রাজশাহীতে চাহিদার অতিরিক্ত লক্ষাধিক কোরবানির পশু প্রস্তুত

  • গোখাদ্যের দাম বাড়ায় পশুর দাম বেশি হতে পারে

মইন উদ্দীন, রাজশাহী
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫, ২৩: ৪০

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে রাজশাহীর গ্রামাঞ্চলগুলোতে বাড়ি বাড়ি গরু-ছাগল পালন করছেন খামারি ও সাধারণ মানুষ। নারী উদ্যোক্তারাও ফার্ম দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে পশুপালন করে বিক্রি করছেন। এ অঞ্চলের সবখানে এখন ফার্ম দেখা যাচ্ছে। এ কারণে এবার চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৬টি কোরবানিযোগ্য পশু বেশি রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান জানান, জেলায় এ বছর কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৩৭টি। এর বিপরীতে ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৩টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৬টি পশু বেশি রয়েছে। এর মধ্যে গরু এক লাখ ১৫ হাজার ৭৪২, মহিষ চার হাজার ২৪০, ছাগল তিন লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৩ এবং ভেড়া ৩০ হাজার ১৪৮টি, যা রাজশাহী জেলার চাহিদার তুলনায় বেশি। অতিরিক্ত পশু বিক্রির জন্য নেওয়া হবে দেশের অন্যান্য জেলায়।

বিজ্ঞাপন

কোরবানির পশু নিয়ে চলতি ও গত বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানিযোগ্য পশু বেড়েছে ৩০ হাজার ৬৯৭টি। ওই বছরটিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, কোরবানিযোগ্য পশু ছিল চার লাখ ৬৬ হাজার ১৯৬টি। এর মধ্যে গরু ৮৩ হাজার ৩৬৫টি, মহিষ তিন হাজার ৭৬৯টি এবং ছাগল তিন লাখ ৪২ হাজার ৭৫৩টি। সে হিসাবে এ বছর গরু বেড়েছে ৩২ হাজার ৩৭৭টি, মহিষ ৪৭১টি এবং ছাগল চার হাজার ১০টি।

জানা গেছে, রাজশাহীর কোরবানিযোগ্য পশু বিক্রির জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করেছেন কৃষক ও খামারিরা। এখন পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। তবে গোখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় কোরবানির পশুর দামে প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারো রাজশাহী জেলায় চাহিদার তুলনায় উদ্বৃত্ত রয়েছে কোরবানির পশু।

কৃষক ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানিকে কেন্দ্র করে বাসা-বাড়ি ও খামারে লালন-পালন করা পশুগুলোকে শেষ মুহূর্তের বাড়তি যত্ন নেওয়া হচ্ছে। খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণের জন্য খাওয়াচ্ছেন ঘাস, ভুট্টা, খৈল ও ভুসিসহ পুষ্টিকর সব খাবার। আগামী সপ্তাহ থেকে পশু হাটে তোলা হবে। তবে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় এবার পশুর দাম কিছুটা বেশি হতে পারে।

পবা বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের তাজুল ইসলামের চারটি গরু রয়েছে। সবগুলোই কোরবানির উপযোগী। অল্প সময় থাকায় তিনি বাড়তি পরিচর্যা নিচ্ছেন। তাজুল ইসলাম বলেন, ‘গরুগুলো চার থেকে পাঁচ মাস ধরে লালন-পালন করছি। কুরবানির জন্য গ্রাহক আসছে, দেখেশুনে বিক্রি করব। গতবারের চেয়ে এবার পশুখাদ্যের দাম বেশি, দাম কিছুটা বেশি হতে পারে। কারণ গরুর মাংসের দাম বেড়ে একটা জায়গায় স্থির হয়েছে। কিন্তু গোখাদ্যের দাম সপ্তাহ সপ্তাহ বাড়ছেই।’

একই উপজেলার পশু পালনকারী শাজাহান ইসলাম বলেন, ‘বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় কোরবানির সময় পশুর দাম কিছুটা হলেও বেশি থাকে। কোরবানিতে বিক্রির জন্য অনেকে পশু পালন করে থাকেন। আমাদের আশপাশের গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতে একটি বা দুটি গরু আছে। গ্রামের মানুষ মাঠে কাজ করার পাশাপাশি গৃহিণীরা সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে এগুলো পালন করেন।’

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত