দপ্তরির দায়িত্বও পালন করতে হয় প্রধান শিক্ষককে

জালাল উদ্দিন মনির, (নবীনগর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ৪৮

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দপ্তরির দায়িত্বও পালন করতে হয় একজন প্রধান শিক্ষককে। তিনি উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ১৫৫ নং কালিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিন্টু মিয়া। একইসাথে ক্লাস করছেন পাশাপাশি দপ্তরির এ দায়িত্বও পালন করছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর (২০২৫), সহকারী শিক্ষক পদে ইমরান মিয়া নামে একজন শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করলেও তিনি কাজ করছেন নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে।

সরেজমিনে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৬০ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য অন্তত পাঁচজন শিক্ষক ও একজন দপ্তরি থাকার কথা থাকলেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দুইজন।

এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বদলি হয়ে আসা ইমরান মিয়া নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করছেন। শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মিন্টু মিয়াসহ দুইজন শিক্ষক। প্রায়ই দিনই স্কুলের দাপ্তরিক কাজে উপজেলা শিক্ষা অফিসে যেতে হয় প্রধান শিক্ষককে। তিনি না থাকলে একজন শিক্ষককে তিনটি ক্লাস সামলাতে হয়। এতে শ্রেণিকক্ষের শৃঙ্খলা ও পাঠদান উভয়ই ব্যাহত হচ্ছে।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মিন্টু মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট এখন চরম পর্যায়ে। একদিকে শিক্ষক কম, অন্যদিকে বদলিকৃত শিক্ষক যোগদান করেও স্কুলে আসছেন না। দপ্তরি না থাকায় ক্লাসের ও ছুটির ঘণ্টা আমাকেই বাজাতে হচ্ছে। শিক্ষক সংকটের কারণে ক্লাসে সঠিকভাবে পাঠদান দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে অভিভাবক ও স্থানীয়দের চাপের মুখে আছি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ওই স্কুলে অভিভাবক আব্দুল করিম বলেন, শুনেছি একজন নতুন শিক্ষক যোগদান করেছেন কিন্তু তিনি এখনো স্কুলে আসেননি। এতে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দাতা সদস্য গোলাম হোসেন বলেন, মাত্র দুইজন শিক্ষক দিয়ে ১৬০ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চালানো অসম্ভব। একজন শিক্ষক অফিসে গেলে অন্যজনকে একাই সব শ্রেণির দায়িত্ব নিতে হয়। এতে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে বদলিকৃত শিক্ষক ইমরান হোসেন বলেন, আমাকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশে উপজেলা অফিসে কাজ করতে হচ্ছে। সে কারণে স্কুলে নিয়মিত যেতে পারছি না।

নবীনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান আমার দেশকে বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জনবল ৫ জনের জায়গায় ১ জন রয়েছেন। সেই কারণে সাময়িকভাবে ঐ শিক্ষককে অফিসে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কালিপুর স্কুলে নতুন আরও একজন শিক্ষক দেওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে,আজ কালের মাঝে নতুন শিক্ষক যোগদান করবেন বলে আশা করছি। দপ্তরির নিয়োগ সরকারিভাবে না হওয়ার কারণে ওই স্কুলে দপ্তরি নেই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত