ফেসবুকে ভিডিও ভাইরাল

রাস্তার বালু ফেলায় শিশুকে ডোবায় ফেলে দিয়েছে শাহজাহান

জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮: ৫১

কুমিল্লা বুড়িচংয়ে সামান্য বালুর জন্য চার বছরের এক শিশুকে ডোবাতে ফেলে দেয় শাহাজাহান নামের এক শিক্ষক। তিনি বুড়িচং উপজেলা ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক।

বৃহস্পতিবার জেলার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত বুড়িচং পূর্ব পাড়া গিয়াসউদ্দিন মাস্টার এর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

মুহূর্তে শিশুর প্রতি অমানবিক নির্যাতনের চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হলে শুরু হয় সমালোচনা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, ওই শিশুটির মা যখন ওই ব্যক্তিকে বলছিলেন, আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নেই, আপনি আমার বাচ্চাকে পানিতে ফেলে দিলেন। আপনি একজন ‘সামাজিক’ মানুষ হয়ে এমন কাজ কীভাবে করতে পারলেন? একটু বালু ফেলে দিয়েছে বলে আপনি এভাবে আমার বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দিবেন। আপনি কি একটা যুক্তিসংগত কাজ করলেন এটা।

আপনি আমার বাচ্চাকে ফেলে দেওয়ার পর না উঠিয়ে উল্টো বলছেন যে বাচ্চাটা মরে যাক। তখন বাচ্চাকে ফেলে দেওয়া ওই ব্যক্তি পাল্টা জবাবে বলেন, তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা এটা আমি দেখবো না। আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই। আর আমি সামাজিক মানুষ ও না৷ আজকে ২০ দিন ধরে সবাইকে বলতেছিলাম, কেউ আমার কথা শুনেনি। তোমার বাচ্চা এখানে এসে বালি ধরেছিলো । তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন।

নির্যাতনের শিকার শিশুর মা শামছুন নাহার তানিয়া বলেন, আমার সন্তানকে শাহাজাহান মাস্টার হত্যা করার চেষ্টা করেছে,আমি বিচার চাই। একজন শিক্ষক হয়ে এমন বর্বর কাজ কিভাবে করে সে! সেদিন যদি আমার মেয়ে উপস্থিত না থাকতো তাহলে আমার বাচ্চাকে হত্যা করা হতো।

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে বুড়িচং থানার পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে মোসা. মিফতাহুল মাওয়া (০৪) এবং মোসা. গালিবা সুলতানা (১০) বালি নিয়ে খেলা করছিলেন ওই এলাকার মো. শাহ জাহানের (৫০) বাড়ির সামনে। এসময় একই এলাকার বাসিন্দা ও তাদের প্রতিবেশী মো. শাহ জাহান (৫০) পূর্ব শত্রুতার জেরে নজির আহমেদের ছোট মেয়ে মিফতাহুল মাওয়াকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং কোলে তুলে পুকুরে ফেলে দেয়। এসময় গালিবা চিৎকার করলে শাহ জাহান তাকেও মারধর করে। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত শাহজাহান পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা আহত দু’শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মিফতাহুল মাওয়ার অবস্থার অবনতি দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন।

বুড়িচং পূর্ব পাড়ার ও ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই কাজটি করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি।

এবিষয়ে জানার জন্য মো. শাহজাহান মাস্টার মোবাইল ফোন করা হলে তার ছেলে নুরে আলম রাজ বলেন , বাবা বাড়িতে নেই। কোথায় আছে জানি না।

এ বিষয় নিশ্চিত করে বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক আমার দেশকে বলেন, শুক্রবার শিশুর মা বুড়িচং থানা একটি শিশু নির্যাতন মামলা করেছেন। আসামি গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নজির আহমেদ খাঁন বলেন,ভিডিওটা দেখছি,এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত