কৃষকলীগ নেতার ভয়ে সপরিবারে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ধর্ষণ মামলার বাদী

উপজেলা প্রতিনিধি, উজিরপুর (বরিশাল)
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ০৮

বরিশাল উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের পূর্ব জয়শ্রী গ্রামের সপ্তম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অবশেষে আদালতে নির্দেশে মামলা নিলো পুলিশ। ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও মামলা প্রত্যাহারে লাখ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উপজেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতিসহ স্থানীয় এক শিল্পপতির বিরুদ্ধে।

আওয়ামী কৃষক লীগের ওই নেতার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বাদীসহ ভুক্তভোগী পরিবারটি। পুলিশ আদালতের নির্দেশে মামলাটি রুজু করলেও ধর্ষিতা ও পরিবারটি নিরাপত্তার কোনো দায়িত্ব নেয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। ভুক্তভোগী পরিবার ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৯ জুলাই বিকেল ৪টার সময় স্কুলছাত্রী পশ্চিম জয়শ্রী গ্রামের আকবর আলী বিশ্বাসের লম্পট পুত্র ইমরান হোসেন (২৪) এর দোকানের কাছে গেলে ওই ইস্কুল ছাত্রীকে জোর করে দোকান ঘরে ঢুকিয়ে দোকানের দরজা বন্ধ করে ধর্ষণ করে।

বিজ্ঞাপন

বিষয়টি ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী তার পরিবারকে জানায়। ছাত্রীর মা থানায় অভিযোগ করলে, বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয় উপজেলা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও প্রভাবশালী চাতাল ব্যবসায়ী মো. ইসাহাক হাওলাদারের। তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য কয়েক লাখ টাকার অর্থ বাণিজ্য করেন বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়। ধর্ষিতার নানী ও ওই পরিবারে একাধিক সদস্য জানান, ঐ কৃষক লীগের নেতা মো. ইসাহাক হাওলাদার মামলা তুলে নিতে ধর্ষিতার পিতাকে জয়শ্রী জয় রাইস মিলের অফিস ঘরে শিল্পপতি আব্দুল মজিদ ভূইয়ার কাছে নিয়ে এসে ১ লাখ টাকা নিয়ে মামলা তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। এই ঘটনার পর থেকে ধর্ষিতাসহ পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এ বিষয়ে আব্দুল মজিদ ভূইয়া বলেন, আমার অফিসে বসে উভয়পক্ষ আপোষ মীমাংসা হয়েছে। এরপরে কী হয়েছে আমি জানি না। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন জানান, মামলাটি ২০ আগস্ট আদালতের নির্দেশে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলায় ধর্ষকসহ ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। অপরদিকে ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, পুলিশ কৃষকলীগ নেতা ও প্রভাবশালী প্রভাবে আসামিদের পক্ষ নিচ্ছেন এবং কৌশলে আসামি গ্রেপ্তার করছে না।

কৃষক লীগের সহ-সভাপতি মো. ইসহাক হাওলাদার জানান, এ বিষয়ে আব্দুল মজিদ ভূঁইয়া তার রাইস মিল অফিসে আমাকে ডেকে উভয় পক্ষকে ধমক দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন, যেহেতু বিষয়টি তাদের গ্রামের এবং অর্থ লেনদেন ও মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রত্যাহারের বিষয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়।

এ বিষয়ে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুস সালাম জানান, ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে নির্দেশে মামলা দায়ের করা হয়েছে, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

স্থানীয়রা অতিদ্রুত ধর্ষককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত