সারিয়াকান্দিতে হচ্ছে নৌবন্দর, সম্ভাবনার হাতছানি

সবুর শাহ্ লোটাস, বগুড়া
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৮

যাচ্ছে নৌবন্দর। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ প্রজ্ঞাপন জারি করে বন্দরের অবকাঠামোগত প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। এরই মধ্যে সারিয়াকান্দি পৌরসভার কালিতলায় সারিয়াকান্দি-মাদারগঞ্জ নৌবন্দর স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।

দীর্ঘ ৪৭ বছর পর নৌবন্দর স্থাপনের খবরে এলাকায় বয়ে যাচ্ছে আনন্দের বন্যা। স্থানীয়রা বলছেন, এ বন্দর চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, বাড়বে কর্মসংস্থানও।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন; তবে প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়িত হয়নি।

১৯৬০ সালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর ও টঙ্গীÑএই ছয় নদীবন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেশে নদীবন্দর আছে ৫৩টি। বর্তমানে যার ৩৪টিই নিষ্ক্রিয়। এবার বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর চালু হলে এটি হবে দেশের ৫৪তম নদীবন্দর। সিলেটের ভোলাগঞ্জ দেশের সর্বশেষ নদীবন্দর।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা (জি) জানান, নৌবন্দর স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু করা হয়েছে। কিন্তু সারিয়াকান্দি উপজেলার দুটি অংশ যমুনার দুই পাশে থাকায় দূরত্বজনিত সমস্যা আছে।

জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, নৌবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলমান। বন্দরটি এ অঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করে আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন ঘটাবে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার রহমান বলেন, যমুনার চরে উৎপাদিত কৃষিপণ্য শেরপুর ও জামালপুর জেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করবে। বন্দরটি চালু হলে কাঁচামালগুলো সহজে পারাপার ও বেকারত্ব দূর করে অর্থনীতি গতিশীল হবে।

বগুড়ার ব্যবসায়ী সাইরুল ইসলাম বলেন, ‘সারিয়াকান্দিতে নৌবন্দর হলে শুধু কৃষিক্ষেত্রেই যে ব্যবসার প্রসার ঘটবে তা নয়; বরং হালকা শিল্প, যন্ত্রপাতি নৌবন্দর দিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর সুযোগ তৈরি হবে। তাছাড়া স্থানীয়ভাবে বেকার লোকজন বিভিন্নরকম কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন এবং আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন ও উন্নয়ন হবে। বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা অল্প খরচে ময়মনসিংহ হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের পণ্য পাঠাতে পারবেন।’

চলতি বছরের ১৬ জুন ‘সারিয়াকান্দি উপজেলা উন্নয়ন আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে নদীবন্দরের দাবিতে মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধিদল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমানের দপ্তরে গিয়ে সাত দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেয়।

যমুনাপাড়ের বাসিন্দা মিজানুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিক রাশেদ মণ্ডল জানান, এখানে নদীবন্দর হলে আমরা উপকৃত হব। কৃষক অল্প খরচে রাজধানীসহ দেশের সব জেলায় পণ্য পাঠাতে পারবেন।

স্থানীয় বিএনপি সভাপতি নুর আজম বাবু বলেন, সারিয়াকান্দিবাসীর সর্বশেষ দাবি এখানে নৌবন্দর স্থাপনের। ৪৭ বছর পর শহীদ জিয়ার সময়ে নেওয়া প্রকল্পটি চালু হলে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে, যা এখন সময়ের দাবি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত