পটুয়াখালীর গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন পটুয়াখালী-৪। রাঙ্গাবালী ও কলাপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসন। এতদিন ইসলামপন্থি দলগুলো প্রচার চালিয়ে একটি নির্বাচনী আবহ তৈরি করেছে। সম্প্রতি বিএনপি এখানে প্রার্থী ঘোষণা করে। এখন প্রায় সব দলের প্রার্থীদের প্রচারে সংসদীয় এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে নির্বাচনি আমেজ। দলীয় কোন্দল না থাকায় ভালো অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্য ইসলামি দলগুলো জোট করে নির্বাচন করলে ভালো ফল করতে পারবে বলে আশা করছেন সমর্থকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় আগামী সংসদ নির্বাচন ঘিরে এই আসনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, গণধিকার পরিষদ, আম-জনতা পার্টি, খেলাফত মজলিস ও আম-জনগণ পার্টির প্রার্থীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
এই আসনে বিএনপির প্রার্থী দলের প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। তিনি সাংগঠনিক ও ব্যক্তিগতভাবে বেশ পরিচিত । তার নেতৃত্বে ২০০৬ সালের পর থেকে এই অঞ্চলে বিএনপি সুসংগঠিত রয়েছে, সাংগঠনিকভাবে হয়েছে শক্তিশালী। বিএনপির ভোটাররা মনে করেন, তার এমপি হওয়ার সম্ভাবনা বেশ ভালো। কারণ এখানে বিএনপিতে নেই কোনো গ্রুপিং। মনিরুজ্জামান মনির প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেও তিনি এখন তেমন একটা আলোচনায় নেই। সর্বশেষ রাঙ্গাবালীতে প্রার্থীর সঙ্গে তাকে একই মঞ্চে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, ইসলামপন্থিরা যদি জোট করে ভোটে অংশ নেন তাহলে তারা বিএনপির শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়ে আবির্ভূত হতে পারেন বলে সমর্থকরা মনে করছেন। এমনকি তখন তাদের জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন তারা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ইসলামী আন্দোলনের মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান এখানে বেশি জনপ্রিয়। তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপি মনোনীত এমপি হয়েছিলেন। ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যানও। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ইসলামী আন্দোলনে যোগ দেন। দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, তার জনপ্রিয়তা বিএনপির জন্য নিশ্চিতভাবে চাপ সৃষ্টি করবে।
আওয়ামী আমলে এই আসনে বেশ বেকায়দায় ছিল জামায়াতে ইসলামী। জুলাই বিপ্লবের পর থেকে দলটি নিজেদের পুনরায় সংগঠিত করেছে। এখন তাদের প্রচারে বা দলীয় কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ করা যায়। এই আসনে দলের প্রার্থী কলাপাড়া উপজেলা আমির অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম। তিনি নির্বাচনী প্রচারে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই দুই দল যদি আলাদাভাবে নির্বাচন করে তাহলে ইসলামপন্থিদের ভোট দুই ভাগ হয়ে যেতে পারে। এতে সুবিধা হবে বিএনপির। তবে, যদি এই দুই দল একসঙ্গে ভোট করে তাহলে বিএনপির সঙ্গে লড়াইটা জমে উঠবে, এমনকি জয়ও মিলতে পারে।
এই আসনে খেলাফত মজলিসের জহির উদ্দিন আহমেদ, আম-জনতা পার্টির ফাতিমা তাসনিম ও গণঅধিকার পরিষদের রবিউল ইসলাম প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এনসিপিসহ অন্যান্য দলের এখানে তেমন একটা কার্যক্রম নেই।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনটি এতদিন আওয়ামী দুর্গ হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে দলটির নেতাকর্মীরা নিষ্ক্রিয়। এখন তাদের ভোট টানা প্রার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তবে এটি পরিষ্কার যে, এখানে আওয়ামী ভোটাররা ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন।
তাদের ভোট পক্ষে নেওয়ার জন্য সব দল চেষ্টাও চালাচ্ছে। বর্তমান সময়ে মিছিল মিটিংয়েও আওয়ামী নেতাকর্মীদের দেখা যাচ্ছে।
এই আসনের ভোটাররা মনে করেন, বিএনপির মোশাররফ হোসেন ও ইসলামী আন্দোলনের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের মধ্যে মূলত ভোটযুদ্ধ হবে। তবে শেষ পর্যন্ত ইসলামী দলগুলো জোটবদ্ধ না হতে পারলে বিএনপির জন্য জয়ের পথটা হবে সহজ।


দেশে ফেরা অনিশ্চিত অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালি বিবির
লন্ডনে ফিলিস্তিনি দূতাবাসে ইসরাইলপন্থিদের ভাঙচুর