পুষ্টিগুণ ও অর্থকরী ফসল হিসেবে সমৃদ্ধ বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে দিন দিন বাড়ছে ভুট্টা চাষ। গত বছর ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হলেও এ বছর চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। আশঙ্কা করা হচ্ছে ধান ফসলের পরিবর্তে রবি খরিফ মৌসুমে আগামীতে আরো বাড়তে পারে ভুট্টা চাষ। চাষ করা জমিতে ভুট্টার ফলনও হয়েছে ভালো। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৪০ মণ করে ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। সব মৌসুমে চাষ করা যায়, অল্প পরিশ্রম, জমিতে হালকা সেচ, কীটনাশক খরচ তুলনামূলক কম এবং বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় দিন দিন ভুট্টার চাষ বৃদ্ধির মূল কারণ বলে জানা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, এ বছর ৯ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছিল ৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে এ পরিমাণ জমিতে ৮৬ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। এখন চলছে পুরোদমে বিকিকিনি। চাষিরা বাজারে দামও পাচ্ছেন ভালো। প্রতি মণ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১১০০ টাকা মণ পর্যন্ত বিকিকিনি হচ্ছে হাটবাজারগুলোতে। এ পরিমাণ ভুট্টা বিক্রি করে ৩০৩ কোটি টাকা ঘরে উঠবে বলে উপজেলা কৃষি দপ্তর আশা করছেন।
কৃষকরা বলছেন, এবার বিঘা প্রতি লাভ মিলছে দ্বিগুণেরও বেশি। উচ্ছিষ্ট ভুট্টার গাছ ও মোচা জ্বালানি হিসেবে খুবই ভালো মানের। ভুট্টার মোচা জমি থেকে তোলার পর সবুজ পাতা গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
চাষিরা জানান, ভুট্টা চাষে বীজসহ বিঘা প্রতি ১৫/১৬ হাজার টাকা খরচ বাদে লাভ মিলছে প্রতি বিঘায় ৩০/৩৫ হাজার টাকা। অল্প সময়ে এ লাভ হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ভুট্টা চাষি আয়েন উদ্দিন জানান, কোনো কোনো চর এককভাবে ভুট্টা চাষ হওয়ায় ভুট্টা চরে পরিণত হয়েছে। আগে কেবল চরের জমিতে চাষ হতো, এখন রবি খরিফ মৌসুমে ধান চাষের পরিবর্তে বিল এলাকাতেও ভুট্টা চাষ বেড়েই চলেছে। আয়েন উদ্দিন আরো বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বলেন, বাজারে ভুট্টার চাহিদা ও দাম ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। তা ছাড়াও আমাদের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক ভুট্টার ফলন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।

