কাস্টম হাউসে ফের কলম বিরতি, স্থবির চট্টগ্রাম বন্দর

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৫, ১৪: ১২

দ্বিতীয় দফায় তৃতীয় দিনের মতো কলম বিরতি চলছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। বুধবার দুপুর ১২টা থেকে পূর্বনির্ধারিত এই কর্মসূচি শুরু করে কাস্টমসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা ও মঙ্গলবার ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কলম বিরতির নামে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এককভাবে দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এতে স্থবিরতা তৈরি হয়েছে জাতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরে। কাস্টমসে শুল্কায়ন ও বিল অব এন্ট্রি দাখিল না হওয়ায় পণ্য ডেলিভারি নিতে পারছেন না আমদানিকারকরা। ডকুমেন্ট ক্লিয়ারেন্স না হওয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে রপ্তানি কার্যক্রমেও। এক কথায় কাস্টমস কর্মকর্তাদের অসহোযোগিতায় থমকে গেছে জাতীয় অর্থনীতির চাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে প্রণীত রাজস্ব অধ্যাদেশ বাতিল এবং টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা ও সংস্কার কমিশনে এনবিআরের একজন প্রতিনিধি সংযুক্ত করার দাবিতে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসেও দুপুর ১২টা থেকে অফিস চলাকালীন সময় অর্থাৎ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ‘কলম বিরতি’ কর্মসূচি পালন করছে কাস্টমস কর্মকর্তারা। কাস্টমস কর্মকর্তারা সকালে ৩ ঘণ্টা কার্যক্রম সচল ছিল এমন দাবি করলেও সেবা গ্রহীতারা জানান, দেড় থেকে ২ ঘণ্টা কাজ চললেও তা শুধু বড় বড় শিল্প গ্রুপগুলোর কাজ করেছেন কর্মকর্তারা। সাধারণ আমদানিকারকদের কোনো কাজই হয়নি।

আন্দোলনকারী কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি প্রণীত রাজস্ব অধ্যাদেশটি রাজস্ব প্রশাসনে জটিলতা তৈরি করবে, যার ফলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়বে। তাদের মতে, একটি অদক্ষ ও অস্বচ্ছ কাঠামো চাপিয়ে দেওয়া হলে দেশের রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থাও হুমকির মুখে পড়বে। এনবিআর বিলুপ্তির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে একতরফাভাবে এই অধ্যাদেশ চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। দাবি আদায় না হলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

ঈদের আগে অভিন্ন দাবিতে টানা ১৫ দিনেরও বেশি সময় আন্দোলনের নামে কাজ বন্ধ রেখেছিলেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। ঈদের ছুটিতে বন্দরের ইয়ার্ডে জট লাগার অন্যতম কারণও ছিলো কাস্টমসের কর্মবিরতি। সেই রেশ কাটতে না কাটতে ফের কলম বিরতির নামে কাজ বন্ধ রাখায় বন্দরের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমেছে বলে জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম জানান, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস দেশের আর দশটা প্রতিষ্ঠানের মতো নয়। এখানে ৫ ঘণ্টা কাজ বন্ধ থাকার অর্থ পুরো দিনই কাজ হয় না। কারণ খাতা কলমে যে ২/৩ ঘণ্টা কাজ চলে সেখানে দুর্নীতির পরিমাণ বাড়ে। একই দাবিতে দিনের পর পর কাস্টম হাউজের মতো প্রতিষ্ঠান অচল করে রাখার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, কাস্টমসের কাজ বন্ধ থাকায় বন্দরের ডেলিভারি কার্যক্রম কিছুটা ধীর গতিতে হচ্ছে। তবে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস স্বাভাবিক রয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত