আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ভিটেমাটি দখলে নিতে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি অসহায় পরিবার

চট্টগ্রাম ব্যুরো
ভিটেমাটি দখলে নিতে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি অসহায় পরিবার

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় ভিটাবাড়ি দখলের উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীদের লাগাতার হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হয়ে এক বছরের বেশি সময় জিম্মি অবস্থায় দিন কাটিয়েছে একটি পরিবার। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে প্রাণ বাঁচাতে পরিবারের এক মেয়ে গোপনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। অন্য মেয়ে এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে যান। একা পড়ে যান ৭০ বছরের বৃদ্ধ বাবা।

বিজ্ঞাপন

ওই বৃদ্ধকে আজ রোববার বেধড়ক মারধর করে বাড়িতে বন্দি করে রেখেছে। অবস্থা এমন পর্যায়ে ওই বৃদ্ধ থানায় গিয়ে অভিযোগ করারও সুযোগ দিচ্ছে না সন্ত্রাসীরা। ফলে বন্দি অবস্থায় রয়েছে এখনো।

ভুক্তভোগী মনোহরী বড়ুয়া রামু থানার সীমাবিহারসংলগ্ন এলাকায় দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পাশের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নজর পড়ে তাদের ভিটাবাড়ির ওপর। প্রথমে জায়গাটি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। এতে রাজি না হওয়ায় দুই মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পরিবারের।

নির্যাতন ও ভয়ভীতির মধ্যে পড়ে বড় মেয়ে পায়েল বড়ুয়া পিউ একবছর আগে গোপনে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। পরে ছোট মেয়ে অর্পিতা বড়ুয়াও এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে যেতে বাধ্য হন। দুই মেয়ের এলাকা ছাড়ার খবর জানার পর অভিযুক্ত সন্ত্রাসী আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ।

পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, বাপ্পি বড়ুয়া নামের এক ব্যক্তি ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি মনোহরী বড়ুয়াকে পুলিশ বা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ না করার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। সন্ত্রাসী বাপ্পি বড়ুয়া ওই এলাকার সোনাধন বড়ুয়ার ছেলে।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, বাপ্পি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে রামু থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। বিভিন্ন সময় এসব মামলায় তিনি কয়েকবার কারাভোগও করেছেন। তবে জেল থেকে বেরিয়ে আবারো এলাকায় দাপট দেখাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগীদের দাবি, অতীতের মামলাগুলোর কারণে তাকে সবাই ভয় পায় আর সেই সুযোগ নিয়েই তিনি পরিবারটিকে দীর্ঘদিন জিম্মি করে রাখেন।

মনোহরী বড়ুয়ার বড় মেয়ে পায়েল বড়ুয়া পিউ বলেন, বাইরে যাতায়াতের সময় তাদের সঙ্গে অশ্লীল ও নোংরা ভাষায় কথা বলা হতো। ভয়ভীতি দেখিয়ে পরিবারটিকে কার্যত ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। এক বছর ধরে আমরা ভয় নিয়ে ঘরের ভেতরই থাকতাম। থানায় গেলে বিপদ আরও বাড়বে-এই আশঙ্কায় কাউকে কিছু বলতে পারিনি, বলেন তিনি।

আজ রোববার সকালে মনোহরী বড়ুয়া বাড়িতে একা থাকা অবস্থায় অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে এবং জোরপূর্বক বাড়িতে আটকে রাখে বলে অভিযোগ উঠেছে। আশপাশের লোকজন বিষয়টি জানতে পারলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি বলে জানান স্থানীয়রা।

অভিযুক্ত বাপ্পি বড়ুয়া আমার দেশকে বলেন, আমি তাদের প্রতিবেশি। জায়গাটা আমাদের। জায়গাটি দিচ্ছে না। আদালতের নিষেধাজ্ঞাও আছে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মোহাম্মদ সামীম কবীর আমার দেশকে বলেন, বিষয়টি দ্রুত ওসি সাহেবকে অভিযোগ দিতে বলেন। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জানতে চাইলে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের নাম্বার দেন। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন