আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

চান্দিনা পৌরসভা জন্মনিবন্ধন বিভাগের ২০ লাখ টাকা গায়েব!

উপজেলা প্রতিনিধি, চান্দিনা (কুমিল্লা)
চান্দিনা পৌরসভা জন্মনিবন্ধন বিভাগের ২০ লাখ টাকা গায়েব!

কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভার জন্মনিবন্ধন বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে চলা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নতুন করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে—জন্ম নিবন্ধন বাবদ আদায় করা বিপুল অঙ্কের অর্থ সরকারি হিসাবে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী ও পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর দাবি, চান্দিনা পৌরসভায় জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আদায় করা মোট প্রায় ২৯ লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ৯ লাখ টাকা সরকারি হিসাবে জমা হয়েছে, বাকি ২০ লাখ টাকার কোনো হদিস নেই।

জানা যায়, চান্দিনা পৌরসভায় ২০০৬ সালে হাতে লেখা পদ্ধতিতে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১২ সালের শেষ দিকে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন চালু করা হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী—

জন্মের ০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, পাঁচ বছরের নিচে ২৫ টাকা এবং পাঁচ বছরের বেশি বয়সে ৫০ টাকা সরকারি ফি নির্ধারিত রয়েছে।

তবে অভিযোগ রয়েছে, মাঠপর্যায়ে নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অনেক বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে এবং সেই আদায়কৃত অর্থ পৌরসভার সরকারি হিসাবে যথাযথভাবে জমা দেওয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৩ সাল থেকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের অনলাইন ফি বাবদ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের কাছে পৌরসভার বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে মাত্র ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করা হলেও বাকি ২০ লাখ টাকার কোনো হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত টিকাদান সুপারভাইজার আব্দুল ওয়াদুদ দৈনিক আমার দেশকে জানান, ২৯ লাখ টাকার মধ্যে ৯ লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। তবে বাকি ২০ লাখ টাকা কোথায়—এমন প্রশ্নে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং দাবি করেন, তিনি বা তার দপ্তরের কেউ অর্থ আত্মসাৎ করেননি।

এদিকে চান্দিনা পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন, পৌরসভা জন্ম নিবন্ধন বিনামূল্যে দেয় না—এমন দাবি প্রশ্নবিদ্ধ। বিষয়টি জানার পর কোন অর্থবছরে কত টাকা বকেয়া রয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, মন্ত্রণালয় থেকে উত্তর পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে পৌরসভা প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরো ক্ষুণ্ণ হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন