শ্যামনগরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দুদকের অভিযান, ৪ জনের কারাদণ্ড

উপজেলা প্রতিনিধি, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা)
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ৩৬

শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আশপাশের কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ অভিযানে চারজনকে কারাদণ্ড ও তিনজনকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক জাহিদ ফজলের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযান চালানো হয় শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে।

বিজ্ঞাপন

দুদক জানায়, হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে কিছু অসাধু দালাল চিকিৎসক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে যোগসাজশ করে সাধারণ রোগীদের প্রভাবিত করে কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রাইভেট চিকিৎসা নিতে বাধ্য করছিল। এ সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে সাতজনকে আটক করা হয়। তারা হলেন ইসমাইলপুরের মর্জিনা খাতুন (৬০), চিংড়িখালির মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে মো. সাগর হোসেন রনি (২০), শিবপদ বৈদ্যের ছেলে অচিন্ত কুমার বৈদ্য (৪৫), আলমগীর হোসেনের ছেলে আল মামুন বাদশা (২৫), পরানপুরের নিমাই চন্দ্র মণ্ডলের ছেলে প্রসেনজিৎ কুমার মণ্ডল (৩১), কৈখালীর নূর ইসলাম গাজীর ছেলে রেজাউল গাজী (৪২) এবং বংশীপুরের গৌরপদ ঘোষের ছেলে মিলন কুমার ঘোষ (১৮)।

দুদক কর্মকর্তা জাহিদ ফজল বলেন, আমরা সাধারণ রোগীর ছদ্মবেশে হাসপাতালে প্রবেশ করি এবং দুই ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে দেখি কীভাবে দালালরা কমিশনের বিনিময়ে রোগীদের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছে। পরে সাতজনকে হাতে-নাতে ধরি।

অভিযান শেষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাগর হোসেন রনি, মিলন কুমার ঘোষ, রেজাউল গাজী ও আল মামুন বাদশাকে তিন দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এছাড়া অচিন্ত কুমার বৈদ্য, প্রসেনজিৎ কুমার মণ্ডল ও মর্জিনা খাতুনকে ২০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

দুদক কর্মকর্তা আরও জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সংলগ্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর অনিয়ম, লাইসেন্স নবায়ন ও অন্যান্য তথ্য উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেও প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, অভিযানের বিষয়ে আমি আজই জানতে পেরেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদকের কর্মকর্তা জাহিদ ফজল বলেন,সমাজের যে কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম ও দালালচক্রের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাই।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত