গুরুদাসপুরে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ-গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ ২

উপজেলা প্রতিনিধি, গুরুদাসপুর (নাটোর)
প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ২১: ১৪

নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। প্রথমে তারা বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি করলেও একপর্যায়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে দুজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করা হলেও মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

জানা গেছে, উপজেলা ও পৌর বিএনপিকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে শনিবার রাত পৌনে ১০টায় শহরের চাঁচকৈড় শিক্ষা সংঘ চত্বরে মতবিনিময় সভা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আজিজ বক্তৃতা করেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এতদিন যারা দলের খবর রাখেনি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে চলেছেন, এখন তারা বিএনপিতে ভেড়ার চেষ্টা করছেন। এসব হাইব্রিড নেতাকর্মী থেকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তাই এ ধরনের বক্তব্যে উত্তেজিত হন এক পক্ষের নেতাকর্মীরা। তারা তাৎক্ষণিক তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান এবং বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এরপর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে সভাটি পণ্ড হয়। বেধে যায় সংঘর্ষ। রাতভর এ পরিস্থিতি বিরাজ করে। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান বাবলু ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যান যৌথবাহিনীর সদস্যরা। রোববার দুপুর পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নেতাকর্মীরা জানান, সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুফি আবু সাঈদ ও বিএনপি কর্মী আফতাব হোসেন। তারা বিএনপি নেতা আবদুল আজিজ ও বাবলুর সমর্থক। আজিজের পক্ষে অবস্থান নেন বাবলু ও জেলা বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার আবু হেনা মোস্তফা কামাল রঞ্জুর পক্ষে রয়েছেন দুলাল। তারা দুজনই গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী। প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই এই দুই নেতার মধ্যে কোন্দল চলছে। সংঘর্ষের ঘটনায় তারা একে অপরকে দুষছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সভায় আজিজের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নাজমুল করিম নজু। এ সময় উত্তেজিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে উভয়পক্ষ। রঞ্জুর সমর্থক হিসেবে পরিচিত নজু।

বিবদমান দুই পক্ষের নেতা আজিজ ও রঞ্জু বলেন, বিএনপি বড় দল। এখানে মতানৈক্য থাকতেই পারে। তৃতীয়পক্ষ সুযোগ নেওয়ার আগেই বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ওসি আসমাউল হক জানান, আটক দুজনের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ না দেওয়ায় মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে শর্টগানের দুই রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত