অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় লাখো রোহিঙ্গা, ৩৩ জেলে অপহরণ

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ৪৩
আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ১৭: ৩০

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গণহত্যার যখন ৮ম বর্ষ পালিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানো নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে; তখন সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সীমান্তে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষা রয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে টেকনাফের নাফ নদ এলাকায় গত তিন দিনে আরাকান আর্মির হাতে অন্তত ৩৩ জন বাংলাদেশি জেলে অপহৃত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সর্বশেষ সোমবার (২৫ আগস্ট) একটি নৌকাসহ সাত জেলেকে ধরে নিয়ে যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। তবে অপহৃতদের কাউকেই এখনো ফেরত দেয়া হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের ওপারে এখনো নো-ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থান করছে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গা। তবে তাদের অনেকেই ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এবং কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ঢুকে যাচ্ছে।

অন্যদিকে রাখাইনে জান্তা সেনা ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সংঘাত চললেও গত দু’দিন সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়নি।

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত গোলার শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল সীমান্তের মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, সীমান্তে জড়ো হওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা ৮০ হাজার থেকে এক লাখ হতে পারে। এরা ধীরে ধীরে ছোট ছোট দলে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।

টেকনাফের ইউএনও মো. এহেছান উদ্দিন বলেন, ‘বড় আকারে অনুপ্রবেশের খবর নেই, তবে ছোট ছোট দলে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরোচ্ছে। তাদের ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।’

বিজিবি টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় দু’লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এখনো অন্তত এক লাখ সীমান্তে অপেক্ষা করছে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের হিসাবে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ আরো অর্ধলাখ রোহিঙ্গা প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে।

কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘সীমান্তে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। প্রতিনিয়ত মাদক, অস্ত্রসহ অপরাধমূলক কার্যক্রম বাড়ছে। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ তৎপর থাকলেও চ্যালেঞ্জ বাড়ছে।’

২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা ও মগ সম্প্রদায়ের নির্যাতনে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এবারও একই ধরনের সঙ্কটে পড়তে পারে বাংলাদেশ।

তাদের ধারণা, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কার্যকর না হলে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামা কেবল সময়ের ব্যাপার।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত