অচলাবস্থা ভেঙে আবার গতি ফিরেছে সিরাজগঞ্জ–বগুড়া রেললাইন নির্মাণকাজে

উপজেলা প্রতিনিধি, (রায়গঞ্জ) সিরাজগঞ্জ
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৪: ০৫
আপডেট : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৪৩

ছয় বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে আবারও গতি ফিরেছে বহুল প্রত্যাশিত সিরাজগঞ্জ–বগুড়া ডুয়েল গেজ রেলপথ প্রকল্পে। ভূমি অধিগ্রহণে সরকার নতুন অর্থ বরাদ্দ দেয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পথে নতুন আশার সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রেলপথটি চালু হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ আরও সহজ হবে। দূরত্ব কমবে প্রায় ১১২ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। সময় সাশ্রয় হবে প্রায় চার ঘণ্টা। এতে কৃষি ও শিল্পপণ্য পরিবহনেও গতি আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেকে প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। তখন প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। শুরুতে ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা থাকলেও পরামর্শক নিয়োগ ও নকশা চূড়ান্তে বিলম্ব হওয়ায় প্রকল্পটি থেমে যায়।

অবশেষে চলতি বছরের ১৬ জুন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিউর রহমানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জ অংশে ৪২০ একর জমির জন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৯৬০ কোটি টাকায়। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা ৪২০ একর জমির জন্য প্রাক্কলিত মূল্য ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা ধার্য করেছি। এর মধ্যে ৯৬০ কোটি টাকা ইতোমধ্যে পেয়েছি।

প্রকল্পের আওতায় বগুড়ার ছোট বেলাইল থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম. মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭৩ কিলোমিটার নতুন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি কাহালু থেকে রাণীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার একটি সংযোগ লাইন হবে, যেখানে নতুন জংশন তৈরি হবে। মোট নয়টি নতুন স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে— শেরপুর, আড়িয়া বাজার, ছোনকা, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ ও কৃষ্ণদিয়া এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য।

প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী জানান, প্রকল্পটি ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতাভুক্ত ছিল। তবে ভারতীয় পক্ষের অনাগ্রহে এখন এটি সেই তালিকা থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নাগরিকরা মনে করছেন, রেলপথটি চালু হলে উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র বদলে যাবে। সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, রেলপথটি চালু হলে পণ্য পরিবহন সহজ হবে, সময় ও খরচ দুটোই কমবে।

বর্তমানে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ার ট্রেনগুলো সান্তাহার, নাটোর ও ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করে। নতুন রেললাইন চালু হলে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের সময়, অর্থ ও ভোগান্তি কমবে।

সব মিলিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত