিদর্শনকালে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে সীমাতিরিক্ত নগদ উত্তোলন সুবিধা দেওয়া, নিদের্শনা ভেঙে ডলার পারচেজ ও প্লেসমেন্ট, ধার ও মুনাফা পরিশোধ এবং ঋণ দেওয়ার মতো অনিয়ম পাওয়া যায়।
মজুমদারসহ চার প্রতিষ্ঠানকে সীমাতিরিক্ত নগদ উত্তোলন সুবিধা
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এক্সিম ব্যাংক সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ আরও চার প্রতিষ্ঠানকে সীমাতিরিক্ত নগদ উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩-২৫ আগস্ট পর্যন্ত এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংকটির গুলশান শাখা হতে নগদ চার কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। তবে এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সর্বোচ্চ উত্তোলনের সীমা ছিল এক লাখ টাকা।
এছাড়া ১১ আগস্ট ফ্লেমিংও এন্টারপ্রাইজ গুলশান শাখা হতে নগদ আট কোটি ৯৬ লাখ টাকা, হান্নান নিটওয়্যারস লিমিটেড মতিঝিল শাখা হতে সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা, পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড চার কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং ১৮-২২ আগস্ট পর্যন্ত আবেদা খানম গুলশান শাখা থেকে ৫৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।
এ সময় ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ উত্তোলনের সীমা ছিল দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নগদ টাকা উত্তোলনের যে সীমা ছিল, তার বাইরে অতিরিক্ত টাকা তোলার সুযোগ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায় ব্যাংকটি। নজরুল ইসলাম মজুমদার ছাড়া আরও যে চার প্রতিষ্ঠানকে সীমাতিরিক্ত নগদ টাকা তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
সূত্র জানায়, বর্তমান ব্যাংকের এমডি নজরুল ইসলাম মজুমদারের ঘনিষ্ঠ। তাই তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মের তোয়াক্কা না করে টাকা তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জেলে থাকা নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে এমডি দেখা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি ২০০৮ সাল থেকে বিএবির চেয়ারম্যান ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত তিনি। শেখ হাসিনার পতনের পর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে এক্সিম ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে নজরুল ইসলাম মজুমদার জেলে আছেন।
নির্দেশনা না মেনেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ঋণ
গত ৩ সেপ্টেম্বর বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংককে এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ধার দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শর্তসাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই অর্থ ধার দেয়। শুধু রফতানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে এই টাকা ব্যবহার করা যাবে। সে সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য অর্থ ব্যবহার করা যাবে।
এই অর্থ কোনোভাবেই নগদে দেওয়া যাবে না, বরং ব্যাংক হিসাব বা মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাবে টাকা দিতে হবে। তবে এসব নির্দেশনা না মেনে ব্যাংক নির্দেশনাবহির্ভূত খাতে অর্থ ছাড় করা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারের এক হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১৫৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি বাবদ পোশাক কারখানাগুলোকে ঋণ দেয়া হয়। যদিও এসব ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা ছিল, তা মানা হয়নি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকটির গুলশান শাখার গ্রাহক গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেডের অনুকূলে বিতরণকৃত দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকার মধ্যে এক কোটি ২০ লাখ টাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের উত্তরা শাখায় থাকা ব্রাভো অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারার লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে (০০০৬-১০৫০০০০৪০৩১) আরটিজিএসের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
এছাড়া ব্যাংকটির মতিঝিল শাখার গ্রাহক ওডেল অ্যাপারেলস লিমিটেডের অনুকূলে বিতরণ করা দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার পুরোটাই ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখায় রক্ষিত একই প্রতিষ্ঠানের হিসাবে (১৬৪১২০০০০৪৫০৯) আরটিজিএসের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
যদিও নির্দেশনা ছিল ব্যাংক এসব অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাবে টাকা দিতে হবে। তা না মেনে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাখা ব্যবস্থাপনাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি, যা ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল বলে মনে করা হয়। এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট শাখা পরিপালন না করে ঋণের অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যবহার করেছে, যার সঙ্গে শাখা ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা জড়িত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারের টাকায় ডলার পারচেজ ও প্লেসমেন্ট
শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হাজার কোটি টাকা ঋণের অর্থ দিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে ১৬০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ডলার ক্রয় করে এক্সিম ব্যাংক। গত ৯-১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ডলার ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুমোদন নিয়ে কেনা হয়, যা বাংলাদেশ ব্যাংক হতে এক হাজার কোটি টাকা ঋণের শর্তের পরিপন্থী কাজ।
নির্দেশনাবহির্ভূত খাতে অর্থ ব্যয়ের জন্য ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ট্রেজারি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না বলেও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
ধার ও মুনাফার টাকা পরিশোধ
তারল্য সংকটে থাকার কারণে এক্সিম ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করে। যদিও ব্যাংকটি এই অর্থ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ বাবদ দেওয়া এক হাজার কোটি টাকার তহবিল ব্যবহার করে, যা ঋণ দেওয়ার শর্তের পরিপন্থী।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৫-৮ সেপ্টেম্বর সময় বিভিন্ন ব্যাংক হতে ধারের ৩০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই অর্থ কোনোমতে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না। এক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাংকটি।
এ বিষয়ে জানতে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংক নিয়ম ভেঙে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারকে নগদ টাকা তোলার সুযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি তারল্য সংকট মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয় এক্সিম ব্যাংককে।
এই অর্থ ব্যবহারে বিধিনিষেধ দেওয়া হলেও তা উপেক্ষা করে ভিন্ন খাতে অর্থ ছাড় করে ব্যাংকটি। এসব অনিয়মের সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ট্রেজারি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যববস্থাপক জড়িত থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিদর্শনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অনিয়ম পাওয়ার পরও কেন বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেয়নি, তা জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা আমার দেশকে বলেন, অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কোনো ব্যাংক নিয়মের লঙ্ঘন করলে বা কাউকে বিশেষ সুবিধা দিলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, এক্সিম ব্যাংকে আন্তঃব্যাংক মানি-মার্কেট হতে তারল্য সহায়তার বিপরীতে গ্যারান্টি দেওয়ার আগে একটি বিশেষ পরিদর্শন চালায় বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিদর্শনকালে ব্যাংকটির বিরুদ্ধে সীমাতিরিক্ত নগদ উত্তোলন সুবিধা দেওয়া, নিদের্শনা ভেঙে ডলার পারচেজ ও প্লেসমেন্ট, ধার ও মুনাফা পরিশোধ এবং ঋণ দেওয়ার মতো অনিয়ম পাওয়া যায়।
মজুমদারসহ চার প্রতিষ্ঠানকে সীমাতিরিক্ত নগদ উত্তোলন সুবিধা
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যাংক থেকে নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক বিধিনিষেধ আরোপ করে। তবে এক্সিম ব্যাংক সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ আরও চার প্রতিষ্ঠানকে সীমাতিরিক্ত নগদ উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩-২৫ আগস্ট পর্যন্ত এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংকটির গুলশান শাখা হতে নগদ চার কোটি ৪০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। তবে এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সর্বোচ্চ উত্তোলনের সীমা ছিল এক লাখ টাকা।
এছাড়া ১১ আগস্ট ফ্লেমিংও এন্টারপ্রাইজ গুলশান শাখা হতে নগদ আট কোটি ৯৬ লাখ টাকা, হান্নান নিটওয়্যারস লিমিটেড মতিঝিল শাখা হতে সাত কোটি ৫০ লাখ টাকা, পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড চার কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং ১৮-২২ আগস্ট পর্যন্ত আবেদা খানম গুলশান শাখা থেকে ৫৭ লাখ টাকা উত্তোলন করেন।
এ সময় ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ উত্তোলনের সীমা ছিল দুই লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নগদ টাকা উত্তোলনের যে সীমা ছিল, তার বাইরে অতিরিক্ত টাকা তোলার সুযোগ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায় ব্যাংকটি। নজরুল ইসলাম মজুমদার ছাড়া আরও যে চার প্রতিষ্ঠানকে সীমাতিরিক্ত নগদ টাকা তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
সূত্র জানায়, বর্তমান ব্যাংকের এমডি নজরুল ইসলাম মজুমদারের ঘনিষ্ঠ। তাই তাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মের তোয়াক্কা না করে টাকা তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জেলে থাকা নজরুল ইসলাম মজুমদারের সঙ্গে এমডি দেখা করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নজরুল ইসলাম মজুমদার নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি ২০০৮ সাল থেকে বিএবির চেয়ারম্যান ছিলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবেও পরিচিত তিনি। শেখ হাসিনার পতনের পর নজরুল ইসলাম মজুমদারকে এক্সিম ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে নজরুল ইসলাম মজুমদার জেলে আছেন।
নির্দেশনা না মেনেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ঋণ
গত ৩ সেপ্টেম্বর বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংককে এক হাজার কোটি টাকার বিশেষ ধার দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শর্তসাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই অর্থ ধার দেয়। শুধু রফতানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে এই টাকা ব্যবহার করা যাবে। সে সঙ্গে শ্রমিকদের মজুরি ও বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য অর্থ ব্যবহার করা যাবে।
এই অর্থ কোনোভাবেই নগদে দেওয়া যাবে না, বরং ব্যাংক হিসাব বা মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাবে টাকা দিতে হবে। তবে এসব নির্দেশনা না মেনে ব্যাংক নির্দেশনাবহির্ভূত খাতে অর্থ ছাড় করা হয়।
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের ধারের এক হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১৫৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা পোশাকশ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি বাবদ পোশাক কারখানাগুলোকে ঋণ দেয়া হয়। যদিও এসব ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে নির্দেশনা ছিল, তা মানা হয়নি।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যাংকটির গুলশান শাখার গ্রাহক গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেজ লিমিটেডের অনুকূলে বিতরণকৃত দুই কোটি ৮৬ লাখ টাকার মধ্যে এক কোটি ২০ লাখ টাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের উত্তরা শাখায় থাকা ব্রাভো অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারার লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে (০০০৬-১০৫০০০০৪০৩১) আরটিজিএসের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
এছাড়া ব্যাংকটির মতিঝিল শাখার গ্রাহক ওডেল অ্যাপারেলস লিমিটেডের অনুকূলে বিতরণ করা দুই কোটি ৫০ লাখ টাকার পুরোটাই ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মিরপুর শাখায় রক্ষিত একই প্রতিষ্ঠানের হিসাবে (১৬৪১২০০০০৪৫০৯) আরটিজিএসের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
যদিও নির্দেশনা ছিল ব্যাংক এসব অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইলে আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাবে টাকা দিতে হবে। তা না মেনে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শাখা ব্যবস্থাপনাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়নি, যা ঋণ অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল বলে মনে করা হয়। এছাড়া প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট শাখা পরিপালন না করে ঋণের অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যবহার করেছে, যার সঙ্গে শাখা ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা জড়িত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারের টাকায় ডলার পারচেজ ও প্লেসমেন্ট
শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হাজার কোটি টাকা ঋণের অর্থ দিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে ১৬০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ডলার ক্রয় করে এক্সিম ব্যাংক। গত ৯-১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ডলার ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অনুমোদন নিয়ে কেনা হয়, যা বাংলাদেশ ব্যাংক হতে এক হাজার কোটি টাকা ঋণের শর্তের পরিপন্থী কাজ।
নির্দেশনাবহির্ভূত খাতে অর্থ ব্যয়ের জন্য ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ট্রেজারি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দায়দায়িত্ব এড়াতে পারেন না বলেও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়।
ধার ও মুনাফার টাকা পরিশোধ
তারল্য সংকটে থাকার কারণে এক্সিম ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করে। যদিও ব্যাংকটি এই অর্থ পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ বাবদ দেওয়া এক হাজার কোটি টাকার তহবিল ব্যবহার করে, যা ঋণ দেওয়ার শর্তের পরিপন্থী।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৫-৮ সেপ্টেম্বর সময় বিভিন্ন ব্যাংক হতে ধারের ৩০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এই অর্থ কোনোমতে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না। এক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অমান্য করে ব্যাংকটি।
এ বিষয়ে জানতে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১১ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে