জলাশয়ে মাছ উৎপাদন ৪০ শতাংশে নেমে গেছে: ফরিদা আখতার

প্রতিনিধি, বাকৃবি
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৯
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ৫৯

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. ফরিদা আখতার বলেছেন, একসময় দেশে মুক্ত জলাশয়ের মাছ উৎপাদন ছিল প্রায় ৬০ শতাংশ আর বদ্ধ জলাশয়ের মাছ ৪০ শতাংশ। কিন্তু বর্তমানে উল্টে গিয়ে মুক্ত জলাশয়ের উৎপাদন নেমে এসেছে ৪০ শতাংশে। এ পরিবর্তন আমরা চাই না। কোনো ক্ষেত্রেই যেন উৎপাদন কমে না যায় সে বিষয়ে আমাদের এখনই কাজ করতে হবে।

রোববার সকালে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) অডিটোরিয়ামে ‘বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন (২০২৫-২৬)’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ড. ফরিদা আখতার বলেন, জমি ভরাট হচ্ছে, হাওরে ট্যুরিজম বাড়ছে কিন্তু এগুলো মাছের প্রজনন ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করছে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে না। পরিবেশের ক্ষতির কথা বলা হলেও মাছের ক্ষতির কথা তেমনভাবে বলা হয় না। তাই মাছের প্রজনন মৌসুমে নিয়ন্ত্রিত ট্যুরিজমের নীতিমালা জরুরি। কৃষিতে কীটনাশকের ব্যবহার পরবর্তীতে জলাশয়ের মাছের উপর কী প্রভাব ফেলছে, সে বিষয়ে এখনও গবেষণা হয়নি। বিএফআরআইয়ের মাধ্যমে এ ধরনের গবেষণা করে প্রয়োজনীয় সমাধান বের করতে হবে। অবৈধ জালের ব্যবহারও বন্ধ করা জরুরি।

কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ফারাহ শাম্মী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএফআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আশরাফুল আলম গত এক বছরের গবেষণা অগ্রগতি উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, ইনস্টিটিউটের গবেষণায় সুবর্ণ রুই, পুষ্টি সমৃদ্ধ ছোট মাছ চাষ প্রযুক্তি, দেশীয় প্রজাতির প্রজনন ও সংরক্ষণে সফলতা, রাঁজপুটি উদ্ভাবন, বটম ক্লিন পদ্ধতিতে দেশীয় মাছ চাষ, ডিএনএ বারকোডিংয়ের মাধ্যমে ৭৫টি প্রজাতি শনাক্তকরণ, মাছের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন, ছোট চিংড়ির চাষ ব্যবস্থাপনা, কাপ্তাই লেকে কার্পজাতীয় নতুন প্রজাতি শনাক্তকরণ, ইলিশ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, হাওর সম্পদ সংরক্ষণ, উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষ, কুঁচিয়া ও কৈ মাছের চাষ, সীড উইড প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং সুনীল অর্থনীতিতে মৎস্য খাতের সম্ভাবনা নিয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে।

দিনব্যাপি আয়োজনে টেকনিক্যাল সেশনে বিএফআরআইয়ের ৫টি কেন্দ্র ও ৫টি উপকেন্দ্র থেকে আগত বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাগণ ৫০ টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

কর্মশালা শুরুর আগে সকাল ৮টার দিকে সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বিএফআরআইয়ের গবেষণা মাঠ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জায়ান্ট পাঙ্গাস এর কৃত্রিম প্রজনন ও চাষ পদ্ধতি উন্নয়ন প্রকল্প, মহাশোল মাছের ব্রুড উন্নয়ন ও প্রজনন গবেষণা, দেশীয় মাছের সংরক্ষণ, গুড়া চিংড়ি চাষ, কৈ মাছের প্রজনন ও চাষ প্রযুক্তি, কুঁচিয়া মাছের ব্রিডিং এবং বটম ক্লিন ইউনিট প্রকল্পসহ চলমান গবেষণা কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত