ফেনীর নুসরাতকাণ্ড: ফরিদগঞ্জে ওসির বিরুদ্ধে মানববন্ধন, যুবদল নেতা বহিষ্কার

উপজেলা প্রতিনিধি, ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর)
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৪

‎ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আলোচিত নুসরাত জাহান রাফীর আত্মহত্যাকে হত্যায় রূপান্তর করে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে নিরপরাধীদের রিমান্ডে এনে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায়কারী ও বিপুল পরিমাণ ঘুষ গ্রহণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্রকে মূল মাস্টারমাইন্ড সাবেক পিবিআই প্রধান বনজ কুমারকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ফরিদগঞ্জ থানার বর্তমান ওসি শাহ আলমকে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন দণ্ডপ্রাপ্তদের ক্ষতিগ্রস্ত স্বজনরা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে ফরিদগঞ্জ থানার মোড় এলাকায় এই মানববন্ধন চলাকালে উপজেলা যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব ও জেলা যুবদলের সদস্যের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এসে মানববন্ধনকারী ও উপস্থিত সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা ব্যানার এবং সাংবাদিকদের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবদল নেতা আব্দুল মতিনের সকল পদ স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় যুবদল। এ ঘটনায় সাংবাদিক মো. রাকিবুল হাসান বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেন।

মানববন্ধনকারীরা জানান, ২০১৯ সালে ‎ফেনীর জেলার সোনাগাজী উপজেলায় স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় নুসরাত জাহান রাফি (১৯) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। ওই মামলাটি তদন্ত করেন তৎকালীন পিবিআই কর্মকর্তা, বর্তমানে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ আলম।

নুসরাতের মৃত্যুর ঘটনাটি রাজনৈতিকভাবে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সাবেক পিবিআই প্রধান বনজ কুমারের নির্দেশে নিরপরাধীদের রিমান্ডে এনে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি আদায় ও বিপুল পরিমাণ ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। সেই পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা এখন ফরিদগঞ্জ থানার ওসি শাহ আলম। তাই তার বিচারের দাবিতে থানার সামনে এসে মানববন্ধন করেছি। এসময় ওসির লেলিয়ে দেয়া যুবদল নেতা আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী এসে আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ব্যানার, সাংবাদিকদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে উপস্থিতি লোকজনকে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা পুলিশ ও রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

মামলার বাদী বাংলা এডিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মো. রাকিবুল হাসান বলেন, মানববন্ধন চলাকালে নিউজ সংগ্রহ করার সময় যুবদল নেতা আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। আমাদের লাঞ্ছিত করে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করেছি। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

এদিকে যুবদল নেতা আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদ নুরুল ইসলাম সোহেলের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জেলা যুবদলের-সহ তার সকল সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমি তদন্ত কর্মকর্তা ছিলাম। আমি তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছি। বিচার করেছেন আদালত। এখন তারা ন্যায়বিচার পায়নি তাই মানববন্ধন করেছে। এ সময় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত