বাংলাদেশের রাজনীতির ধ্রুবতারা সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের আবহ বিরাজ করছে দেশজুড়ে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হয় তার জানাজার নামাজ। জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন তিনি। এদিন বাদ জোহর মূল জানাজার সঙ্গে মিল রেখে একই সময়ে গায়েবানা জানাজা ও মোনাজাতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লাখ লাখ মানুষ।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, চাঁদপুরে বেগম জিয়ার গায়েবানা জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছে। বুধবার বাদ জোহর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে নেমে আসে মানুষের ঢল। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অশ্রুসিক্ত নয়নে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নেন। এক পর্যায়ে জানাজাস্থল আবেগঘন পরিবেশে পরিণত হয়। এ যেন শোক ও ভালোবাসার মিলনমেলা। তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা জানাজায় অংশ নেন।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলিমুল্লাহ সেলিম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা বিল্লাল হোসাইন, সেক্রেটারি অ্যাড. শাহজাহান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসাইন হাওলাদার, গণফোরাম সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিম আকবর, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কাজি রাসেল, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি সোহেল রুশদী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ। এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা বক্তব্য দেন। গায়েবানা জানাজা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের জেলা সভাপতি মাওলানা জসিম উদ্দিন। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ অলিউল্লাহ খান।
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখলা চা-বাগান, ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর ও কানাইদাসী গ্রামে বিএনপি, যুবদল এবং অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার দুপুর ২টার পর কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখলা চা-বাগান মসজিদ প্রাঙ্গণে এবং ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর ও কানাইদাসী গ্রামে গায়েবানা জানাজা হয়েছে। জানাজায় শিশু, বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মানুষ উপস্থিত ছিল। জানাজায় অংশগ্রহণকারী অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকে বলেন, তারা ঢাকায় যেতে না পারলেও এখানে জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পেরে গর্বিত। জানাজা শেষে মোনাজাত পরিচালনা করেন পাত্রখলা চা-বাগান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল আজিজ। এ সময় ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ইউনুস আলী, হাবিবুর রহমান, যুবদলের আহ্বায়ক হারুন রশিদ, সদস্য সচিব আতাউর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আরো ছিলেন ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুরে বিএনপি নেতা সবুজুর রহমান, যুবদল নেতা মিজান মিয়া, ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলামসহ অন্যরা। ইসলামপুরের কানাইদাসীতে বিএনপি নেতা জসিম মিয়া, নেকবর আলীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, খালেদা জিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনায় বাগেরহাট জেলা সদরে সাধারণ মানুষের উদ্যোগে সব মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপরদিকে মোরেলগঞ্জের জিউধরা ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে মাদরাসা বাজারে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা কেএম মহিউদ্দিন খান রিপনসহ উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জিএস রিপন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি নজরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আলম হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সজল শেখ প্রমুখ। অন্যদিকে পুরো জেলাজুড়ে সাধারণ মানুষের উদ্যোগে সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ ছিল। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে টানানো হয়েছে কালো পতাকা।
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি জানান, রাজশাহীর তানোর পৌর শহরের গোল্লাপাড়া বাজার ফুটবল মাঠে বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে অনুষ্ঠিত জানাজায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীসহ সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতা এবং বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। জানাজা শেষে খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সদস্য সচিব আব্দুল মালেকের পরিচালনায় এ সময় বক্তব্য দেন তানোর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখেরুজ্জামান হান্নান, ড্যাব নেতা ডা. মিজানুর রহমান, তানোর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা আলমগীর হোসেন, পাঁচন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মুর্তজা প্রমুখ।
ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা বুধবার বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় ইমামতি করেন মাওলানা নাহিদুল ইসলাম। বক্তব্য দেন ভেড়ামারা পৌর বিএনপির সভাপতি আবু দাউদ। জানাজায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির সাবেক চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সোনারগাঁয়ে বিএনপিসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান শোক এবং দোয়ার আয়োজন করে। এদিন সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে উপজেলার মেঘনা বিএনপি কার্যালয়ে কোরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। এছাড়া জিয়ানগর জমিরিয়া শামসুল উলুম মাদরাসা ও মাদরাসাতুন নূর আল ইসলামিয়া, আলহেরা ইসলামি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কোরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করে।
সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নোয়াখালীতে রেখে গেছেন নানা স্মৃতিচিহ্ন। তার মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান জেলাবাসী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই মহীয়সী নারীর প্রয়াণে শোকাহত দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও।
এদিকে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারা দেশের ন্যায় নোয়াখালীতেও পালিত হচ্ছে রাষ্ট্রীয় শোক। শোকাহত জেলাবাসী। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে নোয়াখালী প্রেস ক্লাব, চৌমুহনী প্রেস ক্লাব, নোয়াখালী টিভি সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন।
দৌলতখান (ভোলা) প্রতিনিধি জানান, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোকে নিস্তব্ধ দৌলতখান শহর। বুধবার সকাল থেকেই দৌলতখান পৌর শহরে দোকানপাট ছিল বন্ধ। অফিস-আদালত, বিভিন্ন সংস্থা ও দোকানপাটে উড়ছে কালো পতাকাসহ অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শহরে তেমন লোকজনের দেখা মেলেনি। শহরের বিভিন্ন স্থানে উপজেলা বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে মসজিদে মসজিদে সাধারণ মুসল্লিরা এবং বিভিন্ন মাদরাসায় খালেদা জিয়া স্মরণে দোয়া-মোনাজাত করা হয়। উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে কোরআন খতম, দুরুদ ও বিভিন্ন দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। দৌলতখানের ব্যবসায়ীরা খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোক জানিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং দোকানপাট বন্ধ রেখেছেন।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে ঈশ্বরদীতে অর্ধবেলা বাজার বন্ধ রেখেছে ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতি। বুধবার সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন তারা।
চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজাকে ঘিরে সৃষ্টি হয় অভূতপূর্ব জনসমাগম। দলীয় সীমারেখা ছাপিয়ে সর্বস্তরের মানুষের ঢলে পুরো উপজেলার প্রাণকেন্দ্র কেরানীহাট এলাকা কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
বুধবার দুপুর থেকেই কেরানীহাট, আশপাশের এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ জড়ো হতে শুরু করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে মানবস্রোতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো কেরানীহাট চত্বর।
গায়েবানা জানাজায় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর পাশাপাশি জামায়াত এবং ইসলামী ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। জানাজায় ইমামতি করেন সাতকানিয়া মডেল মসজিদের খতিব মিজানুর রহমান। শেষে খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা বুধবার বিকালে বেড়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেড়া পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে বেড়া পৌর বিএনপি কার্যালয় সংলগ্ন ফকির রাইস মিল চত্বরে সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ জমায়েত হয়ে গায়েবানা জানাজায় অংশ নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি ফজলুর রহমান ফকির, সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন ইকবাল, উপজেলা জামায়াতের আমির আতাউর রহমানসহ বিভিন্ন দলের নেতা। জানাজায় ইমামতি করেন মাওলানা রেজাউল করিম। পরে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি জানান, ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সংহতি প্রকাশ করে এক বিশেষ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের উত্তর চন্ডিবরদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ১নং ওয়ার্ড বিএনপিসহ এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং স্থানীয় সাধারণ জনগণের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও শোক জ্ঞাপন করেন বল্লভদী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা শাজাহান শরিফ, বাবলু মোল্লা, লিটন মাতুব্বর, ওহিদ ইসলাম প্রমুখ। এছাড়াও ইউনিয়ন ওলামা দল নেতা মিজান মোল্লাসহ স্থানীয় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী এবং বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার বাদ আসর ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শহরের খায়রুজ্জামান বাবু বাস টার্মিনালে বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টুর উদ্যোগে নতুন হাট মোড় গোল চত্বরে, দাশুড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এবং দিয়াড় বাঘইল ঈদগাহ মাঠসহ বিভিন্ন এলাকায় গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এদিকে শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে বিএনপি নেতা রেজাউল করিম শাহিনের উদ্যোগে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তার আত্মার শান্তি কামনা করে লালপুর উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে দোয়া শেষে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নাটোর-১ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য ও নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলের আহ্বানে বাদ জোহর একযোগে ২টা ১৫ মিনিটে লালপুর বাজার জামে মসজিদ, গৌরীপুর, দুয়ারিয়া, বিলমাড়িয়া, করিমপুর, ওয়ালিয়া, ভেল্লাবাড়িয়া, কদিমচিলানসহ উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে দোয়া শেষে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
সে সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন, দলীয় নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও গায়েবানা জানাজায় দলীয় নেতাকর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং বিপুলসংখ্যক মুসল্লিসহ সর্বস্তরের মানুষ জানাজায় অংশ নেন।
নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশনায় চারটি ট্রেনে করে নরসিংদী থেকে এবং শীতকে উপেক্ষা করে হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ঢাকায় আসেন। ভোর ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চারটি ট্রেন ও একাধিক বাস ভাড়া করে ঢাকায় পৌঁছান নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন গণতন্ত্রের মা বেগম জিয়ার মৃত্যুতে তারা ব্যথিত। তাদের নেত্রীকে শেষবারের মতো বিদায় জানাতে তারা ঢাকায় এসেছেন। এ সময় নরসিংদী শহর বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হোসেন বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের নির্দেশনায় খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে চারটি ট্রেনে করে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মনজুর এলাহীর নির্দেশনায় একাধিক বাসে করে নেতাকর্মীরা ঢাকায় পৌঁছান।
জামালপুর প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসেন প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী। গত মঙ্গলবার থেকে জামালপুরের সাতটি উপজেলা থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেন। তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে জামালপুর জেলা থেকে প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী বেগম জিয়ার জানাজায় অংশ নেন বলে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জামালপুর টাউন রেলওয়ে জংশন স্টেশন ছাড়াও অন্যান্য রেলস্টেশন থেকে আন্তঃনগর তিস্তা এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, জামালপুর এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ও বেসরকারি দুটি কমিউটার ট্রেনে করে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ ঢাকায় আসেন। জামালপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও পৌর বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার বাসে করেও বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসেন। শহরের স্টেশন রোডের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে ও অন্যান্য পয়েন্ট থেকে বুধবার ভোররাতে বেশ কিছু বাসে করে ঢাকায় আসেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
ইসলামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নবাব জানান, দেশনেত্রীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তার জানাজায় অংশ নিতে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নেতাকর্মীরা ট্রেন ও বাসযোগে ঢাকায় এসেছি। ইসলামপুর উপজেলা থেকে প্রায় ছয় হাজার নেতাকর্মী জানাজায় অংশ নেন। জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, সারা জেলা থেকে বাস, মাইক্রোবাস ও ট্রেনে করে প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী বেগম জিয়ার জানাজায় অংশ নিয়েছি। এছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে কোরআন খতম, দোয়া মাহফিল, শোক বই খোলা, কালো ব্যাজ ধারণসহ সাত দিনব্যাপী শোকাবহ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা। বুধবার বাদ যোহর কোটবাজার স্টেশন চত্বরে এবং বিকেল আড়াইটায় উখিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজাকে কেন্দ্র করে উভয়স্থানেই নেমে আসে জনস্রোত। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাজারো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ, পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রিয় নেত্রীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। জানাজাস্থল পরিণত হয় এক আবেগঘন পরিবেশে—শোক ও ভালোবাসার মিলনমেলায়।
তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

