আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

হৃদয়ের লাশ কোথায়, জানতে চান স্বজনরা

উপজেলা প্রতিনিধি, গোপালপুর (টাঙ্গাইল)
হৃদয়ের লাশ কোথায়, জানতে চান স্বজনরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ৫ আগস্ট বিকালে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে বিজয় মিছিলে অংশ নেন হৃদয়। তারপর থেকে নিখোঁজ তিনি। বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলেনি।

বিজ্ঞাপন

হৃদয় গোপালপুর উপজেলার আলমনগর ইউনিয়নের মধ্যপাড়ার ভ্যানচালক লাল মিয়ার একমাত্র ছেলে। গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ডিগ্রি কলেজে এইচএসসির ছাত্র (২০) ছিলেন হৃদয়।

পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় পড়াশোনার পাশাপাশি গাজীপুরের কোনাবাড়িতে অটোরিকশা চালাতেন তিনি। তার বড় দুই বোন রয়েছে।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওই দিন বিকালে কাশিমপুর রোডের শরীফ জেনারেল হাসপাতাল গেট সংলগ্ন স্থানে ১০-১২ জন পুলিশ একজনকে ঘেরাও করে বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি চালায়। পরে তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়।

স্বজনদের দাবি, পরনের পোশাক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় নিশ্চিত গুলিবিদ্ধ ছেলেটি ছিল হৃদয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজির করেও তার সন্ধান মেলেনি।

হৃদয়ের ভগ্নিপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমরা দুইজন এক রুম ভাড়া নিয়ে থাকতাম। মিছিলে গুলির শব্দ শুনে আমি কোনাবাড়ি মেট্রো থানা সংলগ্ন একটি বাসায় আশ্রয় নিই। সেখান থেকে দেখতে পাই চারজন পুলিশ গুলিবিদ্ধ একজনকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে যাচ্ছে। পরে থানার সামনে একটি টেবিলের আড়ালে লুকিয়ে রাখে তাকে। গুলিবিদ্ধ ছেলেটি দেখতে হৃদয়ের মতো মনে হলেও গুলির ভয়ে কাছে যেতে পারিনি। পরে শুনি রাত দুইটায় সব পুলিশ থানা থেকে চলে গেছে। এরপর থানায় গিয়ে হৃদয়ের লুঙ্গি পাই। বিভিন্ন হাসপাতাল ও মর্গে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

আলমনগর ইউপির সাবেক সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন, "ঘটনাস্থলের একটু দূরেই আমার দোকান। গুলির পর প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের বর্ণনায় নিশ্চিত হয়েছি সেটি হৃদয়।

অটোরিকশা গ্যারেজের মালিক হাফিজুর রহমান তপন জানান, "হৃদয় মিছিলে ছিল। পরে আমার গ্যারেজ থেকে বাসায় ফেরার সময় পুলিশের ধাওয়ায় দুই বিল্ডিংয়ের মাঝে আশ্রয় নেয়। পুলিশ সেখান থেকে তাকে ধরে এনে গুলি করে। পরে আমার গ্যারেজের সামনে দিয়ে তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। অনেকেই সেই দৃশ্য ভিডিও করেন।

হৃদয়ের মা রেহেনা বেগম ‘আমার দেশ’-কে বলেন, সরকারি ও বেসরকারিভাবে কোনো আর্থিক সহযোগিতা পাননি আমরা। হৃদয় ছিল পরিবারের একমাত্র আয় করার মানুষ। তাকে হারিয়ে আমরা দিশেহারা।

আলমনগর ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামীম হোসেন বলেন, ভবিষ্যতে সরকারি অনুদান এলে তাদের দেয়া হবে। তাদের কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

আলমনগর দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ভাতা ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও পঙ্গুদের দেয়ার দাবি জানান।

বড় বোন জিয়াসমিন হৃদয়ের লাশের হদিস পরিবারকে দেয়ার দাবি জানান সরকারের কাছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন