খুলনা ওয়াসা

ভান্ডার থেকে ছয় মাসে কোটি টাকার পানির মিটার চুরি

খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ০৫: ৪৭

খুলনা ওয়াসার তিনটি ভান্ডার থেকে গত ছয় মাসে আড়াই হাজারের বেশি নতুন ও পুরোনো পানির মিটার চুরি হয়ে গেছে। কোটি টাকা মূল্যের মালামাল লোপাট হলেও কর্তৃপক্ষ থানায় শুধুমাত্র সাধারণ ডায়রি করে দায় সেরেছে।

প্রতিটি চুরির ঘটনার সঙ্গে ওয়াসারই কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলে কোনো বিভাগীয় তদন্ত কমিটিও গঠন হয় না বলে অভিযোগ নির্ভরশীল সূত্রের।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, গত ১২ মে খুলনা ওয়াসার হাদিস পার্ক সংলগ্ন পুরাতন অফিসের (বর্তমান ‘ক’ ও ‘খ’ জোন) নিচতলায় ভান্ডার কক্ষে রক্ষিত এক হাজার ২৯২টি (২০ মিমি ও ২৫ মিমি ব্যাসের) পুরোনো ও অকেজো পানির মিটার এবং ৬৪টি দুই ইঞ্চি ব্যাসের নতুন খোলা মিটার রহস্যজনকভাবে চুরি হয়।

পরদিন ভান্ডার কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী বিপ্লব মজুমদার খুলনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (নং-৮৩৪, তারিখ ১৩-০৫-২৫) করেন। জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ভান্ডাররক্ষক রিজওয়ান চৌধুরী তাকে জানান কিছু খোলা মিটার পাওয়া যাচ্ছে না।

সূত্রটি আরো জানায়, নতুন দুই ইঞ্চি ব্যাসের মিটারের একেকটির দাম ১১ হাজার ৪২৫ টাকা। সে হিসেবে চুরি যাওয়া নতুন ৬৪টি মিটারের দাম ৭ লাখ ৩১ হাজার ২০০ টাকা। পুরোনো মিটার একটির দাম ৫ হাজার ৭০০ টাকা হিসেবে চুরি যাওয়া মিটারের দাম দাঁড়ায় ৭৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪০০ টাকা।

চুরির ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জোনাল অফিসের ভান্ডার কর্মকর্তা উপসহকারী প্রকৌশলী বিপ্লব মজুমদার বলেন, অফিসের তিনতলায় ভান্ডার কক্ষের তালা ভাঙার খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি কোনো মালামাল খোয়া যায়নি।

পরে নিচতলায় স্টোর রুমে গিয়ে দেখি তালা দুমড়ানো-মোচড়ানো। চাবি দিয়ে খুলতে না পেরে ভেঙে ফেলি। ভেতরে গিয়ে উল্লিখিত মিটারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কি না জানতে চাইলে ওই উপসহকারী প্রকৌশলী বলেন, থানায় জিডি করার পর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এমডি বরাবর আবেদন করেছি। কমিটি হয়েছে কি না আমার জানা নেই।

এর আগে গত বছরের ১০ নভেম্বর খালিশপুর চরেরহাট জোনাল অফিসের (‘খ’ অঞ্চল) স্টোর রুম থেকে ৭৬৬টি পুরোনো পানির মিটার চুরি হয়ে যায়। ওই ঘটনায় সহকারী প্রকৌশলী ও আঞ্চলিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম সরদার খালিশপুর থানায় শুধু একটি জিডি করে দায় সারেন। ওই ঘটনায়ও কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি।

এর এক মাস পরই দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা জোনাল (‘ক’ অঞ্চল) অফিসের স্টোর রুম থেকে ৫ শতাধিক পুরোনো মিটার চুরি হয়ে যায়। ওই ঘটনায় জোনাল কর্মকর্তা আশিকুর রহমান স্থানীয় থানায় জিডি করেন। তবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

এদিকে জোনাল অফিসগুলোর স্টোর রুম থেকে সম্প্রতি চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়া এবং প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না জানতে ওয়াসার সচিব প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে এমডি হুসাইন শওকতের সঙ্গে কথা বলুন। আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

সার্বিক বিষয়ে জানতে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হুসাইন শওকতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত