সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় সরকারি সম্পত্তি দখল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় শাখার একটি কার্যালয় স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। দলটির স্থানীয় একাধিক নেতা জানিয়েছেন, স্থানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল; সেটি পরিষ্কার করে আমরা অস্থায়ীভাবে কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছিলাম। তবে বিষয়টি আলোচনায় আসায় ইতোমধ্যে সাইনবোর্ড সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন, বিষয়টি তার জানা নেই; তবে ইতোমধ্যে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার ভট্টকাওয়াক মৌজার কামিল মাদ্রাসার সামনের তুলা উন্নয়ন বোর্ডের একটি সরকারি ভবন দখল করে সেখানে দলীয় কার্যালয় স্থাপন করেছে স্থানীয় জামায়াত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের ওই সরকারি ভবনের মূল ফটকে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী– ৫নং ওয়ার্ড কার্যালয়’ শীর্ষক একটি সাইনবোর্ড সাঁটানো রয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর পরই জামায়াতের উল্লাপাড়া উপজেলা শাখার একাধিক নেতা ভবনটিতে কার্যালয় স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করেন। তারা বলছেন, সরকারি সম্পত্তি দখল করে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা অনৈতিক।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক শাজাহান আলী বলেন, ‘এই জায়গার কোনো মালিকানা না থাকায় স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দলীয় কার্যক্রম ও ইসলামের খেদমতের জন্য ব্যবহার করছেন। বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাতের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।’
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন হোসেন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমাদের কোনো স্থানীয় অফিস না থাকায় পরিত্যক্ত ভবনটি পরিষ্কার করে দলের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছিল। বিষয়টি আলোচনায় আসলে আমরা ঐখান থেকে সাইনবোর্ড সরিয়ে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দিয়েছি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, যদি কেউ ভবন দখল করে থাকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যেই উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের এই ভবনটি এক সময় স্থানীয় কৃষকদের জন্য প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত হতো।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এবং ভবনটি যাতে পুনরায় যথাযথ কাজে ব্যবহার হয় সেটা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

