তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হাবিবুল্লাহ (৩০)। ৪ বছর আগে ঋণের টাকায় ৯৩ শতক জমিতে ‘বেনানা ম্যাংগো’ জাতের একটি বাণিজ্যিক আমবাগান গড়ে তোলেন। গত মৌসুমে বাগান থেকে মুনাফা আসে প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা।
চলতি মৌসুমে গাছগুলোতে মুকুল আসার আগেই মাথায় বাজ পড়লো এ তরুণ উদ্যোক্তার! গত শুক্রবার দিবাগত রাতের আঁধারে রহস্যজনকভাবে দুর্বৃত্তরা বাগানের প্রায় সাড়ে তিনশ গাছের মধ্যে ৩৩০টি গাছ কেটে ফেলেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার শিহাড়া ইউনিয়নের চকখলিল (পৌংরইল পলিপাড়া) গ্রামে। এতে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয় বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী আমচাষী হাবিবুল্লাহ।
জানা যায়, দুর্বৃত্তদের চাঁদার টাকা না দেয়ায় ওই আমচাষীর চার বছর ধরে গড়ে তোলা আমবাগান রাতের আঁধারে ধ্বংস করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ছানাউল, মতিবুল, দেলোয়ারসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি একটি প্রভাবশালী দলের নাম ব্যবহার করে তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। জমি নিয়ে আজিজুল ও গফফার নামে একটি পক্ষ আগে বিরোধ সৃষ্টি করলেও আদালতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা সরে দাঁড়ায়। এরপরই চাঁদাবাজ চক্র বিষয়টিকে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ হিসেবে নেয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘গত ১০ দিন ধরে ছানাউল ও তার সহযোগীরা আমাকে চাঁদার টাকা দিতে চাপ দিয়ে আসছিলেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে ৬ থেকে ৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল বাগানে ঢুকে ৩৩০ টি বেড়ে ওঠা আমগাছ কেটে ফেলে।’
তিনি আরও জানান, সকালে বাগানে গিয়ে তিনি দেখতে পান তার সবুজ বাগানটি পরিণত হয়েছে এক ভাঙাচোরা মৃতপ্রায় স্তূপে। কাটা গাছের গুঁড়ি, ছেঁড়া ডালপালা ও শুকিয়ে যাওয়া পাতা শুধু নির্মমতার সাক্ষী হয়ে পড়ে আছে।
এ ঘটনায় ছানাউলসহ পাঁচজনকে আসামি করে পত্নীতলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পত্নীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন আমার দেশকে বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত আমবাগান সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহ্ মো. এনায়েতুর রহমান আমার দেশকে বলেন, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হাবিবুল্লাহ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

