রাজশাহীর মহানগরীর মতিহার থানার বামনশিখর এলাকায় ঋণের চাপে এবং অভাবে পরিবারের পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় দু’টি মামলা হয়েছে। একটি হত্যা মামলা, অন্যটি অপমৃত্যুর মামলা।
শুক্রবার রাতে নগরীর মতিহার থানায় মামলা দু’টি দায়ের করা হয়।
এর আগে শুক্রবার সকালে বাড়ির দু’টি ঘরে চারজনের লাশ পাওয়া যায়। এরা হলেন- মিনারুল ইসলাম (৩০), তার স্ত্রী মনিরা খাতুন (২৮), ছেলে মাহিম (১৪) ও মেয়ে মিথিলা (৩)। একটি ঘরের বিছানায় ছিল মনিরা ও শিশুকন্যা মিথিলার লাশ। পাশের ঘরের বিছানায় ছিল মাহিমের লাশ।
এ ঘরেই ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় মিনারুলের লাশ ঝুলছিল। ঘর থেকে দু’পাতার একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়। এটি মিনারুল লিখে গিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চিরকুটে লেখা আছে, ‘আমি নিজ হাতে সবাইকে মারলাম। এ কারণে যে, আমি একা যদি মরে যাই, তাহলে আমার বউ, ছেলে, মেয়ে কার আশায় বেঁচে থাকবে? কষ্ট আর দুঃখ ছাড়া কিছুই পাবে না। আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে। এত কষ্ট আর মেনে নিতে পারছি না। তাই আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে গেলাম, সেই ভাল হলো।’
এতে আরো লেখা আছে, ‘আমি মিনারুল প্রথমে আমার বউকে মেরেছি। তারপর আমার মাহিনকে মেরেছি। তারপর আমার মিথিলাকে মেরেছি। তারপর আমি নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে মরেছি।’
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক জানান, মিনারুলের আত্মহত্যার ঘটনায় তার বাবা রুস্তম আলী অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। আর মনিরা, মাহিম ও মিথিলাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছেন মনিরার মা শিউলী বেগম।
ওসি আরো জানান, মামলা দু’টিতে আসামি হিসেবে কারো নাম উল্লেখ নেই। আসামি অজ্ঞাত। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার দুপুরে লাশ চারটি উদ্ধারের পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছিল। শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

