মাদারীপুরের রাজৈরে টানা পাঁচ দিনের শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। হিমেল বাতাস, ঘন কুয়াশা আর সূর্যের মুখ দেখা না যাওয়ায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এলাকা থাকে নিস্তব্ধ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
ভোরের দিকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকে দিগন্ত। দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ধীরগতির যানবাহনের কারণে কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না। কোথাও কোথাও স্বাভাবিক চলাচল প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
এই শীতে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়েছে দিনমজুর, কৃষিকাজ, রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও অটোরিকশাচালকদের ওপর। কনকনে ঠাণ্ডায় ভোরে কাজে বের হওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব হচ্ছে না। আবার কেউ বাধ্য হয়ে বের হলেও পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় কাঁপতে কাঁপতেই কাজ করতে হচ্ছে। ফলে আয় কমে যাওয়ায় বেড়েছে সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজৈর ও টেকেরহাট বন্দরসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে বসা দোকানগুলোতে পুরোনো সোয়েটার, হুডি, চাদর, কম্বল ও শিশুদের শীতের পোশাক কিনতে সকাল থেকেই ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে বেশি দামের কারণে অনেকেই প্রয়োজন অনুযায়ী সব কাপড় কিনতে পারছেন না। টেকেরহাট বন্দর বাজারে গরম কাপড় কিনতে আসা এক দিনমজুর দম্পতি জানান, পরিবারের শিশু ও বয়স্ক সদস্যদের জন্য কাপড় কিনতে এসেছিলেন। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত একটি শিশুর জন্যই শুধু কাপড় কিনে ফিরতে হয়েছে।
অন্যদিকে শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব পড়ছে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের ওপরও। সন্ধ্যার পর ঠান্ডা আরো বেড়ে যায়। গভীর রাতে অনেক মানুষ খোলা আকাশের নিচে কিংবা রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন।
পাইকপাড়া ইউনিয়নের চরকাশীমপুর গ্রামের রিকশাভ্যানচালক ইলিয়াস বলেন, টানা কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে ঠিকমতো কাজ করতে পারছেন না। এতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা, শৈত্যপ্রবাহ আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকলে দুর্ভোগ বাড়বে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

