নোয়াখালী-৬ হাতিয়া আসনে বিএনপি জামায়াত এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। আসনটিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মানবাধিকার সাহিত্য ও দাওয়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হককে প্রার্থী দিয়েছে। এদিকে এনসিপি থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়ক ও দলটির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। আর ইসলামী আন্দোলন থেকে প্রার্থিতা দেওয়া হয়েছে মাওলানা নুরুল ইসলাম শরীফকে।
ধানের শীষের মনোনয়ন নিয়ে গত ৯ নভেম্বর উপজেলার হরনী ও চানন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ঘাট বাজারে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ হাজার হাজার সমর্থকরা বরণ করে নেয় মাহবুবের রহমান শামীমকে।
এদিকে বর্তমানে নির্বাচনি মাঠে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বেশ আগেই প্রার্থী চুড়ান্ত করায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। দলীয় প্রার্থী হিসেবে অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বিভিন্ন কর্মসূচি ও শোডাউন করে পুরো দ্বীপের বিভিন্ন বাজারগুলোতে ভোটারদের কাছে নিজের ও দলীয় অবস্থান তুলে ধরছেন।
অন্যদিকে জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এনসিপির একক প্রার্থী আবদুল হান্নান মাসউদ দ্বীপ আসনটিতে তরুণ নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি হাতিয়ার নদীভাঙন রোধ, রাস্তাঘাট, নৌযোগাযোগে ফেরি সার্ভিসের উদ্যোগ গ্রহণসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে মানুষের কাছে ইতোমধ্যে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক গণসংযোগ ও সমাবেশ করতে দ্বীপের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে চষে বেড়াচ্ছেন।
ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী ঘোষণার পর মাওলানা মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম শরীফ হাত পাখা প্রতীক নিয়ে দলীয় অনুসারীদের নিয়ে দু-একটি পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করে জনমত সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ ও সপ্তম সংসদ নির্বাচনে প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে স্বতন্ত্র এমপি নির্বাচিত হন মোহাম্মদ আলী। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে হরিণ মার্কা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রকৌশলী মোহাম্মদ ফজলুল আজিম বিজয়ী হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি-জামায়াতের ভোট বর্জনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে আয়েশা ফেরদাউস বিজয়ী হন। ২০১৮-এর নির্বাচনে নিশিরাতের ভোটে পুনরায় নির্বাচিত হন তিনি। ২০২৪-এ ড্যামি নির্বাচনে দলটি থেকে মোহাম্মদ আলী নির্বাচিত হন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নোয়াখালী-৬ আসনের প্রার্থী মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, সারা দেশে ধানের শীষে জোয়ার উঠেছে। দেশের মানুষ ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। দীর্ঘ ১৭ বছর এ দেশের মানুষের কোনো অধিকার ছিল না। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ধানের শীষের গণসংযোগ চলছে। হাতিয়ার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে সংসদে পাঠাবেন।
জামায়াতের প্রার্থী শাহ মাহফুজুল হক বলেন, আমি ছাত্র জীবন থেকে জামায়তের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ফ্যাসিস্ট আমলে বহুবার নির্যাতনের শিকার হয়েছি। দল আমাকে হাতিয়াতে মনোনয়ন দিয়েছেন। এই দ্বীপের জন্য আমার অনেক কিছু করার আছে। নির্বাচিত হলে আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে এই দ্বীপের মানুষের জন্য কাজ করব। হাতিয়ায় অনেক সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোকেও কাজে লাগাব। ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। মানুষ আমাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী ইনশাআল্লাহ।
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমি হাতিয়ার মানুষের সঙ্গে সুখে-দুঃখে মিশে আছি। এখানকার মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দীর্ঘদিন হাতিয়ার মানুষ রাজনৈতিক জিম্মিদশার মধ্যে আবদ্ধ ছিল। আমি সে আবদ্ধের বেড়াজাল ছিন্ন করেছি। ভূমিহীনদের ভূমি বুঝিয়ে দিয়েছি। নদীভাঙন রোধের বিষয়ে কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য লড়াই করছি। ইতোমধ্যে হাতিয়ায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছি। হাতিয়ার মানুষ আমার সঙ্গে আছে এবং তারা আগামী নির্বাচনে ব্যালট বিপ্লব ঘটাবে ইনশাআল্লাহ।


হাসিনার প্লট দুর্নীতির মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড
ঢাকায় আসছেন বিশ্বের শীর্ষ ক্রেতারা