আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

সাংবাদিকের সোর্সকে মারধর ও অপপ্রচার

সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কাঁকড়া আহরণকালে আটক ২০

উপজেলা প্রতিনিধি, মোংলা (বাগেরহাট)
সুন্দরবনে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কাঁকড়া আহরণকালে আটক ২০

সুন্দরবনে চলমান তিন মাসের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মঙ্গলবার গভীর রাতে ২০টি নৌকায় প্রায় ২০ লাখ টাকার কাঁকড়া আহরণের অভিযোগ উঠেছে একদল প্রভাবশালী জেলের বিরুদ্ধে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় এক সাংবাদিক বিষয়টি চটেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলামকে জানান। পরবর্তীতে নৌকাগুলো আটক হলেও অজ্ঞাত কারণে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার গভীর রাতে প্রায় ২০টি নৌকা সুন্দরবনের ভেতর থেকে কাঁকড়া মেরে ফিরছিল। যার বাজার মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকার মতো। প্রথমে মোংলা থানায় বিষয়টি জানানো হলেও কর্তব্যরত কর্মকর্তার ঘুমন্ত থাকার কারণে পরবর্তীতে চটেরহাট ফাঁড়িতে খবর দেওয়া হয়। ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে সোর্স পাঠানোর নির্দেশ দেন। সাংবাদিকের সোর্স মিলন মল্লিক ঘটনাস্থলে গেলে নৌকাগুলো আটক করা হয়। পরে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। আটক জেলেরা সোর্স মিলন মল্লিককে ডাকাত আখ্যা দিয়ে প্রকাশ্যে মারধর করে এবং “চাঁদা নিতে এসেছে”—এমন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। উপস্থিত পুলিশের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে পুলিশ আহত সোর্সকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার এখানেই শেষ নয়—মারধরের এক পর্যায়ে ভীতি প্রদর্শন করে সোর্সের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভিত্তিহীন বক্তব্য ভিডিও ধারণ করা হয় এবং স্থানীয় ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ২ হাজার টাকা চাঁদা দাবির মিথ্যা অপবাদও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় সচেতন মহল এ অপপ্রচারকে সাংবাদিকের ভাবমূর্তি নষ্ট ও ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে।

পরবর্তীতে রহস্যজনকভাবে আটক নৌকাগুলো মুক্তি দেওয়া হয়, যা নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে— সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কীভাবে ২০টি নৌকার বহর বনাঞ্চলে প্রবেশ করল, কাঁকড়া আহরণ করল এবং আটক হওয়ার পরও প্রশাসনের চোখের সামনে মুক্তি পেল? এ ঘটনার পেছনে কোনো প্রভাবশালী চক্রের যোগসূত্র রয়েছে কি না— তা নিয়েও জল্পনা চলছে।

এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোংলা চটেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, নৌকাগুলো কাঁকড়া বহন করছিল। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে, সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (ডিএফও) রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে বনবিভাগের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় না আনলে সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষায় প্রশাসনের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন