চসিকের ফাইল বাসায় নিয়ে যান উপদেষ্টা, মেয়রের অভিযোগ

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ২০

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের চসিকের কোনো ফাইল অনুমোদন করা হয় না৷ প্রজেক্ট ফাইল দেখলে উপদেষ্টা সাহেব সেগুলো বাসায় নিয়ে যান বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের(চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত পরিচ্ছন্নতা সচেতনতামূলক প্রচারাভিযানে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে এসব কথা বলেন।

এসময় মেয়র বলেন, উপদেষ্টা সাহেব যখন দেখেন যে এটা একটা প্রজেক্ট ফাইল। তখন সেটা আর মন্ত্রণালয়ে রাখেন না। তিনি সেগুলো বাসায় নিয়ে যান। আমি খুঁজতে-খুঁজতে-খুঁজতে-খুঁজতে মিনিস্ট্রিতে…। আমার ফাইল কই? বলে, ফাইল তো বাসায় নিয়ে গেছে। এখন বাসা থেকে ওটার আর পরে সিগনেচার হয় না। ওটা আর আসে না।

এখনও আমাদের তিনটা ফাইল এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে কোনো ফাইল গেলে সেটি আর অনুমোদন হয় না।

মেয়র বলেন, ‘দিজ ইজ দ্য প্যাটিথিক সিনারিও দ্যাট উই আর ফেসিং নাও আ ডেইজ’। ফাইল আছে সবই আছে। খুব চমৎকারভাবে উনারা বাসায় নিয়ে যান। মিনিস্ট্রি থেকে ফাইল গায়েব হয়ে যায়। এটা আমার গত ১১ মাসের অভিজ্ঞতা।’

ইউকের প্রজেক্ট করতে পারেননি উল্লেখ করে চসিক মেয়র বলেন, শুধু সেটা নয় জাপান ‘অ্যাজ ওয়েল অ্যাজ’ কোরিয়ার প্রজেক্টও। আজকে এগুলো যদি আমি অনেক দ্রুত পেতাম, তাহলে চট্টগ্রাম শহরকে অনেক সুন্দর করে দিতে পারতাম। এটা শুধু চট্টগ্রাম সিটির ব্যর্থতা নয়, এটা রাষ্ট্রের ও সরকারের ব্যর্থতা। চারশ কোটি টাকার আমার যে ইন্সট্রুমেন্টের প্রজেক্ট, সেটা ফিন্যান্স মিনিস্ট্রিতে গিয়ে হয়ে গেল ২৯৮ কোটি টাকা। প্রায় একশত কোটি টাকা কেটে দিল। কেটে দিয়ে সেখানে বলে দিল, আমাদের ১৬০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে ৫ শতাংশ সুদে। আমরা একটা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। শুধু ৬০ কোটি টাকা তারা আমাকে বরাদ্দ দেবে। বাকিটা সিটি করপোরেশনকে থেকে দিতে হবে।’

মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ওই ফাইলটা কিন্তু এখনো পর্যন্ত ওই জায়গায় রয়ে গেছে। আমি এখনো দৌড়াচ্ছি, প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছি। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি। আমি কোথায় যাব? এর উপর আর কেউ আছে? উনি চট্টগ্রামের মানুষ। উনাকে বলেছি, উনার পিএসকে বারবার বলেছি যে, কাজটা করে দেন। আমার মেশিনারিজ খুব দরকার। আমার আসলে মেশিনারিজ নেই। ‘যে যন্ত্রপাতিগুলো আছে সেগুলো ১৫-২০ বছরের পুরোনো। গত সরকার একটা ড্রেনেজ সিস্টেম করতে গিয়ে ১৪ হাজার কোটি টাকার মত প্রায় খরচ করেছে। আর এটা যন্ত্রপাতি কেনার জন্য তিনশ কোটি টাকার খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি ফেইল করলাম।’

তিনি বলেন, ‘আমি ব্যর্থ হলাম মানে রাষ্ট্র ব্যর্থ হলো। একদম স্ট্রেইট ফেইল করল। একটা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানকে দিতে কার্পণ্য করল। আমি এটা দিতে পারছি না। এটা অামাদের ব্যর্থতা। জলাবদ্ধতা একটা বড় সমস্যা। আমি এটা সমাধান করতে চাই। ‘এখানে যে উপদেষ্টাকে পাঠানো হল, মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আমি উনার সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি। অনুরোধ করলাম। সবশেষে তিনি বললেন, প্রথমে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান হয়ে যাক, তারপর আপনি সেটা পাবেন। আমার ৫০-৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতার সমস্যা ইতিমধ্যে সমাধান হয়েছে। এখনো আমি সেটা পাচ্ছি না। কাজেই কথা আমরা বলি, কিন্তু এখানে কথার পিছনে কথা থাকে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।

অনুষ্ঠানে সিআইইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক এম এম নুরুল আবসার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত