আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

দিপু দাস হত্যা মামলায় আরো দুই আসামি গ্রেপ্তার

ময়মনসিংহ অফিস

দিপু দাস হত্যা মামলায় আরো দুই আসামি গ্রেপ্তার
ছবি: আমার দেশ।

ময়মনসিংহের ভালুকায় পোশাক কারখানার শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে (২৭) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ আরো দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লাশ গাছে ঝুলিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনার নেতৃত্বদানকারী নিবির ইসলাম অনিক (২০) এবং দিপুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে পালানো মো. এরশাদ (২৭)। সর্বশেষ এই দুইজনের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে এই মামলায় মোট গ্রেপ্তারকৃত আসামির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। এদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মোবাইল ফোনে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী নিবির ইসলাম অনিককে শনাক্ত করা হয়। প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন চেরাগআলী এলাকা থেকে নিবির ইসলাম অনিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অনিক ময়মনসিংহের ত্রিশালের ধানীখোলা গ্রামের মো. কালিমুল্লাহর ছেলে। অনিক ফেব্রুয়ারি ২০২৫ থেকে পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানায় নিটিং অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, দিপু হত্যা মামলার ঘটনায় দিপুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ঘটনার সময় নিহত দিপুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি অভিযুক্ত মো. এরশাদ নিজের হেফাজতে নিয়ে নেন। পরবর্তীতে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভালুকার ডুবাইল্লাপাড়া থেকে এরশাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার হেফাজতে থাকা নিহত দিপুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দতালিকাভুক্ত করে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত এরশাদের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার নেহারা জয়পুর গ্রামে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদ ঘটনার সময় সরাসরি উপস্থিত থেকে হত্যাকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ আরো জানায়, দিপু হত্যাকাণ্ডে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া ২০ জনের মধ্যে ১৮ জনকে আদালত পুলিশ রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। এদের মধ্যে ১২ জনকে রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাঁচজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ডুবালিয়াপাড়া এলাকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দীপু চন্দ্র দাসকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে কারখানা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক বিভাজকের একটি গাছে মরদেহ ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

নিহত দীপু চন্দ্র দাস ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই অপু চন্দ্র দাস অজ্ঞাতপরিচয় ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে ভালুকা থানায় মামলা দায়ের করেন।

ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের লক্ষ্যে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন