• facebook
  • fb_group
  • twitter
  • tiktok
  • whatsapp
  • pinterest
  • youtube
  • linkedin
  • instagram
  • google
রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
বাণিজ্য
সারা দেশ
বিশ্ব
খেলা
আইন-আদালত
ধর্ম ও ইসলাম
বিনোদন
ফিচার
আমার দেশ পরিবার
ইপেপার
আমার দেশযোগাযোগশর্তাবলি ও নীতিমালাগোপনীয়তা নীতিডিএমসিএ
facebookfb_grouptwittertiktokwhatsapppinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার দেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক, মাহমুদুর রহমান 
মাহমুদুর রহমান কর্তৃক ঢাকা ট্রেড সেন্টার (৮ম ফ্লোর), ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫ থেকে প্রকাশিত এবং আমার দেশ পাবলিকেশন লিমিটেড প্রেস, ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ: ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।ফোন: ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল: info@dailyamardesh.comবার্তা: ফোন: ০৯৬৬৬-৭৪৭৪০০। ই-মেইল: news@dailyamardesh.comবিজ্ঞাপন: ফোন: +৮৮০-১৭১৫-০২৫৪৩৪ । ই-মেইল: ad@dailyamardesh.comসার্কুলেশন: ফোন: +৮৮০-০১৮১৯-৮৭৮৬৮৭ । ই-মেইল: circulation@dailyamardesh.com
ওয়েব মেইল
কনভার্টারআর্কাইভবিজ্ঞাপনসাইটম্যাপ
> সারা দেশ

বাবলা হত্যার দায় স্বীকার করে যা বললেন সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৩: ৩০
logo
বাবলা হত্যার দায় স্বীকার করে যা বললেন সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৩: ৩০

চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্রের জোগান, খুনের নির্দেশ-সবই নাকি তার হাত দিয়ে চলে। বহু মামলার পলাতক আসামী মো. সাজ্জাদ আলী খান ওরফে বড় সাজ্জাদ নতুন একটি কথোপকথনে নিজেকে শুধু ‘চট্টগ্রামের সবচেয়ে শক্তিশালী সন্ত্রাসী’ হিসেবেই তুলে ধরেননি, বরং সরওয়ার হোসেন বাবলা হত্যাকাণ্ডের দায়ও স্বীকার করেছেন। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিওটি চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।

চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি গডফাদারের আধিপত্যে চলে আসছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়ঙ্কর নাম মো. সাজ্জাদ আলী খান। যে শহরের অপরাধচক্রে পরিচিত ‘বড় সাজ্জাদ’ নামে। বহু খুন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হামলার পরও তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশে পলাতক। কিন্তু পালিয়ে থাকলেও তার প্রভাব, ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ কমেনি।বরং সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেড়েছে।

ফাঁস হওয়া অডিও নিয়ে কয়েকজ নিরাপত্তা বিশ্লেষকের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রতিটি কথার পেছনের কথা ও সামনের সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

অডিওর শুরুতেই বড় সাজ্জাদকে শোনা যায়, ৫ আগস্টের পর সবচেয়ে বড় কালেকশন (অস্ত্র) আমার। চট্টগ্রামে এককভাবে আমার মতে বড় কালেকশন কারো নেই।’ শহরের অপরাধ জগতে অস্ত্রের আধিপত্য মানেই নিয়ন্ত্রণ, আর সেই নিয়ন্ত্রণ তার হাতেই আছে-এটাই যেন বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।

কথোপকথনে আরও বলেন, তার সামনে ‘বাধা’ হিসেবে যে দু-একজন আছে, তাদের সরিয়ে ফেললে পুরো চট্টগ্রাম শহর তার প্রভাবাধীন হয়ে যাবে। সরাসরি বলেন, ‘সামনে বড় বাধা সরোয়ার। তাকে সেটিং (খুন) করলে চট্টগ্রাম শহর আমাদের হয়ে যাবে।’ একজন পলাতক আসামির মুখে এমন নির্দ্বিধা শক্তি-প্রদর্শন নিরাপত্তা বিশ্লেষকদেরও বিস্মিত করেছে।

অডিওটি শুধু অস্ত্রের কথাই নয়, সাম্প্রতিক আলোচিত খুন-সরওয়ার হোসেন বাবলা হত্যাকাণ্ড-নিয়েও বড় সাজ্জাদের সরাসরি স্বীকারোক্তির মতো। কথোপকথনে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেবেলে ডিটারমাইন্ড ছিল বলে কাজটা হয়েছে। ১০ লাখ, ২০ লাখ, ৪০–৫০ লাখ দিয়েও যে কাজ হয়নি, সেটা এমনিতেই হয়ে গেছে।’ শহরের রাজনৈতিক ও অপরাধচক্রে বাবলা ছিলেন একটি প্রভাবশালী নাম। তিনি একসময় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন। সম্প্রতি দুই পক্ষের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর থেকেই বাবলা হত্যার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে সাজ্জাদ-গোষ্ঠীর দিকে যায়।

নতুন অডিওতে বড় সাজ্জাদ নিজেই ঘটনা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘বাবলার ঘাড় থেকে বের হয়ে গুলি এরশাদ উল্লাহর গায়ে লেগেছে। আমি তাকে মানা করেছিলাম।’ তাঁর এই বক্তব্যে বোঝা যায়, হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সবই তাঁর ছেলেবেলা নামে পরিচিত ঘনিষ্ঠ সহযোগীর নেতৃত্বে হয়েছে।

অডিওতে আরও স্পষ্ট হয় বড় সাজ্জাদের নির্মম মানসিকতা ও সিদ্ধান্ত কতটা চূড়ান্ত ছিল। তিনি বলেন—‘ওই জায়গায় খালেদা জিয়া থাকলেও, তার সামনেই বাবলাকে মেরে ফেলা হতো।’ একজন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য শুধু হত্যার নির্মমতা নয়, বরং চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার আধিপত্য কতটা গভীর তা নতুন করে দেখিয়ে দেয়। তার পরের অংশে তিনি দাবি করেন, বাবলাকে খুনের জন্য ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অফার দেওয়া হয়েছিল। ‘এখন এমনি এমনি হয়ে গেছে’-বলার মাধ্যমে বোঝাতে চান, তিনি অর্থ দিয়ে নয়, প্রভাব ও নির্দেশ দিয়েই কাজটি করিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।

অডিওটি যাঁর সঙ্গে বড় সাজ্জাদের কথোপকথন, তিনি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. ইকরাম। তিনি ‘আমার দেশ’কে অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ইকরাম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বড় সাজ্জাদ ও তার বাহিনীর হুমকি তিনি পাচ্ছেন। কয়েক বছর ধরে তাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও অস্ত্রের বিষয় পুলিশকে জানানোয় তার ওপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সম্প্রতি ছোট সাজ্জাদকে ঢাকার একটি শপিং মলে দেখে আটকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরপরই তার ওপর চাপ আরও বাড়ে। ইকরামকে বলা হয়, মামলা তুলে না নিলে তাঁকে খুন করা হবে।

বড় সাজ্জাদের বাহিনী বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয়। বাহিনীতে প্রায় ৫০ জন সন্ত্রাসী আছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। এই দলটি বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, আকবর শাহ, রাউজানসহ একাধিক এলাকায় সন্ত্রাস, খুন ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। সর্বশেষ ৫ নভেম্বর বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে দিবালোকে সরওয়ার হোসেন বাবলাকে ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনাতেও বড় সাজ্জাদের নাম উঠে এসেছে। এখন নতুন অডিও প্রকাশের পর হত্যাকাণ্ডের পেছনে তাঁর ‘সরাসরি নির্দেশ’ ছিল-এটাই আরও নিশ্চিত হচ্ছে।

অডিও ফাঁস হওয়ার পর চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সাধারণ মানুষ-সবাইয়ের আলোচনা এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। একজন পলাতক, বহু মামলার আসামি, বিদেশে অবস্থানরত সন্ত্রাসী যদি এভাবে প্রকাশ্যে নিজের অপরাধের কথা বলতে পারেন এবং তবুও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরতে না পারে-তাহলে শহরের নিরাপত্তা কোথায় দাঁড়িয়েছে? অনেকের প্রশ্ন, এতগুলো খুন, অস্ত্রের লেনদেন, প্রকাশ্যে ভয়ভীতি-সবই যখন খোলাখুলিভাবে ঘটছে, তখন কতটা কার্যকর পুলিশি নজরদারি আছে চট্টগ্রামে?

চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে বড় সাজ্জাদের অবস্থান ও প্রভাব এতটাই গভীর যে তার একটি নির্দেশেই খুন সংঘটিত হচ্ছে, আবার সেই হত্যাকাণ্ডের অডিও–স্বীকারোক্তি দেশজুড়ে ভাইরাল হলেও কোনো অভিযান বা তৎপরতার দৃশ্য দেখা যায় না। সরওয়ার বাবলার খুনকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, অডিও ফাঁস হওয়ার পর তা আরও জটিল আকার নিয়েছে। বিশ্লেষকদের দাবি, বড় সাজ্জাদ ও তার বাহিনীকে আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত চট্টগ্রামে রাজনৈতিক সহিংসতা ও খুন–সন্ত্রাস থামবে না।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মাহমুদুর রহমান কর্তৃক প্রকাশিত এবং আল-ফালাহ প্রিন্টিং প্রেস, ৪২৩, এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭ থেকে এবং অস্থায়ীভাবে মিডিয়া প্রিন্টার্স লি. ৪৪৬/এইচ, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ : ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম এভিণিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। পিএবিএক্স : ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল : info@dailyamardesh.com

চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্রের জোগান, খুনের নির্দেশ-সবই নাকি তার হাত দিয়ে চলে। বহু মামলার পলাতক আসামী মো. সাজ্জাদ আলী খান ওরফে বড় সাজ্জাদ নতুন একটি কথোপকথনে নিজেকে শুধু ‘চট্টগ্রামের সবচেয়ে শক্তিশালী সন্ত্রাসী’ হিসেবেই তুলে ধরেননি, বরং সরওয়ার হোসেন বাবলা হত্যাকাণ্ডের দায়ও স্বীকার করেছেন। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিওটি চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ড দীর্ঘদিন ধরেই কয়েকটি গডফাদারের আধিপত্যে চলে আসছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও ভয়ঙ্কর নাম মো. সাজ্জাদ আলী খান। যে শহরের অপরাধচক্রে পরিচিত ‘বড় সাজ্জাদ’ নামে। বহু খুন, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী হামলার পরও তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশে পলাতক। কিন্তু পালিয়ে থাকলেও তার প্রভাব, ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণ কমেনি।বরং সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেড়েছে।

ফাঁস হওয়া অডিও নিয়ে কয়েকজ নিরাপত্তা বিশ্লেষকের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে। প্রতিটি কথার পেছনের কথা ও সামনের সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

অডিওর শুরুতেই বড় সাজ্জাদকে শোনা যায়, ৫ আগস্টের পর সবচেয়ে বড় কালেকশন (অস্ত্র) আমার। চট্টগ্রামে এককভাবে আমার মতে বড় কালেকশন কারো নেই।’ শহরের অপরাধ জগতে অস্ত্রের আধিপত্য মানেই নিয়ন্ত্রণ, আর সেই নিয়ন্ত্রণ তার হাতেই আছে-এটাই যেন বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।

কথোপকথনে আরও বলেন, তার সামনে ‘বাধা’ হিসেবে যে দু-একজন আছে, তাদের সরিয়ে ফেললে পুরো চট্টগ্রাম শহর তার প্রভাবাধীন হয়ে যাবে। সরাসরি বলেন, ‘সামনে বড় বাধা সরোয়ার। তাকে সেটিং (খুন) করলে চট্টগ্রাম শহর আমাদের হয়ে যাবে।’ একজন পলাতক আসামির মুখে এমন নির্দ্বিধা শক্তি-প্রদর্শন নিরাপত্তা বিশ্লেষকদেরও বিস্মিত করেছে।

অডিওটি শুধু অস্ত্রের কথাই নয়, সাম্প্রতিক আলোচিত খুন-সরওয়ার হোসেন বাবলা হত্যাকাণ্ড-নিয়েও বড় সাজ্জাদের সরাসরি স্বীকারোক্তির মতো। কথোপকথনে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেবেলে ডিটারমাইন্ড ছিল বলে কাজটা হয়েছে। ১০ লাখ, ২০ লাখ, ৪০–৫০ লাখ দিয়েও যে কাজ হয়নি, সেটা এমনিতেই হয়ে গেছে।’ শহরের রাজনৈতিক ও অপরাধচক্রে বাবলা ছিলেন একটি প্রভাবশালী নাম। তিনি একসময় বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন। সম্প্রতি দুই পক্ষের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর থেকেই বাবলা হত্যার বিষয়টি পরিষ্কারভাবে সাজ্জাদ-গোষ্ঠীর দিকে যায়।

নতুন অডিওতে বড় সাজ্জাদ নিজেই ঘটনা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘বাবলার ঘাড় থেকে বের হয়ে গুলি এরশাদ উল্লাহর গায়ে লেগেছে। আমি তাকে মানা করেছিলাম।’ তাঁর এই বক্তব্যে বোঝা যায়, হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন সবই তাঁর ছেলেবেলা নামে পরিচিত ঘনিষ্ঠ সহযোগীর নেতৃত্বে হয়েছে।

অডিওতে আরও স্পষ্ট হয় বড় সাজ্জাদের নির্মম মানসিকতা ও সিদ্ধান্ত কতটা চূড়ান্ত ছিল। তিনি বলেন—‘ওই জায়গায় খালেদা জিয়া থাকলেও, তার সামনেই বাবলাকে মেরে ফেলা হতো।’ একজন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য শুধু হত্যার নির্মমতা নয়, বরং চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার আধিপত্য কতটা গভীর তা নতুন করে দেখিয়ে দেয়। তার পরের অংশে তিনি দাবি করেন, বাবলাকে খুনের জন্য ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অফার দেওয়া হয়েছিল। ‘এখন এমনি এমনি হয়ে গেছে’-বলার মাধ্যমে বোঝাতে চান, তিনি অর্থ দিয়ে নয়, প্রভাব ও নির্দেশ দিয়েই কাজটি করিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।

অডিওটি যাঁর সঙ্গে বড় সাজ্জাদের কথোপকথন, তিনি চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. ইকরাম। তিনি ‘আমার দেশ’কে অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ইকরাম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বড় সাজ্জাদ ও তার বাহিনীর হুমকি তিনি পাচ্ছেন। কয়েক বছর ধরে তাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও অস্ত্রের বিষয় পুলিশকে জানানোয় তার ওপর ক্ষোভ বাড়তে থাকে। সম্প্রতি ছোট সাজ্জাদকে ঢাকার একটি শপিং মলে দেখে আটকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরপরই তার ওপর চাপ আরও বাড়ে। ইকরামকে বলা হয়, মামলা তুলে না নিলে তাঁকে খুন করা হবে।

বড় সাজ্জাদের বাহিনী বর্তমানে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয়। বাহিনীতে প্রায় ৫০ জন সন্ত্রাসী আছে বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। এই দলটি বায়েজিদ, পাঁচলাইশ, আকবর শাহ, রাউজানসহ একাধিক এলাকায় সন্ত্রাস, খুন ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। সর্বশেষ ৫ নভেম্বর বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগে দিবালোকে সরওয়ার হোসেন বাবলাকে ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনাতেও বড় সাজ্জাদের নাম উঠে এসেছে। এখন নতুন অডিও প্রকাশের পর হত্যাকাণ্ডের পেছনে তাঁর ‘সরাসরি নির্দেশ’ ছিল-এটাই আরও নিশ্চিত হচ্ছে।

অডিও ফাঁস হওয়ার পর চট্টগ্রামে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সাধারণ মানুষ-সবাইয়ের আলোচনা এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। একজন পলাতক, বহু মামলার আসামি, বিদেশে অবস্থানরত সন্ত্রাসী যদি এভাবে প্রকাশ্যে নিজের অপরাধের কথা বলতে পারেন এবং তবুও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ধরতে না পারে-তাহলে শহরের নিরাপত্তা কোথায় দাঁড়িয়েছে? অনেকের প্রশ্ন, এতগুলো খুন, অস্ত্রের লেনদেন, প্রকাশ্যে ভয়ভীতি-সবই যখন খোলাখুলিভাবে ঘটছে, তখন কতটা কার্যকর পুলিশি নজরদারি আছে চট্টগ্রামে?

চট্টগ্রামের আন্ডারওয়ার্ল্ডে বড় সাজ্জাদের অবস্থান ও প্রভাব এতটাই গভীর যে তার একটি নির্দেশেই খুন সংঘটিত হচ্ছে, আবার সেই হত্যাকাণ্ডের অডিও–স্বীকারোক্তি দেশজুড়ে ভাইরাল হলেও কোনো অভিযান বা তৎপরতার দৃশ্য দেখা যায় না। সরওয়ার বাবলার খুনকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, অডিও ফাঁস হওয়ার পর তা আরও জটিল আকার নিয়েছে। বিশ্লেষকদের দাবি, বড় সাজ্জাদ ও তার বাহিনীকে আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত চট্টগ্রামে রাজনৈতিক সহিংসতা ও খুন–সন্ত্রাস থামবে না।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

আমার দেশচট্টগ্রাম
সর্বশেষ
১

টিভির পর্দায় পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা তৃতীয় ওয়ানডেসহ আরও অনেক ম্যাচ

২

পেঁয়াজ আমদানি নিয়ে দুই মেরুতে দুই দপ্তর

৩

গাজায় ‘সবুজ অঞ্চল’ গঠনের পরিকল্পনা আমেরিকার

৪

ফ্যাসিবাদ প্রত্যাবর্তনের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে

৫

বাবলা হত্যার দায় স্বীকার করে যা বললেন সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবুল কালাম জহির (৫০) নামে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

৭ ঘণ্টা আগে

‘খালেদা জিয়া সামনে থাকলেও বাবলাকে মারতাম’ অডিওতে বড় সাজ্জাদ

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদকে নিয়ে নতুন একটি অডিও আজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে সম্প্রতি খুন হওয়া সরওয়ার হোসেন বাবলা হত্যা নিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপচারিতায় সাজ্জাদ এমন দাবি করেন, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর নজর কাড়ছে।

৭ ঘণ্টা আগে

‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ দাবিকে পূর্ণ সমর্থন করি: বুলু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যাহ বুলু বলেছেন, বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ‘নোয়াখালী বিভাগ বিভাগ চাই’-এ যৌক্তিক দাবিকে আমি পূর্ণ সমর্থন করি।

৭ ঘণ্টা আগে

একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন জনগণ মানবেন না: মঞ্জুরুল ইসলাম

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা পল্টন থানা জামায়াতের সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান সরকার একটি দলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গণভোট জাতীয় নির্বাচনের দিন দিয়েছে। এটি জনগন মেনে নিবে না।

৭ ঘণ্টা আগে
বাবলা হত্যার দায় স্বীকার করে যা বললেন সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ

বাবলা হত্যার দায় স্বীকার করে যা বললেন সন্ত্রাসী বড় সাজ্জাদ

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

‘খালেদা জিয়া সামনে থাকলেও বাবলাকে মারতাম’ অডিওতে বড় সাজ্জাদ

‘খালেদা জিয়া সামনে থাকলেও বাবলাকে মারতাম’ অডিওতে বড় সাজ্জাদ

‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ দাবিকে পূর্ণ সমর্থন করি: বুলু

‘নোয়াখালী বিভাগ চাই’ দাবিকে পূর্ণ সমর্থন করি: বুলু