আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ঘন কুয়াশায় পথ হারিয়ে যমুনা নদীতে আটকা নারী-শিশুসহ ৪৭ বরযাত্রী

উপজেলা প্রতিনিধি, মাদারগঞ্জ (জামালপুর)

ঘন কুয়াশায় পথ হারিয়ে যমুনা নদীতে আটকা নারী-শিশুসহ ৪৭ বরযাত্রী

ঘন কুয়াশায় পথ হারিয়ে যমুনা নদীর মাঝখানে আটকা পড়েছে নারী-শিশুসহ ৪৭ জন বরযাত্রী বহনকারী একটি নৌকা। শুক্রবার রাত আনুমানিক ৮টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দী থেকে জামালপুরের মাদারগঞ্জগামী নৌকাটি যমুনার মাঝ নদীতে আটকে যায়। রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বয়স্করা তীব্র শীতে দুর্ভোগে পড়েছেন।

বিজ্ঞাপন

মুঠোফোনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরের বড় ভাই রাশেদুল ইসলাম বাবু।

আটকা পড়া নৌকার যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার সকালে মাদারগঞ্জ উপজেলার তারতাপাড়া এলাকার সানোয়ার হোসেনের ছেলে নিলয় হাসান ছানির (২০) বিয়ে উপলক্ষে ৪৭ জন বরযাত্রী বগুড়া শহরের সাবগ্রাম চারমাথা এলাকায় যান। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর-কনেসহ সন্ধ্যা ৬টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার কলীতলা ঘাট থেকে মাদারগঞ্জের উদ্দেশ্যে নৌকাযোগে রওনা দেন তারা।

নৌকাটি যমুনার মাঝ নদীতে পৌঁছালে ঘন কুয়াশার কারণে নৌকার মাঝি দিকনির্দেশনা হারিয়ে ফেলেন। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কুয়াশার মধ্যে পথ খুঁজে না পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলেও ঘন কুয়াশার কারণে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। পরে উপায় না পেয়ে নৌকাটি যমুনার মাঝ নদীতেই নোঙর করে অবস্থান নেয়।

নৌকায় ১৭ জন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে। শিশুদের মধ্যে ৪ জনের বয়স ১ থেকে দেড় বছরের মধ্যে।

বরযাত্রী বজলুর রহমান বলেন, ‘যাত্রার সময় তেমন কুয়াশা ছিল না। মাঝ নদীতে পৌঁছানোর পর হঠাৎ কুয়াশা এত ঘন হয়ে যায় যে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। ৯৯৯-এ কল দিয়েছি, কিন্তু তারাও কিছু করতে পারেনি। ছোট বাচ্চা ও নারী নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’

বরের বড় ভাই রাশেদুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘একদিকে তীব্র শীত, অন্যদিকে চরম নিরাপত্তাহীনতায় সবাই আতঙ্কিত। অনেক জায়গায় যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান পাইনি। এখন এই শীতে পলিথিন মুড়িয়ে মাঝ নদীতে অবস্থান করছি। মোবাইলের চার্জও শেষ হয়ে যাচ্ছে।’

নৌকার মাঝি আবুল কাশেম জানান, টর্চলাইটের আলোতে মাত্র পাঁচ ফুট পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। কোন দিকে নৌকা চালাতে হবে সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। নদীতে পানি কম থাকায় একটু এগোলেই নৌকা আটকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য নোঙর করে বসে আছি। ধারণা করছি, সারিয়াকান্দী ও মাদারগঞ্জের জামথল ঘাটের মাঝামাঝি কোনো স্থানে অবস্থান করছি। এখন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।

মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, এলাকাটি সারিয়াকান্দী থানার অন্তর্ভুক্ত। বিষয়টি নিয়ে সারিয়াকান্দী থানা এবং যমুনার তীরবর্তী এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে নৌকার কাছাকাছি পৌঁছানো যাচ্ছে না। নৌ-পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন