পিলার ঢালাই করে ৩৯ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা ঠিকাদার

উপজেলা প্রতিনিধি, (অষ্টগ্রাম) কিশোরগঞ্জ
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৩৭

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে আইটিআরসিই ভবনের নির্মাণের মাত্র তিনটি পাইলিং পিলার ঢালাই করে ৩৯ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তাইহান কনসোর্টিয়াম’। তিন বছর পার হলেও তা আজও সমাপ্ত হয়নি। এ বিষয়ে কিছুই জানে না জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)র অধীনে ‘উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার ফর এডুকেশন (ইউআইটিআরসিই)’ প্রকল্পের দ্বিতীয় ধাপের আওতায় ২০২২ সালের ৫ মার্চ অষ্টগ্রাম উপজেলা আইটিআরসিই ভবনের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করা হয়।

এই প্রকল্পে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলার জন্য চারতলা ফাউন্ডেশনের ওপর দ্বিতল ‘ইউআইটিআরসিই ভবন’ নির্মাণের কথা ছিল। এতে ২৪টি সর্বাধুনিক কম্পিউটার, ৫টি সাইবার সেন্টার, একটি জেনারেটর, ইন্টারনেট সুবিধা এবং একটি আইসিটি ট্রেনিং ল্যাবসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা।

অষ্টগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবেশ চন্দ্র দাস বলেন, ভবন নির্মাণ ও কার্যক্রম চালু হলে শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বাড়তো এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তিন বছর ধরে এই কাজ থেমে আছে এবং দ্রুত ভবন নির্মাণ শেষে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরুর দাবি জানান।

ব্যানবেইস সূত্রে জানা যায়, ১৬০টি ভবন নির্মাণে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘তাইহান কনসোর্টিয়াম লিমিটেড’ যৌথভাবে ৩,৪৬৪,১৫৪,২৭৪.০০ টাকা বরাদ্দ এবং ১২ মাসের সময়সীমার চুক্তিতে কাজ নেয়। অষ্টগ্রামে নির্মাণাধীন ভবনের ৩৫.৪% কাজ শেষ হয়েছে বলে কাগজে-কলমে দেখানো হয়েছে। এই কাজের বিপরীতে ৩৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৩ টাকা ৮২ পয়সা বিল পরিশোধ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিনটি পাইলিং পিলার পড়ে আছে এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের একটি ছোট টিনশেড ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই। অথচ কোনো কাজ না করেই প্রায় ৩৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ‘তাইহান কনসোর্টিয়াম’, যারা গত দুই বছর ধরে লাপাত্তা।

এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্পের প্রকৌশলী আহসান শামীম মোবাইল ফোনে জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘তাইহান ও হোভান’ যৌথভাবে সরকারের সাথে নতুন করে চুক্তি করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি মাস বা আগামী মাসের প্রথম দিকে ভবন নির্মাণ পুরোদমে শুরু হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ নুরে আলম বলেন, তার এই কর্মস্থলে আসার আগেই ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তিনি এসে দেখেন কাজ বন্ধ। এরপর কয়েক দফায় ব্যানবেইস সংশ্লিষ্টরা কাজ শুরু করবে বলেও শুরু করেনি। বিল প্রদান বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।

ব্যানবেইসের সহকারী প্রোগ্রামার মঞ্জুর ই মোর্শেদ জানান, বর্তমানে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে এবং কোরিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সংশোধনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত