দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা: ফাঁকা পড়ে আছে বিএনপির মঞ্চ

সাইফুল ইসলাম, গোদাগাড়ী (রাজশাহী)
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ১৭

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) যে মঞ্চে কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল, সেটি এখন ফাঁকা পড়ে আছে। মঞ্চের পাশে বসে রয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেলে গোদাগাড়ী উপজেলা সদরের ডাইংপাড়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষ

বিজ্ঞাপন

ঘটে। প্রশাসন ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ঘটনায় এক পক্ষের নেতা বাদী হয়ে

থানায় মামলা করেছেন।

বিএনপি'র দু’গ্রুপের সংঘর্ষের পর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় কর্মসূচি বাতিল হয়েছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপজেলা সদরে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপি'র দু’গ্রুপ। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বিকেল ৪টার দিকে দু’পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে সংঘর্ষ বেধে যায়। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলতে থাকে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা সদরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীনের গ্রুপের অন্তত সাতজন আহত হন। এর মধ্যে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা এবং পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব উল্লেখযোগ্য।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বুধবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ। বুধবার দুপুরে উপজেলা সদরে সেনাবাহিনী টহল দেয়।

সংঘর্ষ কেন হলো জানতে চাইলে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সদস্য সুলতানুল ইসলাম তারেকের গ্রুপের নেতা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, দু’পক্ষ যদি আলাদা জায়গায় অনুষ্ঠান করত তবে কোনো ঝামেলা হতো না। কিন্তু শরীফ উদ্দীনের গ্রুপ উপজেলা কার্যালয়ের সামনেই অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে তারা ইউএনও অফিসে আপত্তি জানান। পরে জানতে পারেন, শরীফ উদ্দীনের অনুসারীরা তাদের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়।

অন্যদিকে শরীফ উদ্দীনের গ্রুপের সমর্থক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা মঞ্চ তৈরি করছিলেন। সোমবার কাজ চলার সময় সুলতানুলের পক্ষ এসে বাধা দেয়। মঙ্গলবারও তারা একইভাবে বাধা দেয় এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

এতে তাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনার পর রাতেই উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় গোদাগাড়ী পৌর বিএনপির সভাপতি মজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

আরও ৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে। দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড হয়েছে এবং তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত