ময়মনসিংহের দুই কেন্দ্র
মো. আব্দুল কাইয়ুম, ময়মনসিংহ
দ্রোহ, প্রেম আর সাম্যের প্রতীক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালিদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান দখল করে আছেন। তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কেটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুর ও কাজীর শিমলায়। এখানকার মাটি, মানুষ, প্রকৃতি এবং বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত কবির স্মৃতিগুলো আজও তার সাক্ষ্য বহন করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে অযত্ন-অবহেলা আর ধুলোয় ঢাকা পড়ে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে জাতীয় কবির অমূল্য স্মৃতিগুলো।
ত্রিশালের দরিরামপুর হাই স্কুলে কিশোর নজরুলের সাহিত্য বিকাশের সূচনা হয়েছিল। এখানে পড়াশোনার সময় কবির মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল বিদ্রোহী আত্মা ও সংস্কৃতির বীজ। ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি ১৯৬৪ সালে কবির নামে ত্রিশাল নজরুল একাডেমি নামকরণ করা হয় এবং ২০১৮ সালে সরকারিকরণ সম্পন্ন হয়। বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে কবির স্মৃতিবিজড়িত দুটি কেন্দ্র। একটি দরিরামপুরে ‘নজরুল ইনস্টিটিউট’ ও অন্যটি কাজীর শিমলায় ‘নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র’। এ দুই স্থানে কবি পড়াশোনা করেছেন, গান গেয়েছেন, কবিতা লিখেছেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে মানবিকতার দর্শন গড়ে তুলেছিলেন।
দুটি স্মৃতিকেন্দ্রেই সংরক্ষিত রয়েছে কবির ব্যবহৃত কিছু অমূল্য নিদর্শন। পুরোনো গ্রামোফোন, এইচএমভি কোম্পানির তৈরি রেকর্ড, বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি ও উর্দু ভাষায় লেখা কবির হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি, আলোকচিত্র ও কিছু ব্যক্তিগত সামগ্রীর মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় কবির স্মৃতি। দর্শনার্থীরা যখন এগুলো দেখেন, তখন মনের অজান্তেই যেন তারা এক মুহূর্তের জন্য ফিরে যান শতবর্ষ আগের সেই দরিরামপুরে; যেখানে কিশোর নজরুল তার কণ্ঠে কখনো সুর তুলতেন, কবিতা আবৃত্তি করতেন। কখনো আবার গ্রামের মসজিদে আজান দিয়ে মুসল্লিদের নামাজের জন্য আহ্বান করতেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, স্মৃতিকেন্দ্রগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত করা হয়নি নতুন কোনো সংগ্রহ। প্রদর্শনীগুলো পুরোনো হয়ে গেছে, নেই কোনো ব্যাখ্যামূলক প্যানেল। ফলে কবির জীবন-সাহিত্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী দর্শনার্থীরা এখানে এসে নিরাশ হচ্ছেন। তাদের মতে, জাদুঘর বা স্মৃতিকেন্দ্র শুধু প্রদর্শনী কেন্দ্র নয়। এটি হতে হবে একটি জীবন্ত গল্প বলার জায়গা; যেখানে দর্শনার্থীরা অনুভব করবেন কবির ভাবনা, সংগ্রাম ও স্বপ্ন।
২০০৮ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় স্মৃতিকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়ে রয়েছে দোটানা। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, স্মৃতিকেন্দ্রগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তদারক করছে। অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, স্থানীয় পর্যায়েই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্মৃতিকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা।
স্মৃতিকেন্দ্রগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থাও শোচনীয়। ভবনের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। নেই আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পাণ্ডুলিপিগুলোর কালি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। সংরক্ষিত সামগ্রী রাখার তাকগুলো ক্ষয়ে গেছে। নিরাপত্তার জন্য স্থাপিত ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরাও অচল। দর্শনার্থীদের জন্য নেই বিশুদ্ধ পানীয় ও মানসম্মত শৌচাগার ব্যবস্থা। তবু প্রতিদিনই কিছু মানুষ আসেন জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত কেন্দ্রগুলোতে।
জাতীয় কবির জীবনের একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় জড়িত ত্রিশালের সঙ্গে। এখানেই কাজী রফিজুল্লাহর (রফিজুদ্দিন) আশ্রয়ে থেকে কিশোর নজরুল পড়াশোনা করেছেন, গান লিখেছেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও নাটকে অংশ নিয়েছেন। পরবর্তী জীবনে কবির মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক আদর্শ বিকশিত হয়, তার ভিত্তি গড়ে ওঠে ত্রিশালের এ মাটিতে।
স্থানীয়দের প্রস্তাব, দরিরামপুর হাই স্কুলকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করে নজরুল গবেষণার একটি যৌথ কর্মসূচি চালু করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিল্ড স্কুল বা নজরুল সেমিনার আয়োজন করা হলে গবেষণার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে ত্রিশাল–ময়মনসিংহকে ঘিরে কবির নামে পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করা গেলে দেশি–বিদেশি দর্শনার্থীরা কবির জীবন ও কর্মকে নতুনভাবে জানার সুযোগ পাবেন।
নজরুল স্মৃতিকেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, স্মৃতিকেন্দ্রগুলোতে লোকবল কম। সরকার চাইলে লোকবল বাড়ানোর পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্মৃতিকেন্দ্রগুলোর জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিতে পারে। সেখানে পাণ্ডুলিপি, গ্রামোফোন রেকর্ড ও অন্যান্য নিদর্শনের ডিজিটাল আর্কাইভ থাকবে। প্রতিটি প্রদর্শনীর পাশে থাকবে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা ব্যাখ্যা প্যানেল, যাতে করে দেশি–বিদেশি পর্যটক সবাই সহজে বুঝতে পারেন। এছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য কিউআর কোডের দিয়ে অডিও গাইডের পাশাপাশি কবির লেখা গান, কবিতা ও গল্প শোনার ব্যবস্থা করা যায়।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় প্রশাসন যদি বছরে অন্তত একবার নজরুল ফেস্ট আয়োজন করে, তাহলে সেটি দেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক উৎসব হতে পারে। সেখানে নজরুলসংগীত, নাটক, আবৃত্তি ও গবেষণাপত্র উপস্থাপন থাকবে । তরুণ প্রজন্মকে যুক্ত করতে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্মৃতিকেন্দ্রের গাইড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। এতে তারা নিজেরাই হবে কবির ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও আবৃত্তিকার জিহাদ রায়হান বলেন, নজরুল স্মৃতিকেন্দ্রের উন্নয়নে কেবল অর্থ বরাদ্দ নয়, প্রয়োজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় জাদুঘর ও নজরুল ইনস্টিটিউট যদি যৌথভাবে কাজ করে, তাহলে এ দুটি কেন্দ্র আন্তর্জাতিক মানের মিউজিয়ামে রূপ দেওয়া যায়। একই সঙ্গে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ও দর্শনার্থী সেবার মান উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতি বছর নজরুলজয়ন্তীতে অংশগ্রহণ করি; নজরুলের নাম নিয়ে অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু স্মৃতিকেন্দ্রের প্রতি যে যত্ন থাকা উচিত, তা কেউ নেয় না।
এ ব্যাপারে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী বলেন, এটা মূলত নজরুল ইনস্টিটিউটের অধীনে। সেখান থেকেই দুটি স্মৃতিকেন্দ্রের দেখাশোনা করা হয়। আমরাও চেষ্টা করি আপডেট করে রাখার জন্য। তবে এ দুটি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের প্রয়োজন। ভবনগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। প্রতি বছরই ত্রিশালে তিন দিনব্যাপী নজরুল জন্মজয়ন্তী উৎসবের আয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক দর্শনার্থী ও গবেষকরা আসেন এবং দুটি স্মৃতিকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
দ্রোহ, প্রেম আর সাম্যের প্রতীক জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালিদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী স্থান দখল করে আছেন। তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় কেটেছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার দরিরামপুর ও কাজীর শিমলায়। এখানকার মাটি, মানুষ, প্রকৃতি এবং বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত কবির স্মৃতিগুলো আজও তার সাক্ষ্য বহন করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে অযত্ন-অবহেলা আর ধুলোয় ঢাকা পড়ে ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে জাতীয় কবির অমূল্য স্মৃতিগুলো।
ত্রিশালের দরিরামপুর হাই স্কুলে কিশোর নজরুলের সাহিত্য বিকাশের সূচনা হয়েছিল। এখানে পড়াশোনার সময় কবির মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছিল বিদ্রোহী আত্মা ও সংস্কৃতির বীজ। ১৯১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি ১৯৬৪ সালে কবির নামে ত্রিশাল নজরুল একাডেমি নামকরণ করা হয় এবং ২০১৮ সালে সরকারিকরণ সম্পন্ন হয়। বিদ্যালয়ের পাশেই রয়েছে কবির স্মৃতিবিজড়িত দুটি কেন্দ্র। একটি দরিরামপুরে ‘নজরুল ইনস্টিটিউট’ ও অন্যটি কাজীর শিমলায় ‘নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র’। এ দুই স্থানে কবি পড়াশোনা করেছেন, গান গেয়েছেন, কবিতা লিখেছেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মিশে মানবিকতার দর্শন গড়ে তুলেছিলেন।
দুটি স্মৃতিকেন্দ্রেই সংরক্ষিত রয়েছে কবির ব্যবহৃত কিছু অমূল্য নিদর্শন। পুরোনো গ্রামোফোন, এইচএমভি কোম্পানির তৈরি রেকর্ড, বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি ও উর্দু ভাষায় লেখা কবির হাতে লেখা পাণ্ডুলিপি, আলোকচিত্র ও কিছু ব্যক্তিগত সামগ্রীর মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় কবির স্মৃতি। দর্শনার্থীরা যখন এগুলো দেখেন, তখন মনের অজান্তেই যেন তারা এক মুহূর্তের জন্য ফিরে যান শতবর্ষ আগের সেই দরিরামপুরে; যেখানে কিশোর নজরুল তার কণ্ঠে কখনো সুর তুলতেন, কবিতা আবৃত্তি করতেন। কখনো আবার গ্রামের মসজিদে আজান দিয়ে মুসল্লিদের নামাজের জন্য আহ্বান করতেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, স্মৃতিকেন্দ্রগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত করা হয়নি নতুন কোনো সংগ্রহ। প্রদর্শনীগুলো পুরোনো হয়ে গেছে, নেই কোনো ব্যাখ্যামূলক প্যানেল। ফলে কবির জীবন-সাহিত্য সম্পর্কে জানতে আগ্রহী দর্শনার্থীরা এখানে এসে নিরাশ হচ্ছেন। তাদের মতে, জাদুঘর বা স্মৃতিকেন্দ্র শুধু প্রদর্শনী কেন্দ্র নয়। এটি হতে হবে একটি জীবন্ত গল্প বলার জায়গা; যেখানে দর্শনার্থীরা অনুভব করবেন কবির ভাবনা, সংগ্রাম ও স্বপ্ন।
২০০৮ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় স্মৃতিকেন্দ্রের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়ে রয়েছে দোটানা। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, স্মৃতিকেন্দ্রগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তদারক করছে। অন্যদিকে মন্ত্রণালয়ের দপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, স্থানীয় পর্যায়েই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্মৃতিকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা।
স্মৃতিকেন্দ্রগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থাও শোচনীয়। ভবনের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। নেই আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে পাণ্ডুলিপিগুলোর কালি ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। সংরক্ষিত সামগ্রী রাখার তাকগুলো ক্ষয়ে গেছে। নিরাপত্তার জন্য স্থাপিত ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি) ক্যামেরাও অচল। দর্শনার্থীদের জন্য নেই বিশুদ্ধ পানীয় ও মানসম্মত শৌচাগার ব্যবস্থা। তবু প্রতিদিনই কিছু মানুষ আসেন জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত কেন্দ্রগুলোতে।
জাতীয় কবির জীবনের একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় জড়িত ত্রিশালের সঙ্গে। এখানেই কাজী রফিজুল্লাহর (রফিজুদ্দিন) আশ্রয়ে থেকে কিশোর নজরুল পড়াশোনা করেছেন, গান লিখেছেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও নাটকে অংশ নিয়েছেন। পরবর্তী জীবনে কবির মধ্যে যে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক আদর্শ বিকশিত হয়, তার ভিত্তি গড়ে ওঠে ত্রিশালের এ মাটিতে।
স্থানীয়দের প্রস্তাব, দরিরামপুর হাই স্কুলকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত করে নজরুল গবেষণার একটি যৌথ কর্মসূচি চালু করা যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ফিল্ড স্কুল বা নজরুল সেমিনার আয়োজন করা হলে গবেষণার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে ত্রিশাল–ময়মনসিংহকে ঘিরে কবির নামে পর্যটনকেন্দ্র তৈরি করা গেলে দেশি–বিদেশি দর্শনার্থীরা কবির জীবন ও কর্মকে নতুনভাবে জানার সুযোগ পাবেন।
নজরুল স্মৃতিকেন্দ্রের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, স্মৃতিকেন্দ্রগুলোতে লোকবল কম। সরকার চাইলে লোকবল বাড়ানোর পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্মৃতিকেন্দ্রগুলোর জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিতে পারে। সেখানে পাণ্ডুলিপি, গ্রামোফোন রেকর্ড ও অন্যান্য নিদর্শনের ডিজিটাল আর্কাইভ থাকবে। প্রতিটি প্রদর্শনীর পাশে থাকবে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা ব্যাখ্যা প্যানেল, যাতে করে দেশি–বিদেশি পর্যটক সবাই সহজে বুঝতে পারেন। এছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য কিউআর কোডের দিয়ে অডিও গাইডের পাশাপাশি কবির লেখা গান, কবিতা ও গল্প শোনার ব্যবস্থা করা যায়।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় প্রশাসন যদি বছরে অন্তত একবার নজরুল ফেস্ট আয়োজন করে, তাহলে সেটি দেশের অন্যতম সাংস্কৃতিক উৎসব হতে পারে। সেখানে নজরুলসংগীত, নাটক, আবৃত্তি ও গবেষণাপত্র উপস্থাপন থাকবে । তরুণ প্রজন্মকে যুক্ত করতে স্থানীয় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে স্মৃতিকেন্দ্রের গাইড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। এতে তারা নিজেরাই হবে কবির ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও আবৃত্তিকার জিহাদ রায়হান বলেন, নজরুল স্মৃতিকেন্দ্রের উন্নয়নে কেবল অর্থ বরাদ্দ নয়, প্রয়োজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পরিকল্পনা। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় জাদুঘর ও নজরুল ইনস্টিটিউট যদি যৌথভাবে কাজ করে, তাহলে এ দুটি কেন্দ্র আন্তর্জাতিক মানের মিউজিয়ামে রূপ দেওয়া যায়। একই সঙ্গে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ও দর্শনার্থী সেবার মান উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনকে দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতি বছর নজরুলজয়ন্তীতে অংশগ্রহণ করি; নজরুলের নাম নিয়ে অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু স্মৃতিকেন্দ্রের প্রতি যে যত্ন থাকা উচিত, তা কেউ নেয় না।
এ ব্যাপারে ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী বলেন, এটা মূলত নজরুল ইনস্টিটিউটের অধীনে। সেখান থেকেই দুটি স্মৃতিকেন্দ্রের দেখাশোনা করা হয়। আমরাও চেষ্টা করি আপডেট করে রাখার জন্য। তবে এ দুটি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের প্রয়োজন। ভবনগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। প্রতি বছরই ত্রিশালে তিন দিনব্যাপী নজরুল জন্মজয়ন্তী উৎসবের আয়োজন হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক দর্শনার্থী ও গবেষকরা আসেন এবং দুটি স্মৃতিকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা হলে বর্তমান সরকার আর কোনো প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারবে না। সে কারণে দ্রুত পিডি নিয়োগ করে নভেম্বরেই কাজ শুরু করতে হবে। সেটি করা না হলে সারা দেশে এই আন্দোলন ছড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে চীন টাকা না দিলেও নিজের টাকা দিয়ে কাজ শুরুর দাবি জানান তারা।
১ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের গৌরীপুরে জহিরুল ইসলাম মিঠু হত্যা মামলায় পলাতক দুই ভাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২ ঘণ্টা আগেপরিবারের পক্ষ থেকে জানা গেছে, ১১ বছর বয়সে ১৯৩৫ সালে শামসুদ্দিন ব্রিটিশ-ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন। তার সৈনিক নম্বর ছিল ৬৪১৪৬০। ১৯৩৯ থেকে শুরু করে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত পুরো ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ময়দানে ছিলেন এ যোদ্ধা।
২ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার ভেতরে পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক সাবেক নেতা। ঘটনার পর তাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আটক মো. রায়হান হাটহাজারি কলেজ শিবিরের সাবেক সভাপতি।
২ ঘণ্টা আগে