দগ্ধ সেই গৃহবধূর মৃত্যু, ক্ষুব্ধ জনতা পুড়িয়ে দিয়েছে নাছিমার ঘর

উপজেলা প্রতিনিধি, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১২: ১৬

‎চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে সুদ ব্যবসায়ীর দেয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ শাহনাজ বেগম লাকি (৩৬) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (১ অক্টোবর) বিকালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তার মৃত্যু হয়। শাহনাজ বেগম লাকি ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের উপাদিক গ্রামের আমিনুল খানের স্ত্রী। এর আগে গত শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে একই গ্রামের প্রতিবেশী ও সুদের ব্যবসায়ী নাছিমা বেগম (৪২) গং কর্তৃক ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সুদের ব্যবসায়ী নাছিমা বেগমকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। লাকির মৃত্যুর সংবাদ শুনে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা সুদী ব্যবসায়ী নাছির বসত ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

‎এদিকে শাহনাজ বেগম লাকির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন, দুই বছর পূর্বে সুদের ব্যবসায়ী নাছিমা বেগমের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নেয় শাহনাজ বেগম। সেই টাকা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস আরো টাকা পাবার দাবি তোলে সুদের ব্যবসায়ী নাছিমা বেগম। এ নিয়ে তাদের কয়েক মাস ধরেই সুদের টাকা পরিশোধ ও স্ট্যাম্প দেয়া না দেয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জের ধরে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে সুদের ব্যবসায়ী নাছিমা বেগমসহ তার লোকজন লাকির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠালে সেখানে বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে ভুক্তভোগী শাহনাজ বেগম লাকি । এ ঘটনায় স্থানীয় জনগণ রাতে নাছিমার ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়।

‎এ জনপ্রতিনিধি আরও বলেন, এর আগে সুদ ব্যবসায়ী নাছিমা বেগমের দ্বারা হয়রানির শিকার ভুক্তভোগীরা তার বিচার চেয়ে উপাদিক গ্রামে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

শাহনাজ বেগম লাকির মা হাজেরা বেগম বলেন, আমার মেয়েয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্মম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে শরীরে কেরোসিনের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। নাছিমা বেগমসহ সকল অপরাধীদের ফাঁসি চাই।

‎ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা লাকির মৃত্যুর সংবাদ শুনে নাছিমার বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে। এর শাহনাজ বেগম লাকির শরীরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তার মা হাজেরা বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত নাছিমা বেগমকে আটক করে আমরা জেলে পাঠানো হয়েছে। এখন যেহেতু ভিক্টিম মারা গেলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত