৩৫ গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে

টিপু সুলতান, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৬: ১৩
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৫, ০৬: ১৪

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের দুই ইউনিয়নের জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশ-কাঠের সাঁকো। তাদের চলাচল করতে হচ্ছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। স্বাধীনতার পর থেকে এই জনপদে বসবাসরত দুই ইউনিয়নের অন্তত ৩৫ গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার ছাত্রছাত্রী ও কৃষকসহ হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ সমাপ্ত না হওয়ার কারণে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে ব্রিজের কাজ দীর্ঘদিন ধরে শেষ না হওয়ায় অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে এই জামাল ও কোলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

এই দুই ইউনিয়নের সংযোগস্থলে থাকা পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে নতুন ব্রিজ নির্মাণকাজ শুরু হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা ধীরগতিতে চলছে। ফলে এই অঞ্চলের প্রায় ৩৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পুরাতন ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় জননিরাপত্তার স্বার্থে সেটি ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু নতুন ব্রিজ নির্মাণে কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে না। কাজের গতি এতটাই ধীর যে, বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে তবুও ব্রিজের কাজ এখনো সমাপ্ত করতে পারেনি। দুই ইউনিয়নের জনসাধারণের চলাচলের জন্য বাঁশ-কাঠের সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। সেটিও একাধিকবার সংস্কার করার পর ভারী বর্ষার পানিতে ভেসে গেছে। বর্তমানে সাঁকো না থাকায় জনসাধারণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বেগবতী নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সাঁকোর দুই পাশ ভেঙে যাচ্ছে ও পানির স্রোত বৃদ্ধি পেয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে প্রবল স্রোতের কারণে সেতুটি ভেঙে গেছে।

বিজ্ঞাপন

সেতুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত সড়কে ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে আশপাশের ৩৫ গ্রামের মানুষ। ঠিকাদার ২০ মাসে ও ব্রিজের কাজ শেষ করতে পারেনি। বেগবতী নদীর ওপর কোলাবাজার এলাকায় চার কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। মেসার্স জাকাউল্লাহ, শামিম অ্যান্ড ব্রাদার্স, মেসার্স মিজানুর রহমান ট্রেডার্স যৌথভাবে সেতুর কাজ করছে। নির্মাণকাজ ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে শেষ করার কথা। সেতুর দুই পাশের দুটি পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলে প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদিত হলেও সময়মতো পরিবহনের ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলো বাজারে পৌঁছানো যাচ্ছে না। ফলে চাষিরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ও ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ ছাড়া স্থানীয় গাড়ি চালকরা মোটরভ্যান, নসিমন, করিমন, ভ্যান রিকশা চলাচল করতে পারছে না। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এলাকার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমাদের কথা কেউ শোনছে না, কাজ শুরু করে কোনো কারণ ছাড়াই ঠিকাদার ফেলে রেখেছে এবং কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীও বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত